রফিকুলের পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার নেই : পর্যবেক্ষণে আদালত
Published: 20th, March 2025 GMT
রফিকুল ইসলাম যেভাবে একটি ছোট নিরাপরাধ শিশুকে নৃশংস এবং পৈশাচিকভাবে ধর্ষণ ও হত্যা করেছে তার এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার এবং পৃথিবীর আলো-বাতাস গ্রহণের কোনো অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোছাম্মৎ রোকশানা বেগম হেপীর আদালত প্রায় ৮ বছর আগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে রফিকুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। রায়ের আগে পর্যবেক্ষণে এ মন্তব্য করেন বিচারক।
পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, “রফিকুল ইসলাম ২০১৭ সালের ১ অক্টোবর ভোর সোয়া ৬ টার দিকে যাত্রাবাড়ি থানাধীন মাতুয়াইল দরবার শরীফ গলির জনৈক সামাদ ভূঁইয়ার টিনসেড ভাড়া বাসায় ভিকটিম জারিয়া আক্তারকে দুই হাত, পা বেঁধে, মুখে কাপড় গুঁজে মুখ বেঁধে, ঘাড় মটকিয়ে পৈশাচিকভাবে ধর্ষণ ও হত্যা করে। যা প্রসিকিউশন পক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
আসামি যেভাবে একটি ছোট নিরাপরাধ শিশুকে নৃশংস ও পৈশাচিকভাবে ধর্ষণ ও হত্যা করেছে তার এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার এবং পৃথিবীর আলো-বাতাস গ্রহণের কোনো অধিকার নেই। কারণ তার কাছে কোনো নারী ও শিশু নিরাপদ নয়। তাকে এই শাস্তির মাধ্যমে এই ট্রাইব্যুনাল সমাজের সকলের মাঝে এই দৃষ্টান্ত ও সংবাদ পৌঁছে দিতে চান যে, নারী ও শিশুদের প্রতি এই জাতীয় নৃশংস অপরাধের বিচার হয় এবং হবে, যদি সঠিকভাবে তদন্ত শেষে সকল সাক্ষ্য প্রমাণ প্রসিকিউশনপক্ষ উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়।”
এদিকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি রফিকুলকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাকে আরও ৬ মাস কারাভোগ করতে হবে।
জানা গেছে, সাত বছরের শিশু জারিয়া আক্তার ২০১৭ সালের ১ অক্টোবর ভোর ৬ টার দিকে রুম থেকে বাথরুমে যায়। সাড়ে ৬ টা পর্যন্তও ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন তাকে খুঁজতে থাকেন। তবে তাকে খুঁজে পায় না। বিকেল সোয়া ৪ টার দিকে জারিয়ার বাবা জাকির হোসেনকে অজ্ঞাত পরিচয়ে ফোনে জানায়, জারিয়া কোথায় আছে জানে। পরে কল কেটে দেন। আর ফোন ধরেন না। জারিয়ার পরিবার বিষয়টি থানা পুলিশকে জানায়। পুলিশ রফিকুলের রুম থেকে জারিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরদিন পুলিশ রফিকুলকে গ্রেপ্তার করে। পরে সে জানায়, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে।
এদিকে এ ঘটনায় জারিয়ার বাবা জাকির হোসেন পরদিন যাত্রাবাড়ি থানায় মামলা করেন। পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। এরপর চার্জগঠন করে বিচার শুরু হয়। সকল বিচারিক কার্যক্রম শেষ করে আদালত রায় ঘোষণা করলেন।
ঢাকা/মামুন/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মিতালিকে ছাড়িয়ে ইতিহাস গড়লেন মান্ধানা
দুই ঘণ্টার বৃষ্টিবিঘ্নের পর অবশেষে নাবি মুম্বাইয়ের ডি ওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০২৫ এর প্রতীক্ষিত ফাইনাল। টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। আর ব্যাট হাতে মাঠে নামে ভারত।
শুরুটা দারুণ করে ‘উইমেন ইন ব্লু’। ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা ও শেফালি ভার্মা গড়েন ১০৪ রানের জুটি। এই রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪৫ রানে আউট হন মান্ধানা। আর তাতেই রচনা হয় নতুন ইতিহাস। মিতালি রাজকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপের এক আসরে ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হয়ে যান মান্ধানা।
আরো পড়ুন:
গৌহাটি টেস্টে ‘লাঞ্চের আগে টি-ব্রেক’! জানুন কেন এই ব্যতিক্রম
রোহিতের সেঞ্চুরির ‘হাফ-সেঞ্চুরি’, ঢুকলেন এলিট ক্লাবে
চলতি বিশ্বকাপে ৯ ইনিংসে মান্ধানার মোট রান ৪৩৪, যা ২০১৭ সালের আসরে মিতালি রাজের করা ৪০৯ রানের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে।
ভারতের হয়ে এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের তালিকা:
৪৩৪ – স্মৃতি মান্ধানা (২০২৫)
৪০৯ – মিতালি রাজ (২০১৭)
৩৮১ – পুনম রাউত (২০১৭)
৩৫৯ – হারমানপ্রীত কৌর (২০১৭)
৩২৭ – স্মৃতি মান্ধানা (২০২২)
এবারের আসরে দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন মান্ধানা:
এখন পর্যন্ত দুইটি ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলেছেন স্মৃতি মান্ধানা। ২০১৭ সালের আসরেই প্রথম আলোচনায় আসেন তিনি। করেছিলেন ৩২৭ রান। আর এবার ২০২৫ বিশ্বকাপে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫৪.২৫ গড়ে ৪৩৪ রান। যা তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স।
তবে শুরুটা কিন্তু খুব একটা উজ্জ্বল ছিল না। প্রথম তিন ম্যাচে তিনি করেছিলেন মাত্র ৪৬ রান। কিন্তু এরপরই যেন জেগে ওঠেন। টানা দুটি ফিফটির পর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে করেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি।
সেমিফাইনালে ভালো শুরু করেও বড় ইনিংসে রূপ দিতে পারেননি ২৯ বছর বয়সী এই ওপেনার। ফাইনালেও ভালো সূচনা করে ৫৮ বলে ৮টি চার মেরে ৪৫ রানে সাজঘরে ফেরেন।
ঢাকা/আমিনুল