‘বিচ্ছেদ হলে যন্ত্রণা হবে, সেই যন্ত্রণা মেনে সরেও আসতে হবে’
Published: 7th, March 2025 GMT
গত কয়েক বছর প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া ও বিজয় ভার্মা। চলতি বছরে তাদের প্রেম পরিণয় পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কয়েক দিন আগে ভেঙে গেছে এ জুটির সম্পর্ক।
বিজয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর আগে তামান্নার নাম জড়িয়েছে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে। সেই তালিকায় রয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। ২০১২ সালে একটি বিজ্ঞাপনে একসঙ্গে অভিনয় করেন তারা। এরপর তাদের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। শোনা যায়, সেই সম্পর্ক বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। গুঞ্জন ছড়ানোর পর মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন উভয়ই।
তবে পরবর্তীতে এ নিয়ে নিজের অবস্থান জানিয়েছিলেন তামান্না। কিন্তু সেটা কয়েক বছর পর। তামান্না বলেছিলেন, “সত্যি মানুষের কোনো ধারণা নেই; যা খুশি তাই বলে। আমরা একসঙ্গে একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছিলাম। আমরা সেই সময়ে হয়তো চার-পাঁচটা কথা বলেছিলাম। তারপর আমাদের কোনো কথাই হয়নি।”
পাকিস্তানি এক ক্রিকেটারের সঙ্গেও নাম জড়িয়েছিল তামান্নার। ২০১৭ সালে দুবাইয়ের এক গহনার দোকান উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন তামান্না। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আবদুল রাজ্জাক। সেই দোকানে দাঁড়িয়ে দু’জন ছবিও তুলেছিলেন। পরে ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর তাদের সম্পর্ক নিয়ে কানাঘুষো শুরু হয়। দুবাইয়ে রাজ্জাকের সঙ্গে বাগদান সেরেছেন বলেও গুঞ্জন চাউর হয়েছিল।
এর আগে এক মার্কিন চিকিৎসকের সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল তামান্নার। এ গুঞ্জনের খবর তামান্নার কানেও পৌঁছেছিল। পরে বিষয়টি নিয়ে তামান্না বলেছিলেন, “কখনো অভিনেতা, কখনো ক্রিকেটার, কখনো চিকিৎসক। এসব শুনলে মনে হয়, হাতে থলে নিয়ে বাজারে বেরিয়েছি বর খুঁজতে। আমি ভালোবাসায় বিশ্বাস করি। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এই ধরনের আজেবাজে কথা ছড়ালে তা মেনে নিতে পারব না।”
২০১০ সালে মুক্তি পায় ‘পাইয়া’ সিনেমা। এতে তামিল অভিনেতা কার্থির সঙ্গে দেখা যায় তামান্নাকে। বড় পর্দায় এ জুটির রসায়ন দর্শকদের মনে ধরেছিল। তারপর কার্থি-তামান্নার প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে জোর চর্চা শোনা যায়। কার্থির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছেন কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে তামান্না বলেছিলেন— “অভিনেত্রী হিসেবে আমার দায়িত্ব আমাকে নিয়ে যা কিছু রটছে, সেই ধোঁয়াশা স্পষ্ট করে দেওয়া। কার্থির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। ও আমার ভালো বন্ধুও নয়। কার্থি আমার সহকর্মী মাত্র।”
বিজয়ের সঙ্গে প্রেম ভাঙার আগে এক পডকাস্টে তামান্না জানিয়েছিলেন, ব্যক্তিগত জীবনে প্রেমঘটিত কারণে দু’বার আঘাত পেয়েছেন। তবে সম্পর্ক ভেঙে গেলেও কোনো প্রাক্তন প্রেমিককে ঘৃণা করেন না তিনি। বরং সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে তামান্না ভাটিয়া বলেন, “আমার প্রথম সম্পর্ক যখন ভেঙেছিল, তখন আমার বয়স কম। সম্পর্ক ভাঙার পর মনে হয়েছিল আমার অনেক কিছু জানা ও পাওয়ার বাকি রয়েছে। দ্বিতীয় সম্পর্ক পরিণত বয়সে ভাঙে। সেই মানুষটা আমার জন্য সঠিক ছিল না। দীর্ঘকাল তার সঙ্গে কাটানো যেত না। সম্পর্কের প্রথম দু’-এক সপ্তাহে যে সমস্যাগুলো দেখা দেয়, পরে সেই সমস্যাই বড় আকার ধারণ করে। তাই কখনো এগুলো এড়িয়ে যেতে নেই। সম্পর্কের ক্ষেত্রে তৃতীয় কোনো ব্যক্তির উপদেশ নেওয়া উচিত নয়।”
সম্পর্ক নিয়ে স্পষ্ট বিশ্বাস লালন করেন তামান্না। এর আগে এই অভিনেত্রী বলেন, “জীবনে মানুষের আসাযাওয়া চলতেই থাকে। তারা কোনো না কোনো কারণে জীবনে আসে। তাদের এই আসাযাওয়াই আমাদের কিছু শিখিয়ে দিয়ে যায়। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আমরা নিজেদের আরো ভালো করে চিনতে পারি। বিচ্ছেদ হলে যন্ত্রণা হবে। সেই যন্ত্রণা মেনে নিয়ে সেখান থেকে সরেও আসতে হবে। কয়েক বছর পর সেই স্মৃতিগুলো মনে পড়লে নিজেরাই হাসব। তবে আমাদের জীবনে এমন একজন সত্যিই আসে যে আমাদের নিজেদের মতো গ্রহণ করে নেয়। আমরা যেমন ঠিক তেমনভাবেই আমাদের ভালোবাসে। সেই মানুষটার জন্যই অপেক্ষা করতে হয়।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক র বল ছ ল আম দ র গ ঞ জন
এছাড়াও পড়ুন:
৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) নবম ব্যাচের (নবনীতক ৯) শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সমাপনী-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের বিদায় বেলায় এক মঞ্চে আসীন হন দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান সাত উপাচার্য।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টায় একাডেমিক ভবন প্রাঙ্গণে আনন্দঘন পরিবেশে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর ছাড়াও অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী, খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুল আওয়াল, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন তারেক।
আরো পড়ুন:
নতুনবাজারের সেই রনির বুলেটের যন্ত্রণা আজো থামেনি
শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
এক মঞ্চে একইসঙ্গে এতজন উপাচার্যকে পেয়ে সমাপনী ব্যাচসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “এভাবে একসঙ্গে পুরো সেশনের শিক্ষা সমাপনী আয়োজনের আইডিয়াটি অত্যন্ত চমৎকার। এতে করে একটি ব্যাচের একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশ ঘটে। যেখানে সবার একসঙ্গে পরীক্ষা হয়, রেজাল্ট প্রকাশ হয় এবং কোনো সেশন জট থাকে না। আমি এই আইডিয়াটি আমার নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।”
খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান বলেন, “আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ এখানে এসেছি সংহতি জানানোর জন্য। আমি নবম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জীবনে সফলতা কামনা করছি।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীদের বিসিএস দেওয়া, বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করা বা ব্যবসা করার লক্ষ্য থাকে। তবে জীবনে কোনো না কোনো কিছু করতেই হবে। এক্ষেত্রে অবসর বলে কোনো শব্দ থাকা উচিত নয়।”
পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “আমি যখন দেশের বাইরে পড়াশোনা করতাম, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আমি কখনোই দেখিনি। আর বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে কখনো একসঙ্গে সাতজন উপাচার্যকেও বসতে দেখিনি, এটা অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর করে দেখিয়েছেন।”
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, “আমরা যদি আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করি, আমাদের চাকরি খোঁজার পাশাপাশি এমন কিছু করার মানসিকতা রাখতে হবে, যা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।”
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আতিয়ার রহমান বলেন, “শিক্ষা সমাপনী মানেই সব সম্পর্ক ছিন্ন করা নয়। বিশ্বে এমন অনেক নজির আছে, যেখানে অ্যালামনাই থেকে উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাই নিজেকে বিস্তৃত পরিসরে মেলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করার দায়িত্ব নিতে হবে।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “নিজেকে চেনাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা। আর শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনই বলে দেবে, তারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কতটা জ্ঞান অর্জন করেছে।”
প্রধান অতিথিরি বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর আগত উপাচার্যদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্যই আমাদের এই প্রয়াস। একইসঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি তুলে ধরাও আমাদের লক্ষ্য। আমরা জানিয়ে দিতে চাই, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায় এবং অচিরে দাঁড়াবেই।”
তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ইউজিসির দুইটি হিট প্রকল্প পেয়েছি এবং ভবিষ্যতে আরো পাব। আমরা আশা করছি, বি ক্যাটাগরি থেকে আগামী অর্থবছরের আগেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি এ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হবে।”
গোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসানের সভাপতিত্বে এতে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল আহসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক, সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি ও প্রাধ্যক্ষগণ, দপ্তর প্রধানগণ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়।
শিক্ষা সমাপনী উপলক্ষে বুধবার ছাত্রদের কালার ফেস্ট ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী