দেশের সাত বীরশ্রেষ্ঠ’র একজন ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ। মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গণের এই সাহসী সন্তানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী আজ (২৬ ফেব্রুয়ারি)। 

১৯৩৬ সালের আজকের এই দিনে নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নূর মোহাম্মদ শেখ। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আমানত শেখ এবং মা জেন্নাতুন্নেছা (মতান্তরে জেন্নাতা খানম)।  শৈশবেই বাবা ও মাকে হারান এই বীরশ্রেষ্ঠ। তিনি পড়ালেখা করেছেন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত।

নূর মোহাম্মদ শেখ পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগ দেন ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন। পরে ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি পান। ১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ চলাকালীন যশোরের কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন তিনি। 

আরো পড়ুন:

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের আইনের আওতায় আনা হবে: উপদেষ্টা

মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে আগুন: পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কে

এ সময় এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮নম্বর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবু ওসমান চৌধুরী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর এসএ মঞ্জুর। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাক বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন নূর মোহাম্মদ শেখ। যশোরের কাশিপুর গ্রামেই তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত হন।

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নূর মোহাম্মদ ট্রাস্ট ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নূর মোহাম্মদ নগরে আজ (২৬ ফেব্রুয়ারি) পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

ঢাকা/শরিফুল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনা যে অপরাধ করেছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও তা করে নাই: আসিফ নজরুল

শেখ হাসিনা ও তার দোসররা যে অপরাধ বাংলাদেশে করেছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও মনে হয় এত জঘন্য অপরাধ করে নাই বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই গণহত্যার বিচার আলোচনা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

তিনি বলেন, “মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা, আহতদের গুলি করে মেরে ফেলা, নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলা... আপনারা বলতে পারেন, ২৫ মার্চ কালরাতে হয়েছে। অবশ্যই হয়েছে, ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ওটা তো অন্য দেশের বাহিনী।”

“১৯৭১ সালে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলেছে, এরকম কোনো ফুটেজ আমি দেখি নাই। ১৯৭১ সালে একজন গুলি খেয়েছে, তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে তার বন্ধু, সে অবস্থায় তাকে গুলি করেছে। কোনো মুক্তিযোদ্ধার এমন কোনো বর্ণনা আমি পড়ি নাই বা ফুটেজ দেখি নাই। অন্যরকম নৃশংসতা থাকতে পারে, কিন্তু এরকম নৃশংসতা করে নাই” বলে দাবি করেন তিনি। 

এত বড় গণহত্যা চালিয়েও আওয়ামী লীগের বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, “একটা দল ১৫ বছর শুধু মিথ্যা আর নির্যাতন করে চালিয়েছে। এখনো তাদের মিথ্যাচার বিন্দুমাত্র থামেনি। এখনো নির্যাতনের ইচ্ছা বিন্দুমাত্র থামেনি। আপনারা যখন মহাখুনি শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনতে পান, দেখবেন এখনো তার নির্যাতন করার ইচ্ছা আছে। এরা কি বিচারে কোনো রকম গাফিলতি থাকে সেটা উন্মোচন করার চেষ্টা করবে না? আমার তো অনেক দায়িত্ব। এই বিচারকে সমালোচনার ঊর্ধ্বে রাখতে হবে।” 

তিনি আরো বলেন, “এই বিচারে আপনাদের (শহীদ পরিবার) হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আমি বিশ্বাস করি, যেই প্রক্রিয়ায় বিচার এগোচ্ছে, ইনশাআল্লাহ আমাদের সরকারের আমলেই আপনারা কাঙ্ক্ষিত মামলাগুলোর রায় পাবেন। এমনভাবে বিচারের অকাট্য সাক্ষ্য-প্রমাণ আমরা রেখে যাব, কোনো সরকার চাইলেও বিচার থেকে সরতে পারবে না।” 

আইন উপদেষ্টা বলেন, “আর আমি বিশ্বাস করি না, ভবিষ্যতে বিএনপি-জামায়াত যারাই ক্ষমতায় আসুক, তারা বিচারে শৈথিল্য বা গাফেলতি দেখাবে। তারা সবাই নির্যাতিত মানুষ।” 

পরে হতাহতদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব (বাজেট ও উন্নয়ন) রুহুল আমীন। এরপর জুলাই আন্দোলন নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেখ হাসিনা যে অপরাধ করেছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও তা করে নাই: আসিফ নজরুল