হামজা চৌধুরী কে, কেমন খেলেন, বাংলাদেশ দল কতটা উপকৃত হবে
Published: 20th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের ফুটবলাঙ্গন এখন হামজা চৌধুরীময়। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই ফুটবলার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে ডাক পেয়েছেন। আগামী ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ দিয়ে তাঁর অভিষেকও হতে চলেছে।
ম্যাচটি খেলার জন্য হামজা সোমবার দেশের মাটিতে পা রাখার দিন থেকেই তাঁকে ঘিরে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা তুঙ্গে। হামজাকে ঘিরে ফুটবলপ্রেমীদের উন্মাদনা কৌতূহলী করে তুলছে অন্যদেরও। কে এই হামজা, কীভাবে বাংলাদেশ দলে যুক্ত হলেন, আদতে কেমন খেলেন তিনি আর বাংলাদেশ দল তাঁর কাছ থেকে কতটুকুই বা উপকৃত হতে পারবে—এমন জিজ্ঞাসা অনেকের। সে সব কৌতূহলই মেটানো যাক এক ঝলকে।
হামজা চৌধুরীর জন্ম ও বেড়ে ওঠাহামজার জন্ম ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যের লেস্টারশায়ারে। পুরো নাম হামজা দেওয়ান চৌধুরী। তাঁর মা বাংলাদেশি, জন্মদাতা বাবা গ্রেনাডিয়ান হলেও বেড়ে উঠেছেন সৎ বাবা মোরশেদ দেওয়ান চৌধুরীর ঘরে। বাংলাদেশে তাদের বাড়ি হবিগঞ্জের বাহুবলে। জন্মের প্রথম বছরেই পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে পা পড়েছিল হামজার। এরপর এসেছেন অনেকবারই। সিলেটী ভাষা জানেন ভালোভাবেই।
ফুটবল-ক্যারিয়ারের শুরুটা যেভাবেহামজার ফুটবলে বেড়ে ওঠা লেস্টার সিটি একাডেমিতে। ৭ বছর বয়সে একাডেমিতে ভর্তি হওয়া হামজা পেশাদার ফুটবলে প্রথম ম্যাচ খেলেন বার্টন আলবিয়নের হয়ে। ২০১৬ সালে লেস্টার সিটি তাঁকে ধারে পাঠিয়েছিল লিগ ওয়ানের ক্লাবটিতে। ইংল্যান্ডের ক্লাব ফুটবল কাঠামোয় লিগ ওয়ান তৃতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা। তবে পরের বছরই লেস্টার সিটি হামজাকে দলে ফিরিয়ে আনে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে লিগ কাপে লিভারপুলের বিপক্ষে বদলি নেমে লেস্টার সিটির মূল দলে অভিষেক হয় হামজার।
প্রিমিয়ার লিগে অভিষেকইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে হামজার অভিষেক হয় ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর টটেনহামের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্লাব প্রতিযোগিতাটিতে এখন পর্যন্ত ৬ মৌসুমে মাঠে নেমেছেন হামজা। সবই লেস্টার সিটির হয়ে। এ ছাড়া চলতি ২০২৪-২৫সহ ৪ মৌসুম অংশ নিয়েছেন চ্যাম্পিয়নশিপে, ইংল্যান্ডের ফুটবলে যা দ্বিতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা। পেশাদার ক্যারিয়ারের পুরো সময় ধরে হামজা লেস্টার সিটির খেলোয়াড়। তবে আরও তিনটি দলের জার্সি গায়ে উঠেছে তাঁর। অ্যালবিয়ন (২০১৬-১৭), ওয়াটফোর্ড (২০২২-২৩) এবং বর্তমান দল শেফিল্ড ইউনাইটেডে (২০২৪-২৫) হামজার সংযুক্তি ধারের খেলোয়াড়ের হিসেবে।
হামজার ফুটবল শেখা ও ক্যারিয়ার–গড়া লেস্টার সিটিতে।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিপ্রবির ১০ শিক্ষার্থীর সনদ-ছাত্রত্ব বাতিল
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে কোটাবিরোধী আন্দোলনকালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, র্যাগিংসহ নানা অভিযোগ এনে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল এমন ১০ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার, ছাত্রত্ব ও সনদপত্র বাতিল করেছে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বহিষ্কৃতরা হলেন, বিশ্বজিৎ শীল, সাইদুজ্জামান পাপ্পু, জাহাঙ্গীর আলম অপু, মহিউদ্দিন মুন্না, হাসু দেওয়ান, আকিব মাহমুদ, আবির, অন্তু কান্তি দে, জাকির হোসেন ও রিয়াদ।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি ড. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, ১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে যাদের শিক্ষাজীবন শেষ হয়েছে, তাদের সনদপত্র বাতিল করা হয়েছে। যারা এখনো অধ্যয়নরত তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ছাত্রলীগের বিচারসহ ৯ দাবি জবি ছাত্রদলের
রাবিতে প্রভাষক হলেন জাসদ ছাত্রলীগ নেতা, ক্ষোভ
ভিসি আরো জানান, ২০২৪ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানান অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়, যা সর্বশেষ রিজেন্ট বোর্ডের সভায় অনুমোদিত হয়েছে। গত পরশু তাদের ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
বহিষ্কৃত ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আকিব মাহমুদ বলেন, ‘‘জুলাই-আগস্ট মাসে এমন কোনো ঘটনা ক্যাম্পাসে ঘটেনি, যে কারণে আমাদের বহিষ্কার করা হতে পারে। ক্যাম্পাসে কোটা প্রত্যাহার দাবিতে একদিন বৈষম্যবিরোধী ব্যানারে প্রোগ্রাম হয়েছে, সেদিনও কিছু হয়নি। আমরা সম্পূর্ণভাবে ভিসি ও ছাত্রদল-শিবিরের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। একদিন নিশ্চয়ই এই অবিচারের বিচারও হবে।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘‘কিছু শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে রিজেন্ট বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমাদের কিছু বলার নেই। শুধু জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ঘটনাই নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক ঘটনাও আছে অভিযোগে। তারই প্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’’
২০১৫ সালে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন পর্যন্ত কমিটি দেয়নি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের ব্যানারে নানান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যেত। বহিষ্কৃত ও সনদ বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকজন ৫ আগস্টের আগে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। গ্রেপ্তার হয়ে বেশ কিছু দিন কারাবরণ শেষে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে দেশ ছেড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা বহিষ্কৃত ১০ জনের একজন বিশ্বজিৎ শীল।
ঢাকা/শংকর/বকুল