ফেব্রুয়ারিতেই রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে: উপাচার্য
Published: 17th, February 2025 GMT
চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। আজ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে ‘রাকসু সংলাপ: সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘আমরা পাঁচ মাসের মধ্যে রাকসু নির্বাচন দেওয়ার কথা বলেছিলাম। তবে এর মধ্যে পোষ্য কোটা বাতিল আন্দোলনসহ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় সামনে আসায় সেটা সম্ভব হয়নি। এসব নিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়েছে। তবে এবার আর আমরা সময় দিচ্ছি না। এই ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই রাকসুর রোডম্যাপ প্রকাশ করা হবে।’
সবাইকে রাকসু নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ ঠিক রাখার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘রাকসু যেহেতু শিক্ষার্থীদের চাওয়া এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করবে, তাই শিক্ষার্থীদের সহযোগিতাই এখানে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। এ ছাড়া গণতন্ত্রমনা এবং রাজনৈতিক সংগঠনের বাইরে মুক্তচিন্তা চর্চা করে—এমন ১০০ শিক্ষক এবং ১ হাজার শিক্ষার্থী হলেই আমরা রাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারব।’
আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাংবাদিক সংগঠনের সদস্যসহ বিভিন্ন সংগঠনের ২০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ডেপুটি পরিচালক আরাফাত আলী সিদ্দিকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী সভায় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক পারভেজ আজহারুল হক।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি নোমান ইমতিয়াজ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদাধিকারবলে রাকসুর সভাপতি। তিনি চাইলে কমিটির যে কাউকে বা পুরো কমিটিকে বহিষ্কার করতে পারেন। যেহেতু রাকসুকে গণতন্ত্র চর্চার ক্ষেত্র বলা হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে উপাচার্যের এই অতিরিক্ত ক্ষমতা সুষ্ঠু গণতন্ত্র চর্চাবহির্ভূত বলে মনে করি। তাই রাকসুর সভাপতি হিসেবে উপাচার্যের এই ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক নওসাজ্জামান বক্তব্যে রাকসুর কার্যনির্বাহী কমিটিতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য একটি পদ রাখার দাবি জানান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপ চ র য
এছাড়াও পড়ুন:
সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে: তারেক রহমান
সংবাদপত্রের কালো দিবস ছিল আজ। সোমবার এ উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বাণীতে বলেছেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান। গণতন্ত্রের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব দিতে হলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
রোববার মধ্যরাতে পাঠানো এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো দিবস। এদিন তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী সব দল বাতিল করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করে। তাদের অনুগত চারটি সংবাদপত্র রেখে জাতিকে নির্বাক করে দিয়েছিল। বিভিন্ন সংবাদপত্রে কর্মরত অসংখ্য সংবাদকর্মী বেকার হয়ে পড়েন। তাদের রুজি-রোজগার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘একাত্তরের যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল বাংলাদেশের ভৌগোলিক স্বাধীনতা অর্জন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্রে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত হয় এবং এর মূল শর্ত হলো বাক, চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ থাকায় রাষ্ট্র ও সমাজ জবাবদিহির আওতায় আসে এবং দেশের সরকার গঠনে নাগরিকের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলাকে স্তব্ধ করে দিয়ে একদলীয় বাকশাল কায়েম করে। পরে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এ দেশের কাঙ্ক্ষিত বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেন। বাকশাল সরকারের সব ধরনের অগণতান্ত্রিক কালাকানুন বাতিল করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন।’
তারেক রহমান উল্লেখ করেন, ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ মূলত চিন্তা ও বিবেককে বন্দি রাখা। শেখ মুজিবুর রহমানের মতো তার মেয়ে শেখ হাসিনাও একই পথ ধরে তাদের প্রকৃত দর্শন একদলীয় ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন করেছিল নতুন আঙ্গিকে। নানা কালাকানুন প্রণয়ন করে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের ওপর অব্যাহত জুলুম চালিয়েছে তারা।’
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের সই করা বাণীতে বলা হয়, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। সত্য উচ্চারণ করলেই নেমে আসত নির্যাতনের খড়্গ। বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীসহ সব পর্যায়ের মানুষকে সার্বক্ষণিক শঙ্কিত থাকতে হয়েছে।
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো একের পর এক ড্রাকোনিয়ান (কঠোর) আইন প্রণয়ন করে সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ভয়াল দুর্গে বন্দি করা হয়েছিল। বিগত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর গণমাধ্যম কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করলেও এখনও ফ্যাসিবাদী শক্তির হাত থেকে পুরোপুরি মুক্ত নয়।’