ঈদের ছুটিতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাড়িতে ফেরার কথা ছিল সাভার থানার এসআই ফজলুর রহমান কবিরের। ফিরলেন ঠিকই; কিন্তু লাশ হয়ে। লাশবাহী গাড়িতে করে গতকাল শুক্রবার নান্দাইল উপজেলার মেরেঙ্গা গ্রামে ফেরে তাঁর নিথর দেহ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা, স্ত্রী ও সন্তানরা। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। শুক্রবার বাদ জুমা জানাজা শেষে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
মুশুলী ইউনিয়নের মেরেঙ্গা গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির মৃত শুনু ভূঁইয়ার তিন ছেলের মধ্যে কনিষ্ঠ ফজলুর রহমান কবির (৩৯)। স্থানীয় আব্দুল জব্বার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং নান্দাইল সরকারি শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। ঢাকার তিতুমীর কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এর পর এলএলবি পাস করেন তিনি। ২০০৬ সালে পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগদান করেন। পদোন্নতি পেয়ে সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও ৬ বছর আগে উপপরিদর্শক (এসআই) হন। সর্বশেষ সাভার থানায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে সাভারে বসবাস করতেন স্ত্রী মেঘলা, ৩ বছরের মেয়ে আয়াত, ১৮ মাস বয়সী ছেলে আলভী ও মা শরবানু। বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন মেজো ভাই ইকবাল হোসেন। সুখেই কাটছিল তাদের দিন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শুক্রবার স্ত্রী-সন্তান ও মাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফেরার কথা ছিল কবিরের। কিন্তু বিধিবাম। তাঁর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে একটি বালুবাহী ট্রাক।
গত বৃহস্পতিবার সাভার থানা এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে সহায়তা করেন এসআই কবির। এর পর দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় একটি পেট্রোল পাম্পে রাখা তাঁর বাইক নিয়ে থানায় ফেরার পথে তাঁকে চাপা দেয় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বালুবাহী ট্রাক। রাজধানীর একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পরে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে সাভার থানার পাঁচজন পুলিশ একটি ফ্রিজিং গাড়িতে করে লাশ নিয়ে কবিরে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান শুক্রবার ভোরে।
শুক্রবার দুপুরে কবিরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, লোকজনের ভিড়। বাড়ির সামনেই লাশবাহী গাড়ি। ঘরের ভেতর থেকে আসছে স্বজনের কান্নার শব্দ। নিহত কবিরের বড় ভাই হারুন অর রশিদ সিভিল এভিয়েশনে কর্মরত। তাঁর ভাষ্য, সাভার থানা পুলিশ সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাটি জানিয়েছে তাদের। তিনি বলেন, ‘মা কবিরের কাছেই ছিলেন। কথা ছিল ঈদের ছুটিতে শুক্রবারে সবাই একসঙ্গে বাড়িতে আসবেন। সবাই এসেছে, তবে আমার আদরের ছোট ভাইটি লাশ হয়ে ফ্রিজিং গাড়িতে করে। এটুকু বলেই হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন তিনি।
লাশের সঙ্গে আসা সাভার থানার এএসআই নেসার উদ্দিনের ভাষ্য, কবিরকে চাপা দেওয়া ট্রাকটি পালানোর চেষ্টা করলে চালকসহ আটক করা হয়।
নান্দাইল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, সহযোগিতার জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত শ ক রব র

এছাড়াও পড়ুন:

সড়ক বিভাজকে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, কিশোর নিহত

রাজবাড়ীতে নিয়ন্ত্রণ হা‌রি‌য়ে সড়ক বিভাজকে ধাক্কা দিয়েছে একটি মোটরসাইকেল। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলটির আরোহী কিশোর নিহত ও চালক আহত হয়েছেন।

রবিবার (২ নভেম্বর) সকালে রাজবাড়ী ফয়ার সা‌র্ভিস অ‌ফি‌সের সাম‌নে রাজবাড়ী-কু‌ষ্টিয়া আঞ্চ‌লিক মহাসড়‌কে দুর্ঘটনাটি ঘটে। আহলা‌দিপুর হাইও‌য়ে থানার এসআই সাজ্জাদ হো‌সেন মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

সিলেটে বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষ, বাবা-মেয়ে নিহত

সিলেটে পাথরবাহী ট্রাক্টরচাপায় পর্যটক নিহত, আহত ৫

মারা যাওয়া কি‌শোরের নাম রিয়াদ আলী শেখ (১৪)। সে সদর উপ‌জেলার দদ‌শি ইউ‌নিয়‌নের বড়‌দোয়াল গ্রা‌মের রহমত আলী শে‌খের ছে‌লে। আহত রওনক সরকার‌কে হাসপাতা‌লে ভ‌র্তি করা হ‌য়ে‌ছে।

রাজবাড়ী ফায়ার সা‌র্ভিসের স‌ব-‌স্টেশন কর্মকর্তা মো. হা‌ফিজুর রহমান বলেন, “দ্রুত গতির মোটরসাইকেলটি আজ সকাল ৯টা ৫০ মি‌নি‌টের দি‌কে নিয়ন্ত্রণ হা‌রি‌য়ে সড়ক বিভাজকে ধাক্কা দেয়। আমরা ফায়ার সা‌র্ভিসের সদস্যরা তাৎক্ষ‌ণিক আহতদের উদ্ধার ক‌রে হাসপাতা‌লে নি‌য়ে যাই।”

স্থানীয়‌দের বরা‌তে আহলা‌দিপুর হাইও‌য়ে থানার এসআই সাজ্জাদ হো‌সেন জানান,‌ রিয়াদ ও রওনক সকা‌লে মোটরসাই‌কেল যো‌গে রাজবাড়ী বাজা‌রে যা‌চ্ছি‌লেন। ফায়ার সা‌র্ভিস অ‌ফি‌সের সাম‌নে মোটরসাই‌কেল নিয়ন্ত্রণ হা‌রি‌য়ে সড়‌কের বিভাজকে ধাক্কা দেয়। ফলে তারা আহত হন। ফায়ার সা‌র্ভিসের সদস্যরা তাদের উদ্ধার ক‌রে রাজবাড়ী হাসপাতা‌লে নি‌য়ে যান। সেখানকার চি‌কিৎসক রিয়াদ‌কে মৃত ঘোষণা ক‌রেন। 

তিনি ব‌লেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত গতির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। পু‌লিশ ঘটনাস্থল প‌রিদর্শন ক‌রে‌ছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

ঢাকা/রবিউল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোতে হঠাৎ দুদকের অভিযান
  • দেশের প্রথম মালয়েশিয়ান ডিগ্রি ক্যাম্পাস: ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ ক্যাম্পাস
  • সড়ক বিভাজকে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, কিশোর নিহত