রাবির হলের রেজিস্ট্রেশন ফরমে একি হাল!
Published: 20th, February 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রহমতুন্নেসা হলের ভুল বানান সম্বলিত একটি নিবন্ধন ফরমের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ছবিটি সামনে আসার পর থেকে এ নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ফরমে এত বড় ভুল কিভাবে হয় প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামে একটি ফেসবুক পেজে সিদ্দিকা ত্বহা নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ফরমের ছবি তুলে পোস্ট দেন। পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘এভাবেই কি আমরা শিখব?’
দেখা গেছে, ওই ফরমে বিশ্ববিদ্যালয়কে লেখা হয়েছে ‘বিশ্ববিদ্যায়’ এবং রাজশাহীকে লেখা হয়েছে ‘লাজশাহী’। এছাড়া নিবন্ধীকরণ বানানও ভুল। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে রহমতুন্নেসা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মোছা.
তিনি বলেন, “সবচেয়ে হতাশার বিষয় হলো- ‘বিসমিল্লাই গলদ’ করে রেখেছে। হল প্রশাসনকে আরো সতর্ক হওয়া উচিত এসব বিষয়ে। হল প্রশাসনকে বলতে চাই, পরবর্তী সময়ে কোন নোটিস দিলে অবশ্যই যেন যাচাই-বাছাই করে দেওয়া হয়।”
রহমতুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. ইসমত আরা বেগম বলেন, “ছবিটি আমার নজরে এসেছে। তবে এখানে পুরো ছবিটা আসেনি। এখানে কেউ ইন্টেনশনালি আমাকে এবং আমার হলকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য করেছে কি না- সেটিও দেখতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমি খোঁজ নিচ্ছি, যদি এটি আমার হলের কোন ডকুমেন্ট হয়ে থাকে, অবশ্যই এটি সংশোধন করবো এবং সংশ্লিষ্ট স্টাফকে সতর্ক করব। হলের যেকোনো বিজ্ঞপ্তি অথবা ডকুমেন্টে বানানের বিষয়ে পরবর্তীতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, “আমি মনে করি এগুলো সতর্কতার অভাব, সিরিয়াসনেসের অভাব। অনেক সময় ভুলবশত প্রিন্টিং মিস্টেক হয়ে যায়। এসব বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক হওয়া উচিত।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক