ঐক্যই স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের চাবি
Published: 27th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান মঙ্গলবার জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রদত্ত বক্তব্যে যেই উদ্বেগ ব্যক্ত করিয়াছেন, উহা আমলে লইবার বিকল্প নাই। সেনাবাহিনী প্রধানরূপে এই প্রকার বক্তব্য সাম্প্রতিককালে বিরল হইলেও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সময়োচিত। বিশেষত যখন গণঅভ্যুত্থানের অংশীজন রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে দূরত্ব ও অনৈক্য ক্রমবর্ধমান, তখন সেনাবাহিনী প্রধানের সতর্কবার্তা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি যথার্থই বলিয়াছেন, নিজেরা কর্দম নিক্ষেপ ও হানাহানিতে লিপ্ত থাকিলে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটিতে পারে। আমরা প্রত্যাশা করিব, সেনাবাহিনী প্রধানের বক্তব্যের অন্তর্নিহিত অর্থ সংশ্লিষ্টরা অনুধাবনে সক্ষম হইবেন।
সেনাবাহিনী প্রধান এমন সময়ে এই বক্তব্য দিয়াছেন, যখন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি লইয়া বিলক্ষণ উদ্বেগ তৈয়ার হইয়াছে। গত কিছু দিবসে সংঘটিত বেশ কিছু চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় এমনকি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা লইয়াও প্রশ্ন উঠিয়াছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির নেপথ্যে রাজনৈতিক শক্তিগুলির পারস্পরিক দূরত্ব এবং বিভিন্ন পক্ষের হানাহানি, তৎসহিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনোবলের ঘাটতির যেই বিষয় তিনি উল্লেখ করিয়াছেন, উহা প্রণিধানযোগ্য। তিনি পারস্পরিক বিষোদ্গার হইতেও বিরত থাকিবার যেই তাগিদ দিয়াছেন, উহার সহিত দ্বিমতের অবকাশ নাই। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই প্রকার অবিমৃষ্যকারিতা যে কাহারও জন্য কল্যাণকর নহে, উহা বুঝিতে বিশেষজ্ঞ হইবার প্রয়োজন নাই। তবে তিনি নিশ্চিত করিয়াছেন, আইনশৃঙ্খলা লইয়া সেনাবাহিনী কাজ করিতেছে। সাম্প্রতিককালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও আইনশৃঙ্খলা লইয়া উদ্বিগ্ন না হইতে বলিয়াছেন। আমরা বিশ্বাস করি, সকল পক্ষ আন্তরিকতার সহিত তৎপর হইলে পরিস্থিতি সামলাইয়া উঠা সহজ হইবে।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তাঁহার বক্তব্যে অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের যেই প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করিয়াছেন, আমরা মনে করি উহা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। বলিবার অপেক্ষা রাখে না, ইহা অন্তর্বর্তী সরকারেরও অন্যতম অগ্রাধিকার। তবে নির্বাচনসহ অন্যান্য ব্যবস্থার সংস্কারে সরকার গঠিত কমিশন ইতোমধ্যে যেই প্রতিবেদন দিয়াছে, তাহার আলোকে ঐক্য কমিশনের কার্যক্রম আগাইয়া লইবার বিকল্প নাই। সংস্কার নিঃসন্দেহে দীর্ঘমেয়াদি বিষয়, যথায় অন্তর্বর্তী সরকার উহার সূচনা করিলে গণতান্ত্রিক সরকার আসিয়া পূর্ণাঙ্গ করিতে পারে। আমরা দেখিয়াছি, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাও রাজনৈতিক দলগুলির সহিত নির্বাচন লইয়া সংলাপ করিয়াছেন এবং ডিসেম্বরে সম্ভাব্য নির্বাচনের বিষয়টি নিশ্চিত করিয়াছেন। আমরা চাহিব ঘোষিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের সকল প্রক্রিয়া সরকার সম্পন্ন করিবে।
স্মরণে রাখিতে হইবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কিংবা জাতীয় নির্বাচন– উভয় ক্ষেত্রেই জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নাই। উহাই এই মুহূর্তে জরুরি কর্তব্য। প্রধান উপদেষ্টা ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত কর য় ছ ন পর স থ ত উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে সাংবাদিক পরিচয়ে হোটেল কক্ষে তল্লাশি, সমালোচনা
চট্টগ্রামে সাংবাদিক পরিচয়ে আবাসিক হোটেলে তল্লাশি ও অতিথিদের জেরা করেছেন এক ব্যক্তি। গত শনিবার দুপুরে হান্নান রহিম তালুকদার নামে এক ব্যক্তি ফেসবুকে একটি ভিডিও আপলোড করেন। এরপর সাংবাদিক পরিচয়ে এমন তল্লাশি চালানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেন নেটিজেনরা। তা নিয়ে চলে সমালোচনা। হান্নান রহিম তালুকদার তার ফেসবুক ওয়ালে আপলোড করা পোস্টারে নিজেকে দৈনিক চট্টগ্রাম সংবাদের সম্পাদক, সিএসটিভি২৪ চ্যানেলের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য পরিচয় দিয়েছেন। আরেকটি পোস্টারে তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব প্রার্থী ও তারেক রহমান রাজনৈতিক দর্শন চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্রের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক।
ভিডিওতে দেখা গেছে, তিনি নগরের বহদ্দারহাট পপুলার গেস্ট হাউজে ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে ঢুকেন। রিসিপশনে গিয়ে অতিথি কারা কারা আছেন হোটেলের রেজিস্টার দেখে যাচাই করেন। এরপর বিভিন্ন হোটেলের কক্ষে কক্ষে গিয়ে অবস্থানরত অতিথিদের নানা প্রশ্ন করে জেরা করেন। হোটেলে কেন অবস্থান করছেন? চট্টগ্রামে কেন এসেছেন? স্বামী-স্ত্রীর প্রমাণ আছেন কিনা? ১৫ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে এসব প্রশ্ন করতে দেখা যায়।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ বলেন, হান্নান রহিম নামে সাংবাদিক ইউনিয়নের কোনো সদস্য নেই। সাংবাদিক পরিচয়ে অনেকে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড করছেন। এটি তারই অংশ। সাংবাদিক কখনো কোনো হোটেলে তল্লাশি চালাতে পারেন না। এটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ। সাংবাদিকতার নামে যারা অপ-সাংবাদিকতা করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।'
জানতে চাইলে চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, এভাবে আবাসিক হোটেলের কক্ষে কক্ষে গিয়ে তল্লাশি চালাতে পারেন না কোনো সাংবাদিক। কোনো গেস্ট হাউস কিংবা হোটেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। ভিডিওটি দেখার পর হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে মামলা দিতে বলেছি। কিন্তু তারা মামলা দিতে আসছে না। তারা না এলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।