বর্তমান সংবিধান ফেলে দিয়ে নতুন সংবিধান যুক্তিসংগত নয়: ড. কামাল হোসেন
Published: 27th, February 2025 GMT
সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, বর্তমান সংবিধানকে ফেলে দেওয়া একদমই ভুল হবে। এত দিন এই সংবিধানের মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হয়েছে। জনগণ মেনে নিয়েছে। সেটা ফেলে দিয়ে নতুন একটা সংবিধান করা কোনোভাবেই যুক্তিসংগত নয়, গ্রহণযোগ্য নয়।
আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘৭২-এর সংবিধান ও প্রস্তাবিত সংস্কার’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি এই সভার আয়োজন করে।
সভায় ড.
সংবিধানের ব্যাপক সংশোধনীর পক্ষে ভিন্নমত পোষণ করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেছে, সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বাস্তবতায় গণতন্ত্রের নামে রাজনৈতিক দলগুলো পা রাখার মতো মাটি দ্রুত পাবে না। অল্প অল্প করে পর্যায়ক্রমে ভালোর দিকে যেতে হবে।
তিনি বলেন, বিগত ৫৩ বছর বিচার করলে রাষ্ট্রধর্ম আর ধর্মনিরপেক্ষতা—দুটি কথাই সংবিধান থেকে বাদ দেওয়া উচিত। গণতন্ত্রের মধ্যেই ধর্মনিরপেক্ষতা আসতে পারে। ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দটা ব্যবহার না করে অন্যভাবে এগোতে পারলে ভালো।
অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা ফেলে দেওয়ার প্রস্তাবের ফলে ধীরে ধীরে ধর্মীয় উগ্রবাদী শক্তির উত্থান হচ্ছে; যা কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। তিনি আরও বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হতে হবে, না হলে দেশে শান্তি আসবে না।
সংগঠনের সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সোহরাব হাসান, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল বারী, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, এস এম এ সবুর ও আবু ইয়াহিয়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইনজীবী গোলাম মোস্তফা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি ডলার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ
ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ও টেলিকম কর্মকর্তা বঙ্কিম ব্রহ্মভট্টের বিরুদ্ধে বড় ধরনের ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। ওই জালিয়াতির তিনিই মূল পরিকল্পনাকারী বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এই কেলেঙ্কারির কারণে ব্ল্যাকরকের ঋণ শাখা এবং আরও কয়েকটি বৈশ্বিক বিনিয়োগকারী সংস্থার ৫০ কোটি কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কভিত্তিক যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এটিকে ‘বিস্ময়কর’ আর্থিক জালিয়াতির ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
কে এই বঙ্কিম ব্রহ্মভট্ট
ব্রহ্মভট্ট বৈশ্বিক টেলিকম-পরিষেবা শিল্পে অপেক্ষাকৃত অপরিচিত দুটি সংস্থা—ব্রডব্যান্ড টেলিকম ও ব্রিজভয়েসের সঙ্গে যুক্ত। দুটি সংস্থাই ব্যাঙ্কাই গ্রুপের অধীনে কাজ করে।
২০২৫ সালের জুলাই মাসে ব্যাঙ্কাই গ্রুপ এক্স (পূর্বের টুইটার)-এর একটি পোস্টে ব্রহ্মভট্টকে প্রেসিডেন্ট এবং সিইও হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল।
এক্সে দেওয়া ব্যাঙ্কাই গ্রুপের পরিচয় দেওয়া হয়েছে এভাবে—‘টেলিকমিউনিকেশন শিল্পে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত নেতা, যারা টেলকো, অপারেটর এবং আরও অনেকের সঙ্গে টেলিকম প্রযুক্তি ও ক্যারিয়ার ব্যবসায়িক সৌহার্দ্যকে লালন করে।’
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট অনুসারে, ব্রহ্মভট্টের প্রতিষ্ঠান সারা বিশ্বের টেলিকম অপারেটরদের অবকাঠামো ও সংযোগের সরঞ্জাম সরবরাহ করে।
মনে হচ্ছে, ব্রহ্মভট্টের লিঙ্কডইন প্রোফাইলটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কয়েক মাস আগেও ব্রহ্মভট্ট নিউইয়র্কের গার্ডেন সিটিতে অফিস চালাতেন।
জালিয়াতির ধরন
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে করা মামলায় দাবি করা হয়েছে, ব্রহ্মভট্টের প্রতিষ্ঠানগুলোর ৫০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ বকেয়া রয়েছে। ব্ল্যাকরকের এইচপিএস ইনভেস্টমেন্ট পার্টনার্সের নেতৃত্বে ঋণদাতারা তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়া চালান ও ভুয়া পাওনা অ্যাকাউন্ট তৈরি করার অভিযোগ এনেছেন। বড় অঙ্কের ঋণের জন্য জামানত হিসেবে ওইসব অ্যাকাউন্ট বানানো হয়েছিল।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ব্রহ্মভট্টের প্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিল যখন ভারত ও মরিশাসে স্থানান্তর করা হয়েছিল, তখন তাদের নেটওয়ার্ক কাগজে-কলমে আর্থিক শক্তির একটি মায়াজাল তৈরি করা হয়েছিল।
তবে ব্রহ্মভট্টের আইনজীবী এই জালিয়াতির সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ঋণদাতারা দাবি করেছেন, ব্রহ্মভট্ট কারিওক্স ক্যাপিটাল ও বিবি ক্যাপিটাল এসপিভির মতো আর্থিক সংস্থার এক জটিল নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন, যা ব্ল্যাকরকের মতো কয়েকটি বেসরকারি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোটি কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিল।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, ব্রহ্মভট্ট ভুয়া গ্রাহক চালান তৈরি করেন এবং সেই জাল কাগজপত্র দিয়ে জামানত তৈরি করে তার বিপরীতে ৫০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ নিয়েছেন। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, পরে তিনি ভারত ও মরিশাসে সম্পদ স্থানান্তর করেন। এখন তাঁর দুটি কোম্পানি এবং ব্রহ্মভট্ট নিজে দেউলিয়া হওয়ার আবেদন করেছেন।
গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ব্রহ্মভট্টের আইনজীবী কোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, জালিয়াতির সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।