বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘যারা ১০০ গাড়ি নিয়ে ইলেকশন ক্যাম্পেইন (নির্বাচনী প্রচারাভিযান) করতে যায়, তারা কী করবে, সেটা আমরা ভালো বুঝি।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানী রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

গতকাল সোমবার ঢাকা থেকে উড়োজাহাজে সৈয়দপুর যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। সৈয়দপুর থেকে তিনি সড়কপথে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ যান। দেবীগঞ্জ থেকে শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে তিনি জেলার বোদা, পঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলা সফর করেন। সারজিস আলমের বাড়ি আটোয়ারী উপজেলায়। রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব পাওয়ার পর বাড়ি ফেরার পথে সারজিস আলমের এই ‘শোডাউন’ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এ নিয়ে আজ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলও কথা বললেন।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি জনগণের সঙ্গে আছে। অতীতে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। বিএনপি অবশ্যই জয়যুক্ত হবে। জনগণ যাতে বিএনপিকে ভালো বলে—এমন কাজ করতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশে এমন সংকট তৈরি হয়েছে যে, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে পর্যন্ত আজকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে, যেটা তাঁরা কোনোমতেই মেনে নিতে পারেন না। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা আমাদের দেশকে রক্ষা করে, যারা সংকটে পাশে এসে দাঁড়ায়, তাদের কখনোই আমরা বিতর্কিত হতে দিতে পারি না।’

সংস্কার কোনো নতুন জিনিস নয় বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের অনেকগুলো বিশাল পাহাড় নিয়ে এসেছেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। কারণ, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রে যেতে হবে। গণতন্ত্র ছাড়া আর কোনো পদ্ধতি আছে, যাতে জনগণের কল্যাণ হতে পারে? আজকে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, যাতে এই প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়, বিলম্বিত হয়, অন্য কাউকে সাহায্য করা যায়, দেশে একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি করা যায়—সেই কাজগুলো শুরু হয়েছে।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে জনগণ সরকার পরিবর্তন করতে পারে। আর ভোট দেওয়ার সুযোগ না পেলে বিতাড়িত করে সরকার পরিবর্তন করে জনগণ। এরশাদ গণতন্ত্র হত্যা করে গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিলেন। ছাত্র-জনতা তাঁকে বিদায় করেছিল। একইভাবে শেখ হাসিনাকেও বিদায় করা হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, নানাভাবে অছিলা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সংস্কারের কথা বলে অছিলা সৃষ্টি করে জাতীয় নির্বাচনকে পেছানোর চেষ্টা চলছে। এর পেছনে উদ্দেশ্য আছে বলে মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সব বুঝি, কিন্তু বলতে চাই না।’

অতি দ্রুত নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘোষণা করার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলে মানুষ নির্বাচনমুখী হবে। তখন যে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র আর টিকতে পারবে না।

আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, দলের ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ও আহমদ আজম খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য মামুন আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন। সভা সঞ্চালনায় ছিলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করার আহ্বান সাবেক শাহের পুত্রের

ইরানের শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সাবেক যুবরাজ রেজা পাহলভি। ইসরায়েলের আক্রমণে যখন ইরানে প্রতিনিয়ত হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে তখন তিনি এ আহ্বান জানালেন।

রেজা পাহলভি ইরানের সাবেক রাজা মোহাম্মদ রেজা শাহের পুত্র। ১৯৭৯ সালে ইসলামী বিপ্লবীদের হাতে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন তিনি। রেজা বর্তমানে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রেজা পাহলভি দাবি করেছেন, ইরানের সাধারণ মানুষ দেশটির সরকারের বিরোধিতা করে। তারা ইসরায়েলের আক্রমণে ‘পুনরায় উজ্জীবিত’ হয়েছে। এর ফলে ইরানের সিনিয়র সামরিক নেতারা নিহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, “চূড়ান্ত সমাধান হল শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন, এবং এখন আমাদের কাছে একটি সুযোগ রয়েছে কারণ এই শাসনব্যবস্থা তার দুর্বলতম পর্যায়ে রয়েছে।”

সাবেক এই যুবরাজ বিশ্বশক্তিগুলোকে ‘অলস বসে না থাকার’ আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বিশ্বশুক্তিগুলোর উচিত নিষেধাজ্ঞা আরোপের বাইরে তারা ইরানি জনগণকে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার লড়াইয়ের প্রতি সমর্থনের অনুভূতি দেওয়ার জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত তা স্পষ্টভাবে প্রদর্শন করা উচিত।

পাহলভি দীর্ঘসময় ধরে ইরানের বিপ্লবী শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য বিদেশীদের সক্রিয়ভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি একাধিকবার ইসরায়েল সফর করেছেন।

ইরানে হামলার পর শুক্রবার রাতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক ভাষণে ইরানি জনগণের প্রতি একই ধরনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি ইরানিদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ইসলামী বিপ্লবীদের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করার এখনই উপযুক্ত সময়।

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানের শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করার আহ্বান সাবেক শাহের পুত্রের
  • আসামে বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র মামলায় পরেশ বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
  • রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে জনগণের হিস্যা কোথায়
  • ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক ষড়যন্ত্রকারীদের কফিনে শেষ পেরেক: প্রেস সচিব
  • প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল
  • ইউনূস-তারেকের বৈঠক দেশের মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা, আশার আলো
  • বর্তমান সংকটে হবস, রবীন্দ্রনাথ ও অমর্ত্য সেন যেখানে প্রাসঙ্গিক
  • ড. ইউনূস ও তারেকের বৈঠক জাতির জন্য স্বস্তির বার্তা: ১২ দলীয় জোট
  • লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি
  • চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে