যুবকের আপত্তিকর মন্তব্য, ক্ষোভ ঝারলেন নায়িকা
Published: 19th, March 2025 GMT
নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন শবনম ফারিয়া। অভিনয়ের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সরব। সমকালীন নানা বিষয় নিয়েও কথা বলতে দেখা যায় তাকে। ফলে মাঝে মাঝে নেটিজেনদের নোংরা মন্তব্যের শিকার হন এই অভিনেত্রী। এবার এক যুবকের আপত্তিকর মন্তব্য প্রকাশ্যে আনলেন ফারিয়া।
সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানের একমঞ্চে হাজির হন ক্রিকেটার তাসকিন আহমেদ, তানজিদ হাসান তামিমসহ বিভিন্ন অঙ্গনের একঝাঁক তারকা। সেই অনুষ্ঠানের কয়েকটি ভিডিও ক্লিপে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে খুনসুটিতে মেতে উঠতে দেখা গেছে অভিনেত্রীদের। এর মধ্যে একটি ক্লিপে অভিনেত্রী শবনম ফারিয়াকে হাসতে হাসতে বলতে শোনা যায়, “আমি তাসকিনের পাশে দাঁড়াব না। আমাকে খাটো লাগবে। তামিম ভাইয়া, তুমি আসো।”
শবনম ফারিয়ার সরল স্বীকারোক্তির সেই ভিডিও ক্লিপের কমেন্ট বক্সে আপত্তিকর মন্তব্য করেন এক যুবক; যা অভিনেত্রীসহ নেটিজেনদের দৃষ্টি এড়ায়নি। বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন শবনম ফারিয়া। এ পোস্টে ওই যুবকের কমেন্টের স্ক্রিনশট ও ফেসবুক প্রোফাইলের ছবি তুলে ধরেন এই নায়িকা।
আরো পড়ুন:
‘মিশন মুন্সিগঞ্জ’
নিহার সঙ্গে তৌসিফের ‘অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ’
দীর্ঘ স্ট্যাটাসে শবনম ফারিয়া বলেন, “আমরা অনেক দিন পর খুব সুন্দর একটা ইভেন্টে গিয়েছিলাম, সেখানকার একটা ক্লিপে দেখা যায়, আমি হাসতে হাসতে বলছি, তাসকিনের পাশে দাঁড়াব না, আমাকে খাটো লাগবে। তামিম ভাইয়া তুমি আসো। যেহেতু তাসকিন আর আমি পূর্বপরিচিত, একেবারেই খুনসুটি থেকে বলা, সেখানে এই ভদ্রলোক নিচের মার্ক করা এই কমেন্ট করেছেন।”
প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে শবনম ফারিয়া বলেন, “আচ্ছা, একটা সুস্থ স্বাভাবিক মানসিকতার মানুষের অন্য একটা অচেনা মানুষকে কেন পতিতা মনে হবে? পতিতা মানে কী বোঝেন? যিনি যৌন কর্মের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করে। কেউ অভিনয় করা মানে যৌনকর্মী হওয়া? আপনি আমার পরিবার সম্পর্কে জানেন? আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা জানেন? আপনি অভিনয়ের বাইরে আমার অন্য পেশাগত যোগ্যতা সম্পর্কে অবগত?”
নেটিজেনদের এ ধরনের মন্তব্য প্রায়ই এড়িয়ে যান। কিন্তু সবসময়ই কেন এড়িয়ে যাবেন, সেই প্রশ্ন রেখে শবনম ফারিয়া বলেন, “আমরা এ ধরনের কমেন্ট প্রায়ই দেখি, বেশির ভাগ সময় ইগনোর করতে হয়। কিন্তু কেন ইগনোর করব? শুধু আপনার হাতে একটা মোবাইল ফোন আছে দেখে আপনি অযথা একটা মানুষকে যৌনকর্মী ডাকবেন? নাকি আপনাদের জন্ম যৌনপল্লীতে, যে জন্ম থেকে এসবই দেখে বড় হয়েছেন, তাই যাকে দেখেন, সবাইকেই যৌনকর্মী মনে হয়?”
বিস্ময় প্রকাশ করে শবনম ফারিয়া বলেন, “দেশে অনেক ধরনের আন্দোলন হচ্ছে, পরিবর্তনের কথা হচ্ছে, কিন্তু এই মানুষগুলোর মানসিকতা কীভাবে পরিবর্তন করতে পারি বলেন তো? এই ভদ্রলোক সাজিদা ফাউন্ডেশনে কাজ করেন। এনজিওগুলোতে নাকি সবচেয়ে উদার মানসিকতার লোকেরা কাজ করেন। এই যদি হয় তার উদাহরণ, আমি নির্বাক।”
শবনম ফারিয়ার এই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে আপত্তিকর মন্তব্যকারী ওই যুবকের কড়া সমালোচনা করেছেন নেটিজেনরা। একইসঙ্গে অনেকে ওই যুবককে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক চলচ চ ত র শবনম ফ র য় কম ন ট
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পকে ইউক্রেনের পাশে থাকার আহ্বান রাজা চার্লসের
বিশ্বের সবচেয়ে জটিল কিছু সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেছেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস। একই সঙ্গে তিনি ‘স্বৈরাচারের (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন) বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থন’ দেওয়ার জন্য ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান। খবর বিবিসির।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরের প্রথম দিনে উইন্ডসর ক্যাসলে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে দেওয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন রাজা।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত
সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেন, এ সম্পর্ককে ‘বিশেষ’ শব্দ দিয়ে যথাযথভাবে বোঝানো যায় না।
উইন্ডসর ক্যাসলে ১৬০ জন অতিথির জন্য আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ এই নৈশভোজে রাজার বক্তৃতায় দুই দেশের গভীর বন্ধন এবং সাংস্কৃতিক, বাণিজ্যিক ও সামরিক সম্পর্ক ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়।
ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় এ সফর চলবে আজ বৃহস্পতিবারও। এদিন নানা অনুষ্ঠানে মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের সঙ্গে অংশ নেবেন ব্রিটিশ রানি ক্যামিলা ও প্রিন্সেস অব ওয়েলস।
রাজকীয় অ্যাপায়ন শেষে ট্রাম্পের আজকের কর্মসূচি রাজনৈতিক আলোচনায় রূপ নেবে। আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তার সরকারি বাড়ি চেকার্সে বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনও হবে।
বুধবারের (১৭ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় ভোজ ছিল আড়ম্বর ও রাজনীতির সমন্বয়ে সাজানো এক বিশেষ আয়োজন। ভোজে রাজা, রানি ও রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের উপস্থিতিতে ট্রাম্পকে স্বাগত জানানো হয় উইন্ডসরে।
উইন্ডসর ক্যাসলের মনোরম প্রাঙ্গণে পৌঁছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মেলানিয়া রাজকীয় ঘোড়ার গাড়ি থেকে নামেন। সেখানে সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো সেনাদলের অভিবাদন গ্রহণ করেন তারা।
যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানোর জন্য দেশটিতে আয়োজিত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক সংবর্ধনা ছিল এটি।
যুক্তরাষ্ট্রের অতিথিকে স্বাগত জানাতে প্রিন্স ও প্রিন্সেস অব ওয়েলসও উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রেসিডেন্ট ও মেলানিয়ার সঙ্গে উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ এক বৈঠকও করেন।
ভোজসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রিন্স উইলিয়ামের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তিনি হবেন ‘অসাধারণ সফল নেতা’। প্রিন্সেস অব ওয়েলস ক্যাথরিনকে তিনি আখ্যা দেন ‘উজ্জ্বল, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ও সুন্দরী’ হিসেবে।
ট্রাম্পের ঐতিহাসিক এ দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর প্রমাণ করেছে রাজা ও তাঁর মধ্যে সম্পর্ক বেশ ভালো। সফরে আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মুহূর্তও দেখা গেছে।
এরপর রাজপ্রাসাদে ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানান রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা। ট্রাম্প যখন রাজার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন, তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ছয়টি কামান থেকে একযোগে ৪১ বার তোপধ্বনি করা হয়। একই সময়ে টাওয়ার অব লন্ডন থেকে একই রকম তোপধ্বনি হয়।
ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানানোর এ আয়োজনে অংশ নেন ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর ১ হাজার ৩০০ সদস্য। ছিল শতাধিক ঘোড়া।
যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানোর জন্য দেশটিতে আয়োজিত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক সংবর্ধনা ছিল এটি।
বিবিসি বলছে, রাজকীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি, বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা থাকবে।
যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফর হলো একধরনের নরম শক্তির কূটনীতি, যা গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য রাজকীয় আকর্ষণ ব্যবহার করে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কেউ নেই।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আর্থিক সেবা, প্রযুক্তি এবং জ্বালানি খাতে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় গড়ে তুলে যুক্তরাজ্যকে আমেরিকান বিনিয়োগের প্রধান গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপন করতে চেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে তিনি নিজ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে চাইছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফর শুরু হওয়ার সাথে সাথে, মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের একটি বড় প্রযুক্তি চুক্তি ঘোষণা করা হয়েছে। যার মধ্যে মাইক্রোসফট থেকে ২২ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং পারমাণবিক শক্তিতে সহযোগিতা দেখা যাবে।
ট্রাম্পের সফরের আগে গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট যুক্তরাজ্যের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণায় ৫ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প-স্টারমারের বৈঠক থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক চুক্তির ঘোষণাও আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা/ফিরোজ