ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের যোগী আদিত্য সরকারের বুলডোজার–কাণ্ড ‘অন্তরাত্মা কাঁপিয়ে’ দেওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিলেন। উত্তর প্রদেশে যে ছয়জনের বাড়ি রাতারাতি বুলডোজার চালিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের প্রত্যেককে ঘর তৈরির জন্য ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

বিচারপতিরা বলেছেন, এই কাজ তাঁদের বিবেকে প্রবল ধাক্কা দিয়েছে। অন্তরাত্মা কাঁপিয়ে দিয়েছে। তাঁরা বলেছেন, আশ্রয় ও বাসস্থানের অধিকার সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের অভিন্ন অঙ্গ। উন্নয়নের কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্তৃপক্ষকে সেটা জানতে হবে।

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ দুষ্কৃতকারী দমনে বুলডোজার–নীতি প্রথম চালু করেন। পরে বিজেপি–শাসিত অন্য রাজ্যেও এই নীতির যথেচ্ছ ব্যবহার হতে থাকে। দাঙ্গা বা অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ধৃত অথবা পলাতকদের ঘরবাড়ি দোষী প্রমাণিত হওয়ার আগেই বুলডোজার চালিয়ে ভেঙে দেওয়া হতে থাকে। এ নিয়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হতে থাকে রাজ্যে রাজ্যে। সুপ্রিম কোর্ট এ ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে কড়া মন্তব্যও করেন। বলেন, কেউ অবৈধভাবে কিছু নির্মাণ করলেও নিয়ম মেনে নোটিশ না দিয়ে রাতারাতি তা ভেঙে দেওয়া যায় না। যা কিছু করতে হবে নিয়মমাফিক। কিন্তু বহু রাজ্য সেই নির্দেশ না মেনে বুলডোজারের ব্যবহার করে চলেছে।

গত মঙ্গলবার যে ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়া ও এ এস ওক উত্তর প্রদেশ সরকারকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেন, সেটি ঘটেছিল ২০২৩ সালে। সরকারের চোখে গ্যাংস্টার বলে পরিচিত ধৃত আতিক আহমেদ সেই বছর খুন হন। আতিকের সম্পত্তি ভেবে রাজ্য প্রশাসন প্রয়াগরাজ জেলায় ওই ছয় বাড়ি ভেঙে দেওয়ার নোটিশ আগের রাতে পাঠিয়ে পরদিন বুলডোজার চালিয়েছিল। কর্তৃপক্ষের দাবি ছিল, অবৈধভাবে ওই বাড়িগুলো তৈরি করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা বিচারের জন্য এলাহাবাদ হাইকোর্টে গেলে সেখানে তাঁদের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তারপর তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।

রায় দেওয়ার সময় বিচারপতি ভুঁইয়া একটি দৃশ্যের অবতারণা করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই দৃশ্যে দেখা যাচ্ছে, বুলডোজার চালিয়ে ভেঙে দেওয়া বাড়ির মধ্য থেকে একটি ছোট্ট মেয়ে বুকে কয়েকটি বই আঁকড়ে বেরিয়ে আসছে। সেই ঘটনার বর্ণনা করে বিচারপতি ভুঁইয়া বলেন, ‘এই দৃশ্যগুলো আমাদের বিবেকে ঘা দেয়। এই ছবি দেখে অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে। এ জিনিস বন্ধ হওয়া দরকার।’

বিচারপতিরা বলেন, যাঁদের ঘর ভাঙা হয়েছে, তাঁদের কাউকে নিয়ম মেনে আগে থেকে নোটিশ দেওয়া হয়নি। আগের রাতে বাড়িতে নোটিশ লটকানো হয়েছিল। আবেদনকারীদের কারও নতুন করে ঘর তৈরির টাকা নেই। সে জন্য প্রত্যেককেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

অ্যাটর্নি জেনারেল ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধাচরণ করলেও দুই বিচারপতি তা আমলে নেননি। তাঁরা বলেন, ক্ষতিপূরণ দিলে প্রশাসন আইন মেনে কাজ করতে বাধ্য হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব চ রপত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বেঙ্গালুরুতে ভারতের, কলম্বোতে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ

বাছাই পর্ব পেরিয়ে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। আট দলের এই প্রতিযোগিতা হচ্ছে হাইব্রিড মডেলে। ভারতের চারটি ভেনু‌্যতে হবে সাত দলের সব ম‌্যাচ। পাকিস্তান নিজেদের ম‌্যাচগুলো খেলবে কলম্বোতে। 

৩০ সেপ্টেম্বর ভারত ও শ্রীলঙ্কার ম‌্যাচ দিয়ে শুরু হবে নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ম‌্যাচটি হবে বেঙ্গালুরুর চিন্নাসোয়ামি স্টেডিয়ামে। একই ভেনু্যতে বাংলাদেশ ও ভারত খেলবে। ২৬ অক্টোবর ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিপক্ষে কলম্বোতে খেলবে ২ অক্টোবর। 

রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে আট দলের টুর্নামেন্টে প্রথম পর্বে ম্যাচ হবে মোট ২৮টি। ভারতসহ ২০২২-২৫ আইসিসি নারী চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ ছয় দল সরাসরি জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বকাপে। অন্য পাঁচ দল হলো- অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউ জিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা। বাছাই পর্ব পেরিয়ে মূল পর্বের টিকেট পেয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।

আইসিসি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সূচি প্রকাশ করেনি।

পাকিস্তান পরের ধাপে কোয়ালিফাই করার ওপর নির্ভর করবে নক আউটের ভেনু্য। পাকিস্তান নক আউট পর্বে উঠলে শ্রীলঙ্কায় ম্যাচ হবে। নয়তো নক আউট পর্বের সব ম্যাচই হবে ভারতে। সাম্ভাব্য সূচিও চূড়ান্ত হয়েছে। ২৯ অক্টোবর গৌহাটি কিংবা কলম্বোয় প্রথম সেমিফাইনাল। পরদিন ৩০ অক্টোবর দ্বিতীয় সেমিফাইনাল বেঙ্গালুরুতে। ২ নভেম্বর বেঙ্গালুরু বা কলম্বোয় হবে ফাইনাল। 

প্রসঙ্গত, সবশেষ আইসিসির ইভেন্ট চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচও হয়েছিল হাইব্রিড মডেলে। পাকিস্তানে বসেছিল সব ম্যাচ। ভারত সফর না করায় তাদের ম্যাচ হয়েছিল দুবাইয়ে।
 

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ