‘রিফিউজি’ সিনেমার মাধ্যমে ২০০০ সালে বলিউডে অভিষেক ঘটে অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খানের। রুপালি দুনিয়ায় পা দিয়েই নজর কাড়েন। টানা সিনেমা উপহার দিতে থাকেন এই অভিনেত্রী। পরের বছরই করন জোহর নির্মিত ‘কাভি খুশি কাভি গম’ সিনেমায় অভিনয় করে তাক লাগিয়ে দেন কারিনা।
করন জোহরের সঙ্গে কারিনা কাপুর খানের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো ছিল। ২০০৩ সালে করন জোহর ‘কাল হো না হো’ সিনেমা নির্মাণ করেন। সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের জন্য কারিনা কাপুর খানকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। সর্বশেষ সিনেমাটি থেকে বাদ পড়েন এই অভিনেত্রী। তার পরিবর্তে প্রীতি জিনতাকে চূড়ান্ত করা হয়।
এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় দ্বন্দ্ব। প্রায় এক বছর কথাও বলেননি কারিনা-করন। এই তারকা যুগলের পুরোনো মান-অভিমানের গল্প চলুন জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুন:
তারা কেন দুটো করে ঘড়ি পরেন?
মাঠে খেলছেন বিরাট, গ্যালারিতে ঘুমাচ্ছেন আনুশকা!
‘কাল হো না হো’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অর্থাৎ ন্যায়না চরিত্রে অভিনয়ের জন্য কারিনা কাপুরকে প্রথম প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শাহরুখের সমান পারিশ্রমিক দাবি করায় কারিনা কাপুরকে বাদ দেওয়া হয়। যদিও ঘটনাটি বলিউড অভিনেতা-অভিনেত্রীর পারিশ্রমিকের বড় পার্থক্য চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
বৈষম্য নিরসনের চেষ্টা করলেও কারিনার দাবি শুনে হতবাক হয়েছিলেন করন জোহর। এই নির্মাতা তার আত্মজীবনী ‘অ্যান আনসুইটেবল বয়’ বইয়ে জানান, কারিনার এই ঘটনা তাকে কষ্ট দেয় এবং তার পরিবর্তে অন্য কাউকে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বইটিতে করন জোহর লেখেন, “মুঝসে দোস্তি করোগে’ সিনেমা মুক্তির সপ্তাহান্তে, আমি কারিনাকে ‘কাল হো না হো’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব দিই। কিন্তু কারিনা শাহরুখ খানের সমান পারিশ্রমিক দাবি করে। পরে আমি তাকে বলেছিলাম, ‘দুঃখিত।”
এ ঘটনার পর এক বছর কথা বলেননি কারিনা-করন। এ তথ্য উল্লেখ করে বইটিতে বলা হয়েছে, “আমি খুবই কষ্ট পেয়েছিলাম। আমি আমার বাবাকে বলেছিলাম, ‘এই আলোচনার ঘর থেকে বেরিয়ে যাও।’ আমি তাকে (কারিনা) ফোন করেছিলাম। কিন্তু সে আমার ফোন ধরেনি। পরে তাকে না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। এরপর প্রীতি জিনতাকে চুক্তিবদ্ধ করি। তারপর আমি আর কারিনা এক বছর কথা বলিনি। আমরা পার্টিতে পরস্পরের খোঁজখবর নিতাম। আসলে, এটা খুবই ছেলেমানুষি ছিল। কারণ কারিনা তখন ছোট ছিল; আমার চেয়ে ১০ বছরের ছোট।”
কারিনা-করণ কীভাবে পুনরায় বন্ধু হন সে গল্পও বইটিতে বলা হয়েছে। করন জোহরের বাবা যশ জোহরের ক্যানসার শনাক্ত হওয়ার পর কারিনা-করনের দূরত্ব কমতে থাকে। কারিনা ফোন করে করনকে সহযোগিতা করার প্রস্তাব দেন। এরপর তাদের দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে। যশ জোহরের মৃত্যুর পর কারিনা কাপুর করন জোহরের বাড়িতে যান এবং গল্প করেই তারা রাত পার করে দেন। এরপরই তাদের বন্ধুত্ব আগের অবস্থায় ফিরে।
বইটিতে করন জোহর লেখেন, “নভেম্বরে ‘কাল হো না হো’ মুক্তি পায়। জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত সিনেমাটির শুটিং করি এবং সেপ্টেম্বরে গানের শুটিং ও প্রোমো তৈরি হয়েছিল। নিউ ইয়র্কে তখন বাবার চিকিৎসা চলছিল। এজন্য আমি ফিরে এসেছিলাম। সেই সময়ে কারিনা কাপুর আমাকে ফোন করেছিল। তখন আগস্ট মাস চলছিল। আমরা নয় মাস পর কথা বলছিলাম।”
কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন কারিনা কাপুর খান। তা জানিয়ে করন জোহর বইটিতে লেখেন, “ফোনে কারিনা কাপুর বলেছিল, ‘আমি যশ আঙ্কেলের ব্যাপারে খবর পেয়েছি।’ ফোনে কথা বলতে গিয়ে কারিনা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে। কারিনা বলেছিল, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারিনি, আমি দুঃখিত। চিন্তা করো না।”
তথ্যসূত্র: সিয়াসাত ডটকম
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বল ছ ল বইট ত
এছাড়াও পড়ুন:
চুয়েটে দিনভর তারুণ্যের ‘তর্ক-যুদ্ধ’
তীব্র উত্তেজনা চলছে তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে। একদিকে তাইওয়ানের স্বাধীনতা রক্ষার আকাঙ্ক্ষা, অন্যদিকে চীনের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা রক্ষার দৃঢ় অবস্থান। এর মাঝখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ঘিরে তৈরি হচ্ছে বৈশ্বিক কূটনৈতিক টানাপোড়েন। সামরিক মহড়া, যুদ্ধজাহাজের টহল আর রাজনৈতিক হুমকিতে যখন অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা বাড়ছে, ঠিক তখনই এসব জটিল আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে তর্ক-যুদ্ধে মেতে ওঠেন তরুণ বিতার্কিকেরা।
আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল ভবনে বিতার্কিকদের দেখা গেল। তাইওয়ান ও চীনের সাম্প্রতিক উত্তেজনায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা, অন্তর্বর্তী সরকারে ছাত্র ও সমন্বয়কের অন্তর্ভুক্তির ভালো-মন্দ—এমন আরও নানা আলোচিত বিষয় নিয়ে বিতার্কিকেরা যুক্তি, পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন। এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে চুয়েট ডিবেটিং সোসাইটি। আয়োজনের সহযোগী পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে প্রথম আলো।
এবারের আয়োজনের নাম ছিল ‘তারুণ্য উৎসব’। এতে দেশের ২৮ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২ দল অংশ নেয়। তিন দিনের আয়োজনে গতকাল ছিল দ্বিতীয় পর্ব। সকাল ৯টায় শুরু হয়ে এ প্রতিযোগিতা চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। যুক্তির এই লড়াই চলে চারটি ধাপে। প্রতিটি ধাপ শুরুর ১৫ মিনিট আগে প্রতিযোগীদের বিতর্কের বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর চটপট যুক্তি সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বিতার্কিকেরা। পরে তাঁদের মধ্য থেকে বাছাই করা ৮টি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় কোয়ার্টার ফাইনাল।
আয়োজকেরা জানান, কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিজয়ী চারটি দল নিয়ে আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হবে সেমিফাইনাল রাউন্ড। এরপর সেমিফাইনালের বিজয়ী দুটি দল সরাসরি অংশগ্রহণ করবে চূড়ান্ত পর্বে। চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন অতিথিরা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এদিন বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে বই বিনিময়, ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ ও গুপ্তধন খোঁজা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শুরু হয় আয়োজন।
চুয়েট ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি গোলাম মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, বিতর্কের মাধ্যমে নানা বিষয়ে জানার সুযোগ সৃষ্টি হয়। বিতর্ক আমাদের চিন্তা, চেতনা ও মেধা বিকশিত করে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের অংশগ্রহণের ফলে নতুন সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শিক্ষার্থীদের এ সুযোগ তৈরি করে দিতেই নবমবারের মতো এই বিতর্ক উৎসব বা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে এসেছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস। আলাপকালে তিনি বলেন, এ রকম প্রতিযোগিতায় সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্ক করার ফলে জ্ঞানের পরিধি সমৃদ্ধ হয়। পাশাপাশি অনেকের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
দিনভর বিতর্ক শেষে সন্ধ্যায় আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটকসহ বিভিন্ন পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি কনসার্টে মঞ্চ মাতায় জনপ্রিয় গানের দল ‘সহজিয়া’ ও ‘লেভেল ফাইভ’।