অনলাইনে কাজ করে আয় করার জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেসগুলোর মধ্যে ফাইভার অন্যতম। ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের পরিধি বাড়াতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মডেল প্রশিক্ষণের সুযোগ চালু করেছে ফাইভার। নতুন এই সুবিধা চালুর ফলে ফ্রিল্যান্সাররা চাইলেই এআই মডেলকে প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন। পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে  গ্রাহকেরা সেই মডেল ব্যবহার করতে পারবেন।

ফাইভার জানিয়েছে, নতুন এই উদ্যোগের ফলে ফ্রিল্যান্সাররা দ্রুত ও মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন এবং এআই মডেলকে নিজস্ব কাজের ভিত্তিতে প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন। ফলে সৃজনশীল কাজের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকবে।

ফাইভারের নতুন ‘ফাইভার গো’ টুলসের অংশ হিসেবে চালু হওয়া এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের তৈরি এআই মডেল সম্পাদনা করতে পারবেন এবং নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করতে পারবেন। ভয়েসওভার, গান লেখা, গ্রাফিক ডিজাইন, ইলাস্ট্রেশন, কপিরাইটিং ও ডিজিটাল মার্কেটিংসহ বিভিন্ন সেবার ক্ষেত্রে এই মডেল ব্যবহার করা যাবে। ফাইভার জানিয়েছে, এই উদ্যোগ ফ্রিল্যান্সারদের কাজের পরিধি আরও বিস্তৃত করবে এবং কনটেন্ট তৈরির প্রক্রিয়াকে সহজ করবে।

আরও পড়ুনফাইভারে গিগ তৈরির পদ্ধতি১৯ এপ্রিল ২০২২

ফাইভার গোতে একটি এআইভিত্তিক ব্যক্তিগত সহকারীও যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে ফ্রিল্যান্সাররা সহজেই গ্রাহকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন। ফাইভার জানিয়েছে, এআইভিত্তিক ব্যক্তিগত সহকারীর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সারদের গ্রাহকসেবার মান উন্নত হবে। প্রাথমিকভাবে শুধু নির্বাচিত শীর্ষস্থানীয় ফ্রিল্যান্সাররা এসব সুবিধা পাবেন।

সূত্র: দ্য ভার্জ

আরও পড়ুনফাইভার মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট খুলবেন যেভাবে১৮ এপ্রিল ২০২২.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনে জোট গঠনে সতর্ক থাকার পরামর্শ হেফাজত আমিরের

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট গঠনের ক্ষেত্রে সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।

মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে এমন কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার চিন্তা করা যাবে না, যাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস সম্পর্কে বুজুর্গানে দ্বীন ও পূর্বপুরুষেরা আগেই সতর্ক করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’–এ লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী এ কথা বলেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজত আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও অসুস্থ থাকায় তিনি কথা বলেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হক আজিজ।

ইসলামের মূলধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে হেফাজত আমির বলেন, সহিহ আকিদার সব ইসলামি দলকে এক হওয়ার জন্য আগেও তিনি আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আহ্বানে সাড়া দেওয়ার মতো তেমন পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।

শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, একদিকে যেমন ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে তেমনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বহু রকম চক্রান্ত লক্ষ করা যাচ্ছে। গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা তিনি কল্পনাও করেননি।

অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে বাবুনগরী বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি দেশের স্বাধীনতার অখণ্ডতার জন্য এবং ধর্মীয় কৃষ্টির জন্য এক অশনিসংকেত। এ চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা বাতিল করার দাবিও জানান তিনি।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, সামনে কালো তুফান দেখা যাচ্ছে। কালো তুফানের সঙ্গে মোলাকাত নয়, মোকাবিলা করতে হবে। জনগণকে ওলামাদের নেতৃত্ব কবুল করতে হবে। তখনই তুফানকে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী আমলে পাখা দিয়ে নৌকাকে বাতাস করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। জুলাই আন্দোলন ছিল ভোটের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। সেই পাঁয়তারা রুখে দিতে হবে।

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ইসলামের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আলেমদের মতামত উপেক্ষা করলে হাসিনার মতো পরিণতি হবে।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। এ সময় আরও বক্তব্য দেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আলেম এবং ওলামারা।

১৫ দফা প্রস্তাবনা

সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনা পাঠ করেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।

১৫ দফার মধ্যে আছে—ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের চুক্তি বাতিল করা, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, ঘোষিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির মহড়া বন্ধ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; বিতর্কিত নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল ও শরিয়ার সীমারেখার আলোকে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ