যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের আইনজীবী অ্যালেক্স স্পিরো। তাঁর মক্কেলদের তালিকায় রয়েছেন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার সিইও ধনকুবের ইলন মাস্ক, নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামসের মতো ব্যক্তিরা। ম্যানহাটানের এ আইনজীবী ঘণ্টায় কত পারিশ্রমিক নেন, জানেন? ৩ হাজার মার্কিন ডলার, যা টাকার অঙ্কে ৩ লাখ ৬৩ হাজারের বেশি।

স্পিরো এখন ম্যানহাটানে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া আইনজীবীদের একজন। নামীদামি মক্কেল ও একের পর এক মামলা মোকাবিলা করার কারণে নিউইয়র্কে তিনি এখন পরিচিত মুখ। তাঁর আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া দুই আইনজীবীর একজন তিনি।

স্পিরো যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, সেটির নাম ‘কুইন এমানুয়েল আর্কহার্ট অ্যান্ড সুলিভান’। দেশে-বিদেশে এ প্রতিষ্ঠানের ৩৫টি শাখায় প্রায় ১ হাজার আইনজীবী কাজ করেন। সদর দপ্তর ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি আদালতে তাদের আইনজীবীদের নতুন পারিশ্রমিকের তালিকা প্রকাশ করেছে।

এ সম্পর্কে অবগত আছে, এমন একটি সূত্র বলেছে, সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেন স্পিরো ও উইলিয়াম বার্ক। বার্ক প্রতিষ্ঠানটির বৈশ্বিক সহব্যবস্থাপনা অংশীদার। তিনি ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন।

‘কুইন এমানুয়েল আর্কহার্ট অ্যান্ড সুলিভান’ তাদের আইনজীবীদের পারিশ্রমিকের তালিকা প্রকাশ করলেও এটি মাঝেমধ্যে মক্কেলভেদে তাঁদের পারিশ্রমিক নির্ধারণ করে বা ছাড় দেয়। তাই নির্দিষ্ট মক্কেলদের বেলায় স্পিরো বা বার্ক কত পারিশ্রমিক নেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কুইন এমানুয়েলের একজন মুখপাত্র এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি।

যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক বছর ধরে চাহিদাসম্পন্ন আইনজীবীদের পারিশ্রমিক রকেটগতিতে বেড়েছে। সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা নিয়মিত ঘণ্টায় দুই হাজার বা এর বেশি ডলার পারিশ্রমিক নেন।

স্পিরো বেশ কয়েকটি মামলায় মাস্কের পক্ষে আদালতে লড়েছেন। এখন তিনি নিউইয়র্কের মেয়র অ্যাডামসের হয়ে আদালতে লড়ছেন। অ্যাডামসের বিরুদ্ধে তুরস্কের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

মামলা ও পারিশ্রমিকের বিষয়ে কথা বলতে রয়টার্স থেকে স্পিরোর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি সাড়া দেননি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইনজ ব দ র ন উইয়র ক র আইনজ ব সবচ য়

এছাড়াও পড়ুন:

এক-এগারোর মতো ঘটনা ঘটা এখানে অস্বাভাবিক কিছু নয়

নেতা–কর্মীদের সতর্ক করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকি, আমরা যদি সতর্ক না থাকি তাহলে এক-এগারোর মতো ঘটনা ঘটা এখানে অস্বাভাবিক কিছু নয়।’

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে আইনজীবীদের ভূমিকা: আলোচনা ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব।

সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খুব সতর্ক থাকতে হবে। আমরা কিন্তু খুব একটা সূক্ষ্ম তারের ওপর দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু চারদিকে আপনারা আমার চেয়ে ভালো জানেন, চারদিকে একটু চোখ–কান খোলা রাখেন। দেখবেন কতগুলো ঘটনা ঘটছে, যে ঘটনাগুলোর আলামত ভালো না। এদিকে একটু লক্ষ রাখতে হবে।’

দেশের মানুষ সংখ্যানুপাতিক বা পিআর পদ্ধতির নির্বাচন কী, সেটি বোঝে না বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই চাই সংস্কার হোক। সাধারণ মানুষ কিন্তু চায় যে একটা নির্বাচন হোক, সে নির্বাচন থেকে নতুন সরকার আসুক। যে সরকার তারা নির্বাচিত করতে পারবে, যে প্রতিনিধি তারা নির্বাচন করবে। তাদের কথা বলার লোক তারা পার্লামেন্টে (সংসদ) নিতে চায়। এটা খুব সহজ হিসাব।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘এই যে বিষয়গুলো তৈরি করা হচ্ছে কেন? এই বিতর্কগুলো তৈরি করা হচ্ছে কেন? এর পেছনে আপনি যদি মনে করেন এমনি এমনি করা হচ্ছে, তা নয়। এর পেছনে একটা বিশেষ উদ্দেশ্য আছে। সেই উদ্দেশ্যটা সেই এক–এগারোতে ফিরে যাবেন, সেই উদ্দেশ্যটা, সেই একেবারে ফিরে চলে যাবেন এরশাদ সাহেবের ক্ষমতা দখল করা পর্যন্ত। এ দেশে গণতন্ত্রকে চলতে দিতে চায় না। একটা মহল আছে যারা বারবার গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরে। এমনকি শেখ মুজিবুর রহমানও এই কাজটা করেছেন একদলীয় শাসনব্যবস্থা (বাকশাল) প্রবর্তন করে।’

বিএনপি লিবারেল ডেমোক্রেসি (উদার গণতন্ত্র) চায় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা চাই, আমাদের দেশের জনগণ তার ভোটের অধিকার ফিরে পাক। সে ভোট দিক। ভোট দিয়ে তার প্রতিনিধি সে নির্বাচিত করুক। পার্লামেন্ট (সংসদ) তৈরি হোক, সরকার তৈরি হোক। তারা চালাবে পাঁচ বছর। সেই পাঁচ বছরে যদি তারা ব্যর্থ হয়, না পারে, আবার নির্বাচন হবে। নির্বাচনে জনতা তাদের বাদ দিয়ে দেবে, অন্য দলকে দেবে। তাই তো? এই জায়গাটায় যেতে এত তর্ক–বিতর্ক কেন?

নির্বাচনের জন্য আর দেরি করা অধ্যাপক ইউনূসের সরকারের জন্য সঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির শুরুতে যে ডেডলাইন (সময়সীমা), এর পরে হলে আপনি যে সম্মান নিয়ে এসেছেন, সমগ্র বিশ্বে আপনার যে সম্মান, সেই সম্মান ক্ষুণ্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।’

সভায় প্রধান উপদেষ্টার সমালোচনা করে গণফোরামের সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা গত এক বছরে বাংলাদেশের জন–আকাঙ্ক্ষার যে কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন এবং পুরা জিনিসটাই আপনি সংস্কারের নামে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে এত বিস্তৃতি ঘটিয়েছেন; শেষ পর্যন্ত আমার কাছে মনে হচ্ছে, এটা আমার ব্যক্তিগত অপিনিয়ন (মতামত), সংস্কারের নামে অপসংস্কার কুসংস্কার তৈরি করে নিয়ে যাবেন। একটু থামেন, আপনার তো এত ম্যান্ডেট নাই। সবকিছু নিয়েই আপনি বসে পড়েছেন। জুলাই সনদ হবে, জুলাই ঘোষণা হবে, সবই ঠিক। আর কত সময় নেবেন?

তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে কিন্তু খুব বেশি সময় নাই। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর কোনো ব্যত্যয় যেন না ঘটে। আইনজীবীসহ সারা দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে আবার রাজপথের আন্দোলনে শরিক হওয়ার জন্য আমাদেরকে বাধ্য করবেন না।’

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ঐকমত্য দেখি না, নির্বাচনের রোডম্যাপ দেখি না। গণতন্ত্রের পথে হাঁটুন, আইনজীবীরা কালো কোট পরে মাঠে নামলে কেউ থাকতে পারে না। নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়ে বিদায়ের চিন্তা করুন।’ সরকারে থাকা দুই তরুণ উপদেষ্টাকে যেন তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, সেই আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার প্রতি জানান তিনি।

সভার শুরুতেই একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মিলন। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এবং ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামালের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মো. কামাল হোসেন, মোহাম্মদ আলী, ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সদস্যসচিব গাজী তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিউইয়র্কে দিদারুলকে ‘গার্ড অব অনার’, হাজারো মানুষের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় শেষবিদায়
  • হতাহতের ছবি-ভিডিও সরাতে ও ছড়িয়ে পড়া বন্ধে পদক্ষেপ চেয়ে রিট, আদেশ ৩ আগস্ট
  • এক-এগারোর মতো ঘটনা ঘটা এখানে অস্বাভাবিক কিছু নয়
  • সুরাইয়া মতিনের মৃত্যুতে ফতুল্লা প্রেসক্লাবের শোক
  • ‎আবু সাঈদ হত্যা: ৬ আগস্ট অভিযোগ গঠনের আদেশ 
  • নিউইয়র্কের রাস্তায় নীল সোনম কাপুর
  • ভুল এলিভেটর, যাকে খুশি গুলি, যেন কোনো শুটিং গেম
  • আবু সাঈদ হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ৬ আগস্ট
  • যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে তাহলে কি ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠছে
  • ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান