অপহরণের ৪৪ ঘণ্টা পর রাজধানীর উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টর থেকে আহসান উল্লাহ নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে মরদেহ উদ্ধারের পর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। পুলিশ বলছে, আহসান উল্লাহকে হত্যার পর রাস্তার পাশে কাশবনে ফেলে রাখা হয়েছিল। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, আহসান উল্লাহ হাসান হা-মীম গ্রুপের দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়্যার লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক। তাঁর বাসা তুরাগ থানা এলাকার চন্ডালভোগে। বাসা থেকে নিজস্ব গাড়িতে আশুলিয়ায় অফিসে যাতায়াত করতেন। প্রতিদিনের মতো গত রোববার সকালে কোম্পানির কাজের উদ্দেশে বাসা থেকে গাড়ি নিয়ে বের হন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন চালক সাইফুল ইসলাম। সাইফুল আট মাস ধরে এই গাড়ি চালান। অফিসের কাজ শেষে বিকেল সাড়ে ৩টায় তিনি গাড়িতে বাসার উদ্দেশে রওনা হন। ৪টায় তাঁর স্ত্রী লুৎফুন নাহার তাঁকে ফোন করলে অপরপ্রান্ত থেকে কল কেটে দেওয়া হয়। ইফতারের আগে লুৎফুন নাহার পুনরায় ফোন করেও স্বামীকে পাননি। এর পর খোঁজ নেওয়ার জন্য চালক সাইফুলকে ফোন করেন। সাইফুল তাঁকে জানান, আহসান উল্লাহকে নিয়ে মিরপুরে অবস্থান করছেন। তাঁর কাছে ফোন দিতে বললে, চালক বলেন– ‘স্যার মিটিং করছেন।’ রাত ৮টায়ও বাসায় না ফেরায় আবার আহসান উল্লাহকে ফোন করেন লুৎফুন নাহার। তখন ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এর পর সাইফুলকে ফোন করলে তিনি জানান, আহসান উল্লাহ উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে একজনের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। তাঁকে গাড়ি নিয়ে বাসায় চলে যেতে বলেছেন। রাতে তিনি বাসায় গাড়ি রেখে চলে যান।

এক পর্যায়ে বিভিন্ন স্থানে আহসান উল্লাহর সন্ধান শুরু করেন স্বজনরা। কোথাও না পেয়ে সোমবার ভোরে তুরাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। এদিন সকালেই চালক সাইফুল চন্ডালভোগ এলাকার ভাড়া বাসা থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পালিয়ে যান। তাঁর ফোনও বন্ধ। পরে সাইফুলকে আসামি করে লুৎফুন নাহার বাদী হয়ে অপহরণের অভিযোগে মামলা করেছেন।

তুরাগ থানার ওসি রাহাত খান সমকালকে বলেন, জিডি হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান চালানো হয়। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় খবর পাওয়া যায়, ১৬ নম্বর সেক্টরে কাশবনের ভেতরে একজনের লাশ পড়ে আছে। অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের পর জানা যায়, তিনি আহসান উল্লাহ। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ সেখানে ফেলে রাখা হয়েছে। অপহরণ মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে আহসান উল্লাহকে অপহরণ এবং হত্যা করা হয়। তাঁর এটিএম কার্ড থেকে কয়েকবার ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা উঠানো হয়েছে। চালক সাইফুল এ ঘটনা ঘটাতে পারেন বলে সন্দেহ পুলিশের। ব্যক্তিগত চালক হওয়ায় সাইফুল যে কোনো উপায়ে এটিএম কার্ডের গোপন নম্বর জেনে থাকতে পারেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করলে সব রহস্য উদঘাটন হবে বলে ধারণা করছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য ফ ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া

পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির। 

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।

সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।

ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।

ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়। 

বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”

প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।

১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।

নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।

প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাবি থেকে ড. জাকির নায়েককে ডক্টরেট দেওয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের
  • বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ছয় বছর ধরে নিখোঁজের পর ফেনীতে মৃত অবস্থায় উদ্ধার, সেই আহাদ আসলে কে
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া