Prothomalo:
2025-05-01@05:20:48 GMT

মহানবী (সা.) এবং এক মদ্যপ

Published: 7th, March 2025 GMT

মদিনায় এক লোক ছিল, যাকে সবাই বলত ‘হিমার’ মানে গাধা। মহানবী মুহাম্মাদ (সা.)-কে সে এত ভালোবাসত যে, নবীজি (সা.) তাঁর সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন, নিশ্চয়ই সে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে ভালোবাসে।

তার নাম ছিল আবদুল্লাহ। তার বাবার নাম নুয়াইমান। সেই সূত্রে তাকে ইবন নুয়াইমান, আবার কখনো বাবার নামে তাকে নুয়াইমান আনসারিও বলা হতো। (আল-ইসাবা ফি তাময়িয আস-সাহাবা, ৩/৩৬৬)

তার সঙ্গে নবীজির সম্পর্ক ছিল হাস্যরসের। সে প্রায়ই নবীজির জন্য সুস্বাদু খাবার উপহার আনত। একবার কোনো ব্যবসায়ী কাফেলা মদিনায় এলে সে তাদের কাছ থেকে খানিকটা মাখন বা মধু বাকিতে কিনে নবীজির (সা.

)সামনে রাখল। পরে বিক্রেতা অর্থ দাবি করলে আবদুল্লাহ তাকে নিয়ে নবীজির (সা.)কাছে এল। বলল, এগুলোর দাম এই লোকটাকে দিয়ে দিন।

আরও পড়ুনইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম কেন পড়া দরকার০৩ মার্চ ২০২৫

নবীজি (সা.) বললেন, তুমি এসব আমাকে উপহার হিসেবে দাওনি?

আবদুল্লাহ বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর রাসুল, চেয়েছিলাম আপনি খান, কিন্তু দাম দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই।

দুজনেই হেসে দিলেন। তারপর নবীজি (সা.) নিজেই ব্যবসায়ীকে খাবারের দাম পরিশোধ করলেন। (মুসনাদে আবু ইয়া’লা, হাদিস: ১৭৬; সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৭৮০)

আরেকবার এক বেদুইন কোনো কাজে মহানবী (সা.)-র কাছে এলেন। উট বেঁধে রাখলেন নবীজির (সা.) বাড়ির সামনে। কেউ একজন গিয়ে হিমারকে বললেন, তুমি যদি উটটি জবাই করার ব্যবস্থা করতে, তাহলে আমরা মাংস খেতে পারতাম।

সে তা-ই করল।

বেদুইন বাইরে এসে চিৎকার করতে লাগল, হায়, আমার উট কে জবাই করল, মুহাম্মাদ?

নবীজি (সা.) বাইরে এসে দেখেন এই কাণ্ড। জিজ্ঞেস করলেন, এটা কে করেছে?

আরও পড়ুনমক্কার জমজম কূপের উৎপত্তি০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

লোকজন বলল, নুয়াইমান।

নবীজি (সা.) তাকে ধরতে বের হলেন। খুঁজে বের করলেন, সে নবীজির (সা.)চাচা জুবাইর ইবনে আবদুল মুত্তালিবের মেয়ে যুবাআর বাড়িতে লুকিয়ে আছে। (আল-ইসাবা ফি তাময়িয আস-সাহাবা, ৩/৩৬৬)

আবদুল্লাহ মদ্যপও ছিলেন। মাঝেমধ্যে তিনি এমন মাতাল হয়ে যেতেন যে তাকে রাস্তায় দুলতে দেখে নবীজির (সা.) সামনে ধরে আনা হতো। প্রতিবার নবীজি (সা.) নির্ধারিত শাস্তি কার্যকর করার নির্দেশ দিতেন। বিখ্যাত হাদিস বর্ণনাকারী আবু হোরাইরা (রা.) বলেন, আমাদের কেউ তাকে হাত দিয়ে মারছিল, কেউ জুতা দিয়ে, আবার কেউ কাপড় দিয়ে। মার শেষ হলে যখন সে চলে যাচ্ছিল তখন আমাদের একজন বলল, ‘তার কী হয়েছে? আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করুন।’ শুনে মহানবী (সা.) বললেন, ‘তোমাদের ভাইয়ের বিরুদ্ধে তোমরা শয়তানের সহযোগী হয়ো না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস ৬৭৮১)

ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বলেন, উপস্থিতিদের একজন বললেন, ‘আল্লাহ, অভিশাপ দিন তাকে। কতবার এই জন্য ডাকা হয়!’ মহানবী (সা.) তাকে তিরস্কার করে বললেন, তাকে অভিশাপ দিও না, কারণ আল্লাহর শপথ, যদি তুমি জানতে পারতে যে, সে আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলকে কত বেশি ভালোবাসে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৭৮০)

আরও পড়ুনতওবা যেভাবে করা যায়১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল ল হ আল ল হ বলল ন

এছাড়াও পড়ুন:

প্রথম আলোর সাংবাদিককে বৈষম্যবিরোধী নেতার হুমকি, থানায় জিডি

প্রথম আলোর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেনকে ফেসবুকে হুমকি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মুখ্য সংগঠক মোত্তাসিন বিশ্বাস। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে এ হুমকি দেন তিনি।

এ ঘটনায় গতকাল রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন আনোয়ার হোসেন।

ফেসবুক পোস্টে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনের দুটি ছবি লাল দাগ দিয়ে ক্রস চিহ্ন দেন মোত্তাসিন। ক্যাপশনে তিনি আনোয়ার হোসেনের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘....সত্য লিখুন, না হলে আপনিও ছাড় পাবেন না। ইনকিলাব জিন্দাবাদ।’

মোত্তাসিন বিশ্বাসের পোস্টের পর মন্তব্যের ঘরে আনোয়ার হোসেনকে একাধিক আইডি থেকে মারধরের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তবে আজ বুধবার বেলা ৩টা ১৬ মিনিটে মোত্তাসিনের আইডি থেকে পোস্টটি সরিয়ে নেওয়া হয়। ঘণ্টাখানেক পর পোস্টটি তাঁর ওয়ালে আবার দেখা যায়। এ হুমকির প্রতিবাদ জানিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোর সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ’।

ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে মোত্তাসিন বিশ্বাস আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ফেসবুক পোস্টে হলুদ কথাটা লেখা ঠিক হয়নি। এটি গত শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের শহীদ সাটু অডিটরিয়ামে জেলা পুলিশ আয়োজিত সুধী সমাবেশে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বক্তব্য দেওয়ার সময় বাধা দিয়ে থামিয়ে দেন জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য। এ নিয়ে প্রথম আলোয় ‘পুলিশের সুধীসমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ খবরের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েই এমন পোস্ট করেছেন বলে জানিয়েছেন মোত্তাসিন।

তাৎক্ষণিকভাবে লিখে ফেলেছিলেন, পরে মুছে দিয়েছেন। আনোয়ার হোসেনের করা কোন সংবাদটির বিষয়ে পোস্ট করেছেন, জানতে চাইলে তিনি মুক্তিযোদ্ধাকে বাধা দেওয়ার সংবাদটির কথা জানান।

মোত্তাসিন বিশ্বাস আরও বলেন, প্রথম আলোর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেন চব্বিশের আন্দোলনে তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন। কিন্তু সংবাদটি এভাবে কেন লিখেছেন, তা জানার জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি তাঁদের এড়িয়ে গেছেন। সে জন্যই তিনি ফেসবুকে লিখেছেন।

আনোয়ার হোসেন জিডিতে উল্লেখ করেছেন, স্ট্যাটাসে তাঁর দুটি ছবি ক্রস চিহ্ন দিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে। ওই পোস্টে মোত্তাসিনের অনুসারীসহ আরও অনেকে খারাপ মন্তব্য করে তাঁকে হুমকি দিয়েছেন। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় জিডি করার কথা জানান তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন। এটি একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে তদন্ত করতে দিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক আবদুর রাহিম বলেন, এই পোস্ট দেওয়ার পর রাতে তাঁরা এটি নিয়ে সভা করেছেন। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পোস্টটি ডিলিট করা হবে।

আরও পড়ুনপুলিশের সুধীসমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা২৭ এপ্রিল ২০২৫সাংবাদিক সমাজের নিন্দা-প্রতিবাদ

আনোয়ার হোসেনকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় জরুরি সভা করে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ। বিষয়টি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের লিখিতভাবে অবহিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে গতকাল মঙ্গলবারের সভায়। অবহিত করার পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যাবতীয় সংবাদ বর্জন করা হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (সিটিজেএ) সভাপতি রফিকুল আলম। উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাব, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাব, সিটি প্রেসক্লাব, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সিটিজেএর নেতা ও সদস্যরা।

সভার পর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পরিবর্তিত বাংলাদেশে একজন পেশাদার সাংবাদিককে নিয়ে আপত্তিজনক ও হুমকিস্বরূপ বক্তব্য কোনোভাবেই কাম্য নয়। যেসব অধিকারের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান হয়, তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে বাক্‌স্বাধীনতার অধিকার। একজন পেশাদার সাংবাদিককে নিয়ে ফেসবুকে এমন পোস্ট সেই আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটা স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর হস্তক্ষেপ, যা আমাদের উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত করেছে।’ অবিলম্বে মোত্তাসিন বিশ্বাস তাঁর দেওয়া পোস্টটি প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ না করলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাংবাদিক সমাজ সম্মিলিতভাবে কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বিবৃতিতে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
  • বড় বন্দরে ভারী কাজ করেও চলে না সংসার 
  • নাটোরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল একজনের
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
  • ৫০ পেরোনো নারীর খাদ্যাভ্যাস যেমন হতে হবে
  • যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন
  • সেলফি’র ধাক্কায় গণস্বাস্থ্যের কর্মীর মৃত্যু, ৬ বাস আটক
  • পেহেলগামে হামলার পর প্রতিশোধের আশঙ্কায় দিন কাটছে ভারতীয় মুসলিমদের
  • প্রথম আলোর সাংবাদিককে বৈষম্যবিরোধী নেতার হুমকি, থানায় জিডি