মৌ-তিশা-বুবলীকে নিয়ে আনন্দমেলায় নাবিলা
Published: 17th, March 2025 GMT
ঈদে প্রতি বছর বর্ণিল অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। এসব অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘আনন্দমেলা’ থাকে দর্শক আগ্রহের কেন্দ্রে। এ আয়োজনে নাচ মানেই ভিন্নধর্মী পরিবেশনা। এবার আনন্দমেলায় নাচ পরিবেশন করবেন বরেণ্য নৃত্যশিল্পী সাদিয়া ইসলাম মৌ, নন্দিত অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা ও চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী। বিটিভি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ আয়োজনের মাধ্যমেই দীর্ঘদিন পর নাচ নিয়ে হাজির হবেন তিশা। তিশা ও বুবলীর নাচের কোরিওগ্রাফি করছেন ইভান শাহরিয়ার সোহাগ। আর নিজের কোরিওগ্রাফিতে নাচ পরিবেশন করবেন মৌ।
ঈদ আনন্দমেলার কোরিওগ্রাফি প্রসঙ্গে ইভান শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, ‘বিটিভির আনন্দমেলা মানেই অন্যরকম আয়োজন। এতে নানা কিছু সমাহার ঘটে এতে। এর মধ্যে নাচ নিয়ে দর্শকের তুমুল আগ্রহ থাকে। দীর্ঘদিন পর কোনো টিভি আয়োজনে ফিরছেন তিশা। শবনম বুবলীও ভিন্নধর্মী পরিবেশনা নিয়ে হাজির হবেন। প্রত্যেকে তাদের অভিনীত সিনেমার গানেই নাচবেন। দু’জনের সঙ্গেই আয়োজন নিয়ে পরিকল্পনা করেছি। আগামী ২১ মার্চ থেকে রিহার্সেল শুরু হবে। আশা করছি, জমজমাট একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান উপহার পেতে যাচ্ছেন দর্শক’।
শবনম বুবলী বলেন, ‘এক বছর আগে ‘আনন্দমেলা’ অনুষ্ঠানে নাচ করেছি। আবার নাচ নিয়ে হাজির হব একই আয়োজনে। নিজের সিনেমার প্রিয় কিছু গানের সঙ্গে নাচব। আশা করছি, পরিবেশনাটি দর্শকদের পছন্দ হবে’।
জানা গেছে, রামপুরার বিটিভির নিজস্ব অডিটোরিয়ামে আনন্দমেলার শুটিংয়ে শিগগিরই অংশ নেবেন তারকাশিল্পীরা। আয়োজন নিয়ে বিটিভির অনুষ্ঠান নির্বাহী ও আনন্দমেলার প্রযোজক মাহবুবা ফেরদৌস বলেন, ‘বেশ বড় আয়োজন নিয়ে ‘আনন্দমেলা’র পরিকল্পনা করেছি। অনেক নামিদামি তারকারা হাজির হবেন অনুষ্ঠানে। গান ও নাচ, চমৎকার কিছু স্কিডসহ হরেক রকম আয়োজন।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করবেন মাসুমা রহমান নাবিলা ও মামনুন ইমন। এর আগে ২০১৮ সালে ‘আনন্দমেলা’ উপস্থাপনা করেন নাবিলা। ওই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সজল নূর। ৭ বছর পর ফিরলেন তিনি।
এ বিষয়ে নাবিলা বলেন, “এর আগেও আমি আনন্দ মেলার উপস্থাপনা করেছি। দ্বিতীয় বারের মতো উপস্থাপনা করতে যাচ্ছি। আনন্দমেলা প্রযোজকরা খুব করে চাইছিলেন এটি যেন আমি উপস্থাপনা করি। এটি একটি লিজেন্ডারি শো। ছোটবেলা থেকে এটি দেখে দেখেই বড় হয়েছি। আনন্দমেলার মাধ্যমে দেশের মানুষকে একটু আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা থাকে বিটিভির। সবকিছু ভেবেই অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করতে রাজি হয়েছি। চেষ্টা করব নতুন আঙ্গিকে নিজেকে উপস্থাপন করতে। এই অনুষ্ঠানের প্রতি দেশের মানুষের এখনও অনেক আগ্রহ। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ এখনও অনুষ্ঠানটি দেখার জন্য আগ্রহ দেখায়। তাই অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করতে যাচ্ছি ভেবে ভালো লাগছে।”
মাহবুবা ফেরদৌস ছাড়াও ৫০ মিনিটের অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করছেন মোঃ হাসান রিয়াদ ও মোহাম্মদ মনিরুল হাসান। ‘আনন্দমেলা’ প্রচার হবে ঈদের দিন রাতে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স দ য় ইসল ম ম অন ষ ঠ ন হ জ র হব করব ন আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
জাফলংয়ের পাথর কোয়ারিতে এখনও রাজনৈতিক ছায়া
ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের আগে সিলেটের জাফলংয়ের পাথর কোয়ারির নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর কবজায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারানোর পর রাজত্ব বদলেছে। বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের নেতাকর্মীর হাতে এখন পাথর কোয়ারির চাবি। ইজারা স্থগিত থাকলেও রাতদিন বোমা মেশিন ও এক্সক্যাভেটর দিয়ে পাথর তোলা থেমে নেই। গত ৫ আগস্টের পর ৯ মাসে অন্তত ৪০০ কোটি টাকার বালু পাথর লুট হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো জানিয়েছে।
লুটের অভিযোগে একাধিক নেতাকর্মী দলের পদ পদবি হারালেও এ পথ থেকে তারা ফিরছেন না। থানায় মামলা করেও দমানো যাচ্ছে না তাদের। সর্বশেষ শনিবার সরকারের দুই উপদেষ্টা জাফলংয়ে পরিদর্শনে গেলে তাদের গাড়িবহরে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ভিডিও ফুটেজে যুবদল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের একাধিক নেতাকেই ঘটনাস্থলে দেখা যায়।
শনিবার দুপুরে জাফলংয়ের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) পরিদর্শনে যান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা শেষে ফেরার পথে স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে একদল মানুষ পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে উপদেষ্টাদের গাড়িবহরের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিন, যুবদল নেতা সুমন আহমদ ও শ্রমিক দলের দেলওয়ার হোসেনকে দেখা যায়। এ ছাড়া জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমেদসহ আরও কয়েক নেতাকর্মীকে সেখানে দেখা গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
পরিদর্শন শেষে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সিলেটের নান্দনিক ও নৈসর্গিক আবেদন আছে। এ রকম জায়গায় আমরা আর পাথর তোলার অনুমতি দেব না। এখানকার শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য কাজ করছি। পরে বিকেলে সিলেট সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা বলেন, অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, অবৈধভাবে বালু-পাথর তোলার কারণে পরিবেশের ধ্বংস হচ্ছে। আপাতত পাথর তুলতে দেওয়া হবে না।
গাড়িবহরে বাধার বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার ওসি সরকার মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ জানান, হঠাৎ কিছু লোক উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে দেয়। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়ে রাস্তা চলাচলের উপযোগী করে।
শুরুতে জাফলং নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ ওঠে সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত গোয়াইনঘাটের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপনসহ যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে গত ১৬ অক্টোবর রফিকুল ইসলামের দলীয় পদ স্থগিত করে কেন্দ্রীয় কমিটি। সর্বশেষ ৯ জুন জেলা যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেমকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় যুবদল। বালু ও পাথর তোলার দায়ে গত ২৫ মার্চ ৩১ জনের বিরুদ্ধে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদ এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, দলের কেউ জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। অনেকে দলের নাম ভাঙিয়েও অপরাধ করছে।
আজিরের নেতৃত্বে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহরে বাধা প্রসঙ্গে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার বলেন, বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।