UNDP-DUDS দুর্নীতি বিরোধী আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৫ এর ফাইনালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ‘বুটেক্সডিসি বুনন’। ফাইনাল বিতর্কটি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরে অনুষ্ঠিত হয়। ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) বাংলাদেশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির যৌথ আয়জনে অনুষ্ঠিত হয় ‘দুর্নীতি বিরোধী আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৫’। যেখানে ৩২টি দল অংশ নেয়। বিতার্কিকগণ প্রতিযোগিতাটিতে মূলত দুর্নীতিবিরোধী, স্বচ্ছতা এবং শাসন বিষয়ে তাদের সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং সমস্যা সমাধানের বিষয় তুলে ধরেন। দুই দিনব্যাপী আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার প্রথম দিনের বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয় ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ছয় রাউন্ড বিতর্ক শেষে সেমিফাইনালে অংশ নেওয়া চারটি দল ছিল বিইউপি, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি ও বুটেক্সডিসি বুনন। প্রতিযোগিতাটির ফাইনাল রাউন্ড অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরে। ফাইনালে ‘এই সংসদ দুদকের  জন্য আলাদা বিশেষ একটি টার্স্কফোর্স গঠন করবে’ মোশনের পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি এবং বিরোধী দল হিসেবে বিতর্ক করে বুটেক্সডিসি বুনন। বুটেক্সডিসি বুনননের হয়ে বিতর্কে অংশগ্রহণ করে মো.

তামজিদুর রহমান, এস এম আলভী সালমান এবং আশেক এ রহমান। ফাইনাল বিতর্কে শ্রেষ্ঠ বক্তা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে বুটেক্সডিসি বুননের বক্তা এস এম আলভী সালমান। ফাইনালের শ্রেষ্ঠ বক্তা ও বুটেক্স ডিবেটিং ক্লাবের প্রেসিডেন্ট এস এম আলভী সালমান নিজের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে বলেন, সবচেয়ে দারুণ অভিজ্ঞতা হলো রেজাল্ট এনাউন্সমেন্টের মুহূর্ত। যখন বড় একটা আয়োজনের মঞ্চে, বড় পরিচয়ের একজন প্রধান অতিথি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের নামটি উচ্চারণ করেন তা একই সঙ্গে আমার কাছে আনন্দ ও গর্বের বিষয়। বুটেক্সডিসি জাতীয় পর্যায়ে বুটেক্সের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরেছে যা সবসময়ই আমাদের প্রধান লক্ষ্য থাকে। নিজেদের এমন অর্জন সম্পর্কে বুটেক্স ডিবেটিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তামজিদুর রহমান বলেন, বুটেক্সডিসি বরাবরই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিতর্ক অঙ্গনে নিজেদের অসামান্য উপস্থিতি নিশ্চিত করে আসছে। আমাদের বিতার্কিকরা শুধু প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য নয়, বরং নতুন নতুন চিন্তাধারার প্রসার, নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বিতর্কের ভূমিকা এবং যৌক্তিকতার চর্চাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা বুটেক্সের নাম দেশব্যাপী ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গৌরবের সঙ্গে তুলে ধরতে পেরেছি। বুটেক্সডিসি বুননের আরেকজন সদস্য আশেক এ রহমান তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, বুটেক্সডিসির মতো ঐতিহ্যবাহী ও সমৃদ্ধিশালী ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা সত্যিই অত্যন্ত গর্বের বিষয়। এই ক্লাবের একটি অংশ হিসেবে কাজ করতে পারা, বিশেষ করে বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্লাবের সুনাম বৃদ্ধি করার সুযোগ পাওয়া আমাদের জন্য বিশাল সম্মানের বিষয়। প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার বিতরণী পর্বে উপস্থিত ছিলেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক তৌহিদুজ্জামান পাভেল ও মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য ড. সায়মা হক বিদিশা। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ত ফ ইন ল রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘লিচুর বাগানে’ যে কারণে ‘পিরিতের বেড়া’ দিতে হয়

‘তাণ্ডব’ সিনেমার গান ‘লিচুর বাগানে’ প্রকাশের পর রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে। কফি শফ থেকে বাস, মেট্রোরেল আশপাশে কান পাতলে গানটা শোনা যাচ্ছে। কেউ না কেউ শুনছেন। সামাজিক মাধ্যমের স্টোরি ও রিলসেও গানটি ভেসে বেড়াচ্ছে। চরকি ও এসভিএফের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত গানটির আজ পর্যন্ত (১২ এপ্রিল ২০২৫) ভিউ হয়েছে যথাক্রমে ১২ মিলিয়ন ও ৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন।

উচ্ছ্বসিত অনেক দর্শক গানটি নিয়ে মন্তব্যও করেছেন। তাহসিন নামের এক শ্রোতা লিখেছেন, ‘গানটির প্রতিটি সুর, দৃশ্য ও পরিবেশনায় বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অপূর্ব রূপ ফুটে উঠেছে। যাত্রাপালার ফিল্মের আবহে তৈরি এই গানটি যেন গ্রামীণ বাংলার প্রাণস্পন্দন তুলে ধরেছে। লোকেশন থেকে শুরু করে কস্টিউম, প্রতিটি ডিটেইলে আছে নিখুঁত যত্ন।’

গানটি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বন্ধুদের মধ্যে খুনসুটিও চলছে। বন্ধুকে মেনশন দিয়ে কেউ যেমন প্রশ্ন করছেন, ‘কী রে, বেড়া ডিঙাতে পারলি?’ আবার কেউ জিজ্ঞেস করছেন বল তো, ‘“লিচুর বাগানে” কেন “পিরিতের বেড়া” দিতে হয়?’

প্রশ্নটির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা যাক। শুরুতেই ‘লিচুর বাগানে’ গানটি দিয়ে আলোচিত, ‘কে এই ছত্তার পাগলা’ শীর্ষক প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক। গবেষক সরোজ মোস্তফার মতে ‘কে দিল পিরিতের বেড়া লিচুরও বাগানে’ পঙ্‌ক্তির রচয়িতা ও সুরকার ছত্তার পাগলা। তবে সংগীতগবেষক গৌতম কে শুভর মত ভিন্ন। তাঁর মতে, ‘এটি মূলত প্রচলিত ঘেটু গান। “কে দিল পিরিতির বেড়া লিচুর বাগানে?” অংশটি মূল গানের অংশ। ছত্তার পাগলা নিজের মতো করে এর সঙ্গে কথা সংযোজন করেছেন। নেত্রকোনায় ছত্তার পাগলার লেখা রূপটিই বিখ্যাত হয়েছে।’ ২০১৪ সালের এপ্রিলে মারা গেছেন ছত্তার পাগলা। জীবদ্দশায় রচনা ও সুরারোপ করেছেন কয়েক শ গান। মৃত্যুর বছর তিনেক আগে তাঁর কাছ থেকে গানটি শুনে হাতে লিখে রেখেছিলেন আল মামুন চৌধুরী।

আল মামুন চৌধুরীর লেখা অনুযায়ী গানটির কথা:
কে দিল পিরিতের বেড়া, লিচুরও বাগানে
লিচুরও বাগানে গো সই…লিচুরও বাগানে …(ঐ)
পাখি খাইছ না লিচু, বন্দে খাইবো
বন্দে লিচু খাইয়া, খুশি হইবো
আমার কাছে আইসা কইবো
কত শান্তি দিবো আমার মনেপ্রাণে (ঐ)
ছোট ছোট লিচুগুলি, বন্দে তুলে আম্বো তুলি
বন্দে দেয় গো আমার মুখে,
আমি দিতে চাই বন্ধুর মুখের পানে…(ঐ)
মিষ্টি লিচু খাইয়া বন্দে, বাঁশি বাজায় মন আনন্দে
আমার মনে লাগে সন্দে বন্ধু সম্ভব জাদু জানে (ঐ)
বাঁশি হাতে পলায় মালা, তারে চায় ছত্তার পাগলা,
করব লইয়া উলামেলা, (২) প্রাণবন্ধুর সনে…(ঐ)

সরল অর্থে ‘বেড়া’ হচ্ছে  প্রতিবন্ধকতা তথা বাধা তৈরির উপকরণ। আর ‘পিরিতের বেড়া’ মানে ভালোবাসায় বাধা। কিন্তু ভালোবাসার এই বাধা তথা প্রতিবন্ধকতা ‘লিচুর বাগানে’ কেন? কবিতা তথা গানে অর্থের তারতম্য অর্থের অনুগত না হয়ে বোধ কিংবা ভাবনার পরবশে প্রস্ফুটিত হয়। ব্যক্তিবিশেষে তা ভিন্ন ভিন্ন অর্থ লাভ করে, ভিন্ন ভিন্ন মূল্য পায়।

আরও পড়ুন‘লিচুর বাগানে’ গানটি দিয়ে আলোচিত, কে এই ছত্তার পাগলা ০৬ জুন ২০২৫

‘কে দিল পিরিতের বেড়া, লিচুরও বাগানে’ একটি ‘ঘাটু গান’ বা ‘ঘেটু গান’। এই গান প্রসঙ্গে জানা যায়, এই গানের অন্যতম অনুষঙ্গ ছিল নৃত্য। অল্প বয়সী একটি ছেলেকে মেয়ে সাজিয়ে তার নৃত্যের মধ্য দিয়ে ঘেটু গান পরিবেশিত হতো। সঙ্গে থাকত ঢোল, হারমোনিয়াম, বাঁশি ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র। কয়েকটি ‘ঘেটু গানে’র দৃষ্টান্ত দেখা যাক।
(১)
‘তুই আমারে চিনলে নারে
আমি তো রসের কমলা।
বন্ধুর বাড়ি আমার বাড়ি
মধ্যে নলের বেড়া।’
(২)
ঘুমাইলা ঘুমাইলারে বন্ধু
পান খাইলায়না
এক বালিশে দুইটি মাথা
সুন্দর কইরা কওরে কথা।
গানগুলো থেকে উপলব্ধি করতে কষ্ট হয় না যে ‘ঘেটু গানে’ যেমন ভাষার সারল্য আছে, তেমনিভাবে রূপকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে যাপিত জীবনের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে থাকা নানা উপকরণ। আর এ ক্ষেত্রে গান রচনার সময় রচয়িতা তাঁর আশপাশ থেকেই গান নির্মাণের উপকরণগুলো যে নিয়ে থাকবেন, সেই ধারণাও পাওয়া যায়। ‘লিচুর বাগানে’ গানের ক্ষেত্রেও বোধ করি এটা ঘটেছে। তাই এই গানে যেমন ‘লিচু বাগানে’র কথা আছে, একইভাবে আছে ‘পাখি’, ‘বাঁশি’ ও ‘লিচু’র কথাও। পাখিকে লিচু না খাওয়ার অনুরোধ করলেও পাখি যেন খেতে না পারে সে কারণেই যে বেড়া দেওয়া হয়েছে; সেই ব্যথাও গানটিতে ফুটে উঠেছে। সব মিলিয়ে ‘লিচুর বাগান’ শেষ পর্যন্ত ‘লিচুর বাগানে’ সীমাবদ্ধ থাকেনি। হয়ে উঠেছে ভালোবাসার প্রতীক।

কথায় আছে, ভালোবাসা জয় করে নিতে হয়। জিতে নেওয়ার মধ্যেই আছে অপার আনন্দ। ভালোবাসায় প্রতিবন্ধকতা থাকাটা মোটেও দোষের নয়। বরং বাধা না থাকাটাই যেন আশ্চর্যের। একইভাবে ভালোবাসা জিতে নেওয়ার পরও পেয়ে গেছি বলে হাল ছেড়ে দিলে চলে না। ‘লিচুর বাগান’কে এ ক্ষেত্রে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করলে, ‘লিচুর বাগানে’ ‘পিরিতের বেড়া’ তথা ভালোবাসার বেষ্টনী দেওয়াটাই যুক্তিযুক্ত। কেননা ‘ভালোবাসা’কে ভালোবাসা দিয়েই আগলে রাখতে হয়। প্রবল যত্নে আঁকড়ে রাখতে হয়। যেন কোনো কৌতূহলেই তা দুলে না ওঠে, হারিয়ে না যায়।

আরও পড়ুনসাবিলা তো ‘লিচুর বাগানে’ দিয়ে কী যে আগুন লাগিয়ে দিল...০৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫ আসামিকে বাদ দিতে হলফনামা, বাদী কৃষক দল নেতাকে শোকজ
  • ‘লিচুর বাগানে’ যে কারণে ‘পিরিতের বেড়া’ দিতে হয়
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৫ জুন ২০২৫)
  • এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো: আনু মুহাম্মদ
  • অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে আরও যাঁরা পেয়েছেন ‘দ্য কিংস ফাউন্ডেশন পুরস্কার ২০২৫’
  • সৌদি আরবের ৫০ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ, আবেদনের শেষ তারিখ আজ 
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৪ জুন ২০২৫)
  • মুহাম্মদ ইলিয়াসের তাবলিগি দর্শন
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে মাস্টার্স, ক্লাস শুক্র ও শনিবার
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৩ জুন ২০২৫)