ভূরাজনীতি আওয়ামী লীগকে প্রত্যাবাসন করতে চায়: মাহমুদুর রহমান
Published: 23rd, March 2025 GMT
এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরেই বলেছিলাম, সম্ভবত প্রথম আলোতে লিখেছিও। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যখন বলেন ‘ইনক্লুসিভ পলিটিকস’–এর অর্থ কী। আমি যেটা বুঝি, দেশকে স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে নিতে হবে। গণতান্ত্রিক পথ মানে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে নয়। অধ্যাপক ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে বিপ্লবী নন, আপাদমস্তক একজন গণতান্ত্রিক মানুষ। সে জন্য তিনি রাষ্ট্রপতি মো.
আওয়ামী লীগ আসলে গণতান্ত্রিক দল নয়। তারা নিজেদের রাজনীতির স্বার্থ উদ্ধারের জন্য উগ্র বলপ্রয়োগ ও বিশৃঙ্খলার দিকে যেতে পারে, গত ১৫ আগস্ট এটা বোঝা গেছে। সরকার তাদের (আওয়ামী লীগ) সভা-সমিতি করার অনুমতি দেওয়ার কথা ভেবেছিল, কিন্তু পারেনি। এখনো এই সমস্যাটা আছে আমাদের। আওয়ামী লীগকে এই সুযোগ দিলে তারা দেশে বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করবে। কিন্তু আমার ধারণা বলে, ভূরাজনীতি ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি আওয়ামী লীগকে প্রত্যাবাসিত করতে চায়। সরকার সেই চাপের সামনে নিজস্ব কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে সেনানিবাসের বৈঠকে তারই প্রতিফলন দেখা যায়। উদ্বেগের বিষয় হলো, সেনানায়কদের পক্ষ থেকে ছাত্রনেতাদের বলা হয়েছে, তোমরা তাদের (আওয়ামী লীগ) সঙ্গে নির্বাচনে সমঝোতা করো। তার মানে এই, এত দিন ধরে আমরা যে সংস্কারের মাধ্যমে একটি উন্নত নির্বাচনব্যবস্থায় যেতে চাচ্ছি, সেটা ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি এ জন্য গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
আমি মনে করি, অবিলম্বে সরকার এবং আইএসপিআরের (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর) পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বক্তব্য দেওয়া উচিত। হাজারো মানুষের রক্তের বিনিময়ে গণতন্ত্র বিনির্মাণের যে সুযোগ আমরা পেয়েছি, তা দেশি-বিদেশি কিছু স্বার্থান্বেষীর যূপকাষ্ঠের বলি হতে পারে না।
মাহমুদুর রহমান মান্না: সভাপতি, নাগরিক ঐক্য
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক র জন ত আওয় ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব