হেল্পলাইন ১০৯ চলছে জোড়াতালি দিয়ে
Published: 23rd, March 2025 GMT
ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদ–সমাবেশ চলছে। নির্যাতন প্রতিরোধ ও দ্রুতবিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি বিপদগ্রস্ত নারীদের সহায়তাব্যবস্থা আরও জোরদার করার বিষয়টিও এখন আলোচনায়। সরকার পুলিশের ‘হটলাইন’ সেবার পাশাপাশি ‘শর্ট কোড’ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সরকারের সবচেয়ে বড় যে প্রকল্প রয়েছে, সেটির অবস্থা নাজুক। এই প্রকল্পের আওতায় জাতীয় হেল্পলাইন ‘১০৯’ চলছে জোড়াতালি দিয়ে। প্রকল্প নিয়ে অনিশ্চয়তা, জনবলসংকট ও অনিয়মিত বেতনের কারণে দুই বছর ধরে অসন্তোষ চলছে প্রকল্পের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মধ্যে।
১১ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শর্ট কোড চালুর সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বর্তমানে যে জাতীয় হেল্পলাইন ‘৩৩৩’ রয়েছে, তার সঙ্গে আরেকটি ৩ যোগ করে ‘৩৩৩৩’ ডায়াল করে নারী নির্যাতনবিষয়ক যেকোনো অভিযোগ করা যাবে। অথবা ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে সেবা অপশনে গিয়ে ৩ চাপলে পুলিশের কলসেন্টারে ফরোয়ার্ড হয়ে যাবে।
নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে একাধিক হটলাইনের পরিবর্তে ১৩ বছরের পুরোনো জাতীয় হেল্পলাইন ১০৯–কে আরও শক্তিশালী করার কথা বলছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিচালিত ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টি সেক্টরাল প্রোগ্রাম (চতুর্থ পর্যায়)’– এর ৯টি কার্যক্রমের একটি হচ্ছে হেল্পলাইন ১০৯। বাকি ৮টি কার্যক্রম হচ্ছে—১৪টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থাপিত ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি), জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬৭টি ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেল, ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরি, আটটি বিভাগীয় ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরি, ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার, আটটি আঞ্চলিক ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার, মোবাইল অ্যাপ ‘জয়’, রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের জন্য বিশেষ কার্যক্রম এবং নির্যাতন প্রতিরোধে জনসচেতনতা কার্যক্রম।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম প্রথম আলোকে বলেন, হেল্পলাইনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এর প্রতি মানুষের আস্থা তৈরি করা। মানুষ বিপদে পড়েই কল করেন। কল করে যদি কেউ উপকার না পান বা হেল্পলাইন যদি সাড়া না দেয়, তাহলে ১০০টা হেল্পলাইন করেও লাভ হবে না। হেল্পলাইনকে নারী ও শিশু প্রতিরোধে আরও কার্যকর করার ওপর জোর দেন তিনি।
জোড়াতালির প্রকল্পহেল্পলাইন ১০৯–এর অফিস রাজধানীর ইস্কাটন রোডে অবস্থিত মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরে। ২০১২ সালের শুরুতে ১০৯২১ নম্বরটি দিয়ে হেল্পলাইনটি চালু হয়। ২০১৭ সাল থেকে এটি ১০৯ নম্বরের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকে এটি টোল ফ্রি অর্থাৎ বিনা মূল্যে কল করা যায়। ২০২০ সাল পর্যন্ত ১০৯–এ কল গ্রহীতা ৪০ জনের পাশাপাশি ২০ জন আউটসোর্সিং এবং সার্ক উন্নয়ন তহবিল প্রকল্প থেকে ১৮ জন মোট ৭৮ জনবল কাজ করতেন। বর্তমানে তিন পালায় ৩১ জন কাজ করছেন। দুই বছর ধরেই বেতন নিয়ে সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে হেল্পলাইনটিকে। সর্বশেষ দুই মাস ধরে প্রকল্পের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না।
হেল্পলাইন ১০৯ যে প্রকল্পের আওতায় চলে, সেটি ২০০০ সালের জুলাই থেকে বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের সরকারি সংস্থা ড্যানিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির (ডানিডা) যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছিল। ২০২২ সালের জুনের পর ডানিডা প্রকল্প থেকে সরে যায়। তারা চলে যাওয়ায় ব্যয় কমিয়ে আনে সরকার। মন্ত্রণালয়ের পরিচালন বাজেট থেকে ব্যয় নিয়ে কোনো রকমে প্রকল্পটিকে চালু রাখা হয়েছে।
মানুষ বিপদে পড়েই কল করেন। কল করে যদি কেউ উপকার না পান বা হেল্পলাইন যদি সাড়া না দেয়, তাহলে ১০০টা হেল্পলাইন করেও লাভ হবে না। শাহীন আনাম, নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন১০৯–এর ইনচার্জ ও কর্মসূচি কর্মকর্তা রাইসুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নানা সহায়তা চেয়ে ফোন আসে। ফলে এটিকে শুধু কল গ্রহণ করার পর্যায়ে রাখলে চলে না। ভুক্তভোগীদের উদ্ধার ও সরাসরি সহায়তা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ১০৯–কে শক্তিশালী করলে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে এই হেল্পলাইনই যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারবে।
শক্তিশালী করতে হলে কী কী করা প্রয়োজন জানতে চাইলে রাইসুল ইসলাম বলেন, জনবল বাড়াতে হবে। এত কমসংখ্যক জনবল দিয়ে ২৪ ঘণ্টায় এত বিপুলসংখ্যক কল ধরা সম্ভব নয়। হেল্পলাইনে কল ড্রপের হার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। ভুক্তভোগী কোথা থেকে কল করছেন তা শনাক্তের জন্য আধুনিক সফটওয়্যার, সার্ভারের সক্ষমতা ও নিজস্ব যানবাহন দরকার। হেল্পলাইনে পুলিশ, আইনজীবী, মনোসামাজিক কাউন্সিলর, চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি দল থাকা দরকার, যাতে ভুক্তভোগী হেল্পলাইনে কল করে সরাসরি সহায়তা পেতে পারে।
হেল্পলাইন ১০৯–এর তথ্য অনুসারে, গত বছর ৯ লাখ ৩৯ হাজারের বেশি কল এসেছে। দিনে আড়াই হাজারের বেশি কল এসেছে। কলের মধ্যে ৮ লাখ ৪৫ হাজারের বেশি কল অর্থাৎ ৯০ শতাংশ কল করা ব্যক্তিদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে। ৩৩ হাজারের বেশি আইনি–সহায়তা, ১৪ হাজারের বেশি কাউন্সেলিং, প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কল পুলিশের সহায়তা চেয়ে এবং প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কলের বিপরীতে চিকিৎসা–সহায়তা দেওয়া হয়েছে; বাকিগুলো অন্যান্য কারণে। আর এ বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে কল এসেছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮টি।
আগামী জুলাই মাসের মধ্যে সংকট সামলিয়ে পরিবর্তন আসবে বলে জানিয়েছেন ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টি সেক্টরাল প্রোগ্রাম’–এর প্রকল্প পরিচালক যুগ্ম সচিব প্রকাশ কান্তি চৌধুরী। প্রথম আলোকে তিনি জানান, পুরো প্রকল্পটি এখন একটি নতুন স্থানান্তরে যাচ্ছে বলে বেতনসহ কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। জুলাই মাসে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ও প্রতিকারে সমন্বিত সেবা জোরদারকরণ এবং কুইক রেসপন্স টিমের কার্যক্রম’ শিরোনামে ৩৬০ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ের ৫৫৩ জনবলের নতুন প্রকল্প আসছে। নতুন প্রকল্পে ১০৯–এর জনবল বেড়ে ৬০ হবে। অন্যান্য কার্যক্রমের ব্যাপকতাও বাড়ছে।
প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বলেন, কুইক রেসপন্স টিম, ঘটনার নিয়মিত ফলোআপ ও ভুক্তভোগীকে সহায়তা, ভুক্তভোগীকে এক লাখ টাকা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আত্ম–কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার মতো নতুন ব্যবস্থা থাকবে। নতুন প্রকল্প এলে চলমান প্রকল্পের ২৬২ কর্মকর্তা–কর্মচারী চাকরি হারাবেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন প্রকল্পের জনবলকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাবে। পুরোনো জনবলও আউটসোর্সিং হিসেবে নিয়োগ পাবে। ধীরে ধীরে প্রকল্পের কার্যক্রমকে (জনবল ছাড়া) রাজস্ব কার্যক্রমে নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রকল প র কর মকর ত পর চ ল র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আউটসোর্সিং এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন
আধুনিক শ্রমবাজারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বিস্তৃত খাত হলো আউটসোর্সিং। এ খাতের মাধ্যমে হাজার হাজার শ্রমিক প্রতিদিন সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। অথচ এই শ্রমিকদের অধিকাংশই শোভন কাজের মৌলিক মানদণ্ড থেকে বঞ্চিত। চাকরির স্থায়িত্ব নেই; সুরক্ষার নিশ্চয়তা নেই; নেই সংগঠনের অধিকার– এমন বাস্তবতায় শ্রমিকরা এক অনিশ্চিত ও অনুৎপাদনশীল পরিবেশে দিন কাটাচ্ছেন।
এ প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি শ্রম সংস্কার কমিশন সরকারের কাছে ‘শ্রমজগতের রূপান্তর-রূপরেখা: শ্রমিক-অধিকার, সুসমন্বিত শিল্প-সম্পর্ক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি সুপরিকল্পিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনের বিভিন্ন অধ্যায়ে কাজের স্বীকৃতি, অধিকার, নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব নিয়ে যেসব সুপারিশ রাখা হয়েছে, তার মধ্যে আউটসোর্সিং খাতে নিযুক্ত শ্রমিকদের নিয়ে তৎপরতা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমানে সরকারের রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত ১২৫০টি ঠিকাদারি সংস্থা জনবল সরবরাহ করছে। এর বাইরেও অগণিত অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা শ্রম আইনের তোয়াক্কা না করে কার্যক্রম চালাচ্ছে। সরকারি, আধা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শ্রমিকরা কর্মঘণ্টা, মজুরি, ছুটি, মাতৃত্বকালীন সুবিধা, নিরাপত্তা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ভয়াবহ বৈষম্যের শিকার।
অধিকাংশ আউটসোর্সিং শ্রমিক ন্যূনতম মজুরি পান না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো সরকার নির্ধারিত মজুরি না দিয়ে বেতন থেকে অবৈধভাবে টাকা কেটে রাখে; উৎসব ভাতা দেয় না; ওভারটাইমের ভাতা দেয় না। সাম্প্রতিক ২০২৫ সালের আউটসোর্সিং নীতিমালায় উৎসব ভাতা ও বৈশাখী ভাতা অন্তর্ভুক্তিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ বলা যায়, তবে বাস্তবায়ন ও নজরদারি এখনও দুর্বল।
নীতিমালায় নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি সংক্রান্ত কোনো অর্থনৈতিক সুরক্ষা না থাকায় তারা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ফলে অন্তঃসত্ত্বা হলেই চাকরিচ্যুতির শঙ্কা থাকে। বেসরকারি খাতে এ অবস্থা আরও ভয়াবহ। নতুন নীতিমালায় ৪৫ দিনের প্রসূতিকালীন ছুটি সংযুক্ত করা হয়েছে, যা বিদ্যমান শ্রম আইনের ১১২ দিনের বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আউটসোর্সিং শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার পথ রুদ্ধ। তারা ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারেন না। করলে চাকরিচ্যুতির শিকার হন। ফলে শ্রমিকস্বার্থে কোনো সামাজিক সংলাপ বা দরকষাকষির সুযোগ থাকে না।
বিদ্যুৎ, পানি, স্বাস্থ্য, ওয়াসা, নিরাপত্তা খাতে কর্মরত হাজার হাজার আউটসোর্সিং শ্রমিক পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত। করোনা মহামারিতে তারা সম্মুখ সারিতে থেকেও কোনো রকম ক্ষতিপূরণ পাননি। শ্রম বিধিমালার ১৬(৩) অনুযায়ী মালিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার কথা থাকলেও তার বাস্তব প্রয়োগ দুর্বল।
সে জন্য শ্রম সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদনে আউটসোর্সিং শ্রমিকদের জন্য যেসব সুপারিশ করেছে, তা বাস্তবায়িত হলে এ খাতে শোভন কাজের নিশ্চয়তা আসবে। আউটসোর্সিং খাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের শোভন কাজ, মৌলিক অধিকার এবং কর্মস্থলে সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
আমি মনে করি, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, করপোরেশন ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী কাজের জন্য আউটসোর্সিং নিয়োগ বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। এ জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থায়ী জনবল কাঠামো হালনাগাদ করে আইনের ধারা ও বিধি অনুসরণপূর্বক প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা দরকার। ঠিকাদারের মাধ্যমে সার্ভিস চার্জ বা কমিশনের ভিত্তিতে শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করে সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সরাসরি নিয়োগ প্রদান নিশ্চিত করা দরকার। যারা ৫-১০ বছর বা তদূর্ধ্ব সময় ধরে কর্মরত থেকে দক্ষতা অর্জন করেছেন, তাদের শ্রম আইন অনুযায়ী অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মূল মালিককে দায়বদ্ধ করা দরকার।
শ্রমিকরা স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত কাজ করতে রাজি না হলে তাদের চাকরিচ্যুত বা ভয়ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না। এ বিষয়ে শ্রম পরিদর্শন দপ্তর কঠোর নজরদারি করবে। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা, দপ্তর ও জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আউটসোর্সিং বন্ধ করতে হবে। যেসব দপ্তর ও সেবা খাতে ইতোমধ্যে আউটসোর্সিং করা হয়েছে, বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে স্থায়ী নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের প্রত্যাশা একটাই– শোভন কাজের বাস্তবায়ন। এ খাতের বৈষম্য কমাতে হলে সরকারের নীতিগত, আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক হস্তক্ষেপ দরকার। একই সঙ্গে সমাজকেও সচেতন হতে হবে, যাতে মানুষ সস্তা সেবার পেছনে শ্রমের শোষণকে গুরুত্ব দিতে শেখে।
মো. মাছুম বিল্লাহ: আইন কর্মকর্তা, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর