যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের আসন্ন গ্রিনল্যান্ড সফরকে ‘উস্কানিমূলক’ ও ‘অত্যন্ত আগ্রাসী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন দেশটির শীর্ষ নেতারা। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের স্ত্রী ঊষা ভ্যান্সের নেতৃত্বে এ সফরে থাকবেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ ও জ্বালানি সচিব ক্রিস রাইট। তারা গ্রিনল্যান্ডে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শন করবেন এবং ঐতিহ্যবাহী একটি কুকুরের স্লেজ দৌড় প্রতিযোগিতা দেখবেন।

গ্রিনল্যান্ডের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মুটে এগেডে তাদের এ সফরকে ‘উস্কানিমূলক’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, তাঁর তত্ত্বাবধায়ক সরকার এই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কোনো বৈঠকে অংশ নেবে না। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বন্ধু ভাবতাম, কিন্তু সেই সময় শেষ’। গ্রিনল্যান্ডের গত ১১ মার্চের নির্বাচনে বিজয়ী দল ডেমোক্র্যাটসের নেতা জেনস ফ্রেডেরিক নিলসেন প্রতিনিধি দলের এ সফরকে ‘গ্রিনল্যান্ডের জনগণের প্রতি অসম্মান’ বলে অভিহিত করেছেন।

সফরে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজের উপস্থিতি নিয়েও ক্ষোভ জানিয়েছেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী। এগেডে বলেন, ‘ওয়াল্টজের উপস্থিতি ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড দখলের মিশনকে উস্কে দেবে এবং আমাদের ওপর মার্কিন চাপ আরও বাড়বে’।

দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই প্রকাশ্যে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা চান ট্রাম্প। এমনকি ডেনমার্কের অধীনে থাকা অঞ্চলটির দখল নিতে সামরিক শক্তি প্রয়োগের হুমকিও দিয়েছেন তিনি। গ্রিনল্যান্ডের অমূল্য খনিজসম্পদ এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা জোরদারে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সতর্কীকরণ ব্যবস্থার জন্য অঞ্চলটির গুরুত্ব অপরিহার্য।

বিভিন্ন প্রলোভনের পরও গ্রিনল্যান্ডের অধিকাংশ জনগণ ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড দখল পরিকল্পনার বিপক্ষে। গত জানুয়ারির এক জরিপে দেখা গেছে, সেখানকার ৮৫% মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে চান না এবং ৫০% মনে করে ট্রাম্পের এই আগ্রহ দেখানো তাদের জন্য হুমকি।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সফরের বিষয়ে অনেকটাই স্পষ্ট ডেনমার্কের অবস্থান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন বলেছেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে চাই, তবে সার্বভৌমত্বের মূলনীতি মেনে’।

হোয়াইট হাউস এ সফরকে ‘সাংস্কৃতিক’ সফর বলে দাবি করলেও গ্রিনল্যান্ডের নেতারা এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের দখল পরিকল্পনার অংশ বলেই মনে করছেন। খবর দ্য গার্ডিয়ান ও সিএনএনের।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এ সফর

এছাড়াও পড়ুন:

আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঈদের বিরতির পর ফের অবস্থান নিয়েছেন সংস্থাটির কর্মচারীরা। এর সঙ্গে ঢাকাবাসীর ব্যানারে নগরভবনে একত্রিত হয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা। সেখানে উপস্থিত হয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইশরাক হোসেন।

আজ রোববার সকাল থেকে ইশরাকের অনুসারীরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগরভবনে একত্রিত হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও। সকাল ১১ টার দিকে নগরভবনে প্রবেশ করেন ইশরাক হোসেন এবং আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।

ইশরাক হোসেন বলেন, সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করেন। তাহলে অচল অবস্থা কেটে যাবে। এই সমস্যা সুরাহা না করা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সংবিধান লংঘন করেছেন। আন্দোলন চলমান থাকবে। এখান থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। এই লড়াই থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাবো, তিনি যেন বিষয়টি সরাসরি নিজে তত্ত্বাবধান করেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাস করি। এখন আমাদের আন্দোলন যেভাবে চলছে কোনো অবস্থাতেই আমরা এখান থেকে ফিরে যেতে পারি না। আদালতের রায় জনগণের রায়কে আপনারা মেনে নিন। 

ইশরাক বলেন, আমরা যদি এখান থেকে পেছনের দিকে চলে যাই, তাহলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। সরকারকে আহ্বান জানাবো, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা নিষ্পত্তি করেন। নইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই সংকটে চলবেই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেসব দৈনন্দিন কার্যক্রম চলবে, জনগণের জন্য ভোগান্তি না হয়। এগুলো আমাদের তত্ত্বাবধানে চলমান থাকবে।

এদিকে তারা ‘শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’, ‘নগর পিতা ইশরাক ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’- এমন নানা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের স্লোগানে উত্তাল ছিল পুরো নগরভবন। তাদের আন্দোলনের ফলে বিরতির আগে ১৫ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত নগর ভবন থেকে দেওয়া সব নাগরিক সেবা বন্ধ ছিল। ঈদের ছুটির পর আজ থেকে ফের তারা আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। সে সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয়; সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত ১৫ মে থেকে আন্দোলন নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

এরপর এ রিট মামলার ওপর কয়েক দফা শুনানির পর তা খারিজ করে আদেশ দেন হাইকোর্টের বেঞ্চ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানের শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করার আহ্বান সাবেক শাহের পুত্রের
  • আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন
  • আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন
  • বাজেটের ত্রুটি সংশোধনের আহ্বান
  • দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ড. ইউনূসকে দেশের কাজে যুক্ত রাখতে চায় বিএনপি
  • জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন ইরানের প্রেসিডেন্ট
  • টিউলিপের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ড. ইউনূস
  • টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আদালতের বিষয়, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ নয়: মুহাম্মদ ইউনূস
  • সহসাই রাজনীতির কালো মেঘ কেটে যাবে: ডা. জাহিদ