এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরেই বলেছিলাম, সম্ভবত প্রথম আলোতে লিখেছিও। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যখন বলেন ‘ইনক্লুসিভ পলিটিকস’–এর অর্থ কী। আমি যেটা বুঝি, দেশকে স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে নিতে হবে। গণতান্ত্রিক পথ মানে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে নয়। অধ্যাপক ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে বিপ্লবী নন, আপাদমস্তক একজন গণতান্ত্রিক মানুষ। সে জন্য তিনি রাষ্ট্রপতি মো.

সাহাবুদ্দিনকে রেখেছেন সাংবিধানিক প্রতীক হিসেবে। তাঁর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স এনে তিনি সরকার গঠন করেছেন। তিনি গণতান্ত্রিক পথটা অনুসরণ করতে চান। সে জন্য তিনি (মুহাম্মদ ইউনূস) ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ বা কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা তাঁর সরকারের নেই। এই প্রক্রিয়ায় তিনি যদি জিততে পারেন, সেটা বড় ব্যাপার। সেটা তিনি করছেন। কিন্তু পথটা বড় জটিল ও বন্ধুর।

আওয়ামী লীগ আসলে গণতান্ত্রিক দল নয়। তারা নিজেদের রাজনীতির স্বার্থ উদ্ধারের জন্য উগ্র বলপ্রয়োগ ও বিশৃঙ্খলার দিকে যেতে পারে, গত ১৫ আগস্ট এটা বোঝা গেছে। সরকার তাদের (আওয়ামী লীগ) সভা-সমিতি করার অনুমতি দেওয়ার কথা ভেবেছিল, কিন্তু পারেনি। এখনো এই সমস্যাটা আছে আমাদের। আওয়ামী লীগকে এই সুযোগ দিলে তারা দেশে বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করবে। কিন্তু আমার ধারণা বলে, ভূরাজনীতি ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি আওয়ামী লীগকে প্রত্যাবাসিত করতে চায়। সরকার সেই চাপের সামনে নিজস্ব কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে সেনানিবাসের বৈঠকে তারই প্রতিফলন দেখা যায়। উদ্বেগের বিষয় হলো, সেনানায়কদের পক্ষ থেকে ছাত্রনেতাদের বলা হয়েছে, তোমরা তাদের (আওয়ামী লীগ) সঙ্গে নির্বাচনে সমঝোতা করো। তার মানে এই, এত দিন ধরে আমরা যে সংস্কারের মাধ্যমে একটি উন্নত নির্বাচনব্যবস্থায় যেতে চাচ্ছি, সেটা ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি এ জন্য গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। 

আমি মনে করি, অবিলম্বে সরকার এবং আইএসপিআরের (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর) পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বক্তব্য দেওয়া উচিত। হাজারো মানুষের রক্তের বিনিময়ে গণতন্ত্র বিনির্মাণের যে সুযোগ আমরা পেয়েছি, তা দেশি-বিদেশি কিছু স্বার্থান্বেষীর যূপকাষ্ঠের বলি হতে পারে না।

মাহমুদুর রহমান মান্না: সভাপতি, নাগরিক ঐক্য

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক র জন ত আওয় ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শেষ পর্যন্ত কোনো অগণতান্ত্রিক কিংবা অপশক্তির কাছে বিনা শর্তে আত্মসমর্পণের পথে হাটতে হয় কি-না, এমন শঙ্কাও জানিয়েছেন তারেক রহমান। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে মাঠে থাকা সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে এমন বিপদের কথাও স্মরণ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।’

বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’

দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তবে তাঁর বিশ্বাস, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।

শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তাঁর দল।

তারেক রহমান বলেন, ‘দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।’

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
  • গণতন্ত্রের পথে সংকট দেখছেন তারেক
  • এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান
  • সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাই এখন জাতির দাবি
  • জনগণের বৃহত্তর ঐক্য ছাড়া এই ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার পতন হবে না: সাকি