Samakal:
2025-08-01@05:24:07 GMT

সম্প্রীতির উৎসবে সংঘাত কেন?

Published: 3rd, April 2025 GMT

সম্প্রীতির উৎসবে সংঘাত কেন?

মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করিয়া সমগ্র দেশে যখন সম্প্রীতির সুর বাজিয়াছে তখন হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফরিদপুরসহ কতিপয় এলাকায় সশস্ত্র সংঘাতের ঘটনাবলি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। আমরা জানি, রমজানের রোজার শেষে ‘খুশির ঈদ’ উৎসব উপলক্ষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁহার বহুল শ্রুত সংগীতে ‘দোস্ত’ ও ‘দুশমন’ ভুলিয়া গিয়া সকলের সহিত করমর্দনের তাগিদ দিয়াছেন। কিন্তু তৎপরিবর্তে একের হস্ত অপরের উপর সক্রোধে ক্ষুব্ধ ক্রিয়া করিতেছে কেন? যেই সকল তুচ্ছ ঘটনায় এই সকল সংঘাত ঘটিয়াছে, উহাও কম উদ্বেগজনক নহে।

সমকাল অনলাইনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার কতিপয় ব্যক্তি বাণিজ্য উপলক্ষে ঢাকার মিরপুরে বসবাস করেন। কয়েক দিন পূর্বে তুচ্ছ বিষয় লইয়া তথায় তাঁহাদের মধ্যে হস্তযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ঈদের ছুটিতে সকলে এলাকায় প্রত্যাবর্তন করিলে মঙ্গলবার উক্ত অঘটন লইয়া সালিশ বৈঠক চলাকালে উভয় পক্ষ লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র সহযোগে পরস্পরের উপর সমর্পিত হয়। ফলে দুই পক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হন। একই দিবসে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের মনসুরাবাদ গ্রাম ও তুজারপুর ইউনিয়নের সরইবাড়ি গ্রামে ‘আধিপত্য বিস্তার’কে কেন্দ্র করিয়া পৃথক দুই সংঘর্ষে আহত ন্যূনপক্ষে অর্ধশতাধিক মানুষ। অন্যদিকে মঙ্গলবারই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ফুটবল খেলায় বাধা প্রদানকে কেন্দ্র করিয়া দুই পক্ষের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যথায় প্রায় ২০ জন আঘাতপ্রাপ্ত হন। ৩০ মার্চ তথা চন্দ্ররজনীতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দোকানের সম্মুখে ব্যাটারিচালিত রিকশা রাখার ন্যায় তুচ্ছ বিষয় লইয়া দুই দলের মধ্যে যেই তুমুল সংঘর্ষ হইল, উহাও বিস্ময়কর।

পল্লি অঞ্চলে প্রভাবশালী পরিবার কিংবা পক্ষসমূহের আধিপত্য বিস্তারের প্রবণতা বহুল আলোচিত। সেই আধিপত্য বিস্তারে সংঘর্ষে সংশ্লিষ্ট হইবার ঘটনাও বিরল নহে। কিন্তু রাষ্ট্র ও সামাজিক কাঠামোতে ইতোমধ্যে বহু পরিবর্তন সাধিত হইলেও সামন্ত যুগের সেই সংঘাত-সংঘর্ষ হইতে বিশেষত পল্লি অঞ্চলসমূহ অদ্যাবধি বাহির হইতে পারে নাই। বরং রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ অনেকাংশেই সেই প্রভাবশালীদের স্থান দখল করিয়াছেন। তাহাদের আশীর্বাদপুষ্ট গোষ্ঠীসমূহ তাই বিবিধ অজুহাতে প্রায়শ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। উল্লিখিত ঘটনাবলি বিশ্লেষণ করিলেও হয়তো অধিকাংশ ক্ষেত্রে উহার প্রমাণ মিলিবে। কিন্তু ঈদুল ফিতরের ন্যায় সম্প্রীতির উৎসব উদযাপনকালেও যখন এহেন সংঘাত-সংঘর্ষের বিস্তার ঘটে, তখন আমাদের ললাট কুঞ্চিত না হইয়া পারে না। এহেন সংঘাত-সংঘর্ষে স্পষ্ট– ধর্মীয় বিধিবিধান তো দূরস্থান, উৎসবের মিলনাত্মক আমেজও উহাদের নিরস্ত করিতে পারিতেছে না।

আমরা জানি, ঈদ মানেই এমন এক উৎসব, যখন সকল প্রকার সামাজিক ব্যবধান-বৈষম্য অতিক্রম করিয়া মুসলমান সমাজ সমভিব্যাহারে আনন্দে মাতিয়া উঠে। এমনকি ধর্ম-বর্ণের ব্যবধানও এই সময়ে ঘুচিয়া যায়। অর্থাৎ ঈদুল ফিতর এমন এক উপলক্ষ লইয়া আসে যখন সমাজের সকল মানুষের একাট্টা হইবার অবকাশ সৃষ্টি হয়। সেই সময়ে যখন আলোচ্য সংঘর্ষের ন্যায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাবলি ঘটে তখন বুঝিতে হইবে, সমাজের মধ্যে কোনো না কোনো ব্যাধি দানা বাঁধিয়াছে। ইহার সুচিকিৎসা না হইলে এই সকল উৎপাত বৃদ্ধিই পাইবে। সুলুক সন্ধান জরুরি– কেন স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমক্ষে এহেন সংঘাত-সংঘর্ষ ঘটে। হবিগঞ্জের ঘটনায় জানা গিয়াছে, উভয় পক্ষ রীতিমতো ‘অগ্রিম ঘোষণা’ দিয়া সংঘর্ষে প্রবৃত্ত হইয়াছে। ইহার অর্থ, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে এক প্রকার অবহিত করিয়াই তাহারা এহেন দুষ্কর্মে মনোনিবেশ করিয়াছে। এক্ষণে প্রশ্ন, প্রশাসন ও পুলিশ অগ্রিম ব্যবস্থা গ্রহণ করিল না কেন?

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ স ঘ ত স ঘর ষ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা

সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে সিডনির ঐতিহাসিক টাউন হল যেন পরিণত হলো এক রঙিন উৎসবের মঞ্চে। ঝকঝকে আলোর ঝলকানি, দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জা, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা আর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে দলে দলে আসা অতিথিদের পদচারণে মনে হচ্ছিল এ যেন কোনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব বা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। অথচ এটি ছিল ২০২৬ নারী এশিয়ান কাপ ফুটবলের ড্র অনুষ্ঠান, যেখানে এশিয়ার সেরা নারী ফুটবল দলগুলোর ভাগ্য নির্ধারিত হচ্ছিল।

বিকেল সাড়ে পাঁচটায় দরজা খোলার আগেই টাউন হলের সামনে জড়ো হয়েছিলেন নানা দেশের ফুটবলপ্রেমীরা। তাঁদের হাতে নিজ নিজ দেশের পতাকা, পরনে ঐতিহ্যবাহী পোশাক। অস্ট্রেলিয়া, চীন, উত্তর কোরিয়া, জাপান, ভারত, ভিয়েতনাম, উজবেকিস্তান, ফিলিপাইন, ইরানসহ ১১টি দেশের ফুটবল দলের প্রতিনিধি, অধিনায়ক বা কোচের কেউ না কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ব ফুটবলের এই মিলনমেলায় সবাই নিজ দেশের নাম উজ্জ্বল করতে এসেছেন। কিন্তু এই আলো ঝলমলে মঞ্চে ছিলেন না বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের কোনো প্রতিনিধি।

অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্ব ফুটবলের এত বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়োজন হলো, অথচ বাংলাদেশের কোনো প্রতিনিধি নেই—এটা মেনে নেওয়া যায় না, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এখানে এসেছিলাম আমাদের মেয়েদের দেখতে, নিজেদের দেশের জার্সি গায়ে দেওয়া তারকাদের সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছিলাম।সাঈদ ফয়েজ, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাংস্কৃতিক কর্মী ও ইভেন্ট সংগঠক

অথচ এটা বাংলাদেশের জন্য ইতিহাস গড়ার বছর। এই প্রথম বাংলাদেশের মেয়েরা এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছেন। কিন্তু সেই গৌরবময় মুহূর্তে, যখন বিশ্ব ফুটবল পরিবার সিডনিতে একত্র, তখন মঞ্চে অনুপস্থিত বাংলাদেশ। না কোনো ফুটবলার, না কোচ, না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কোনো কর্মকর্তা। এই অনুপস্থিতি ছিল অত্যন্ত দৃষ্টিকটু এবং বেদনাদায়ক, কারণ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ভারতের তারকা খেলোয়াড়সহ অন্যান্য দেশের ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা। তাঁরা ট্রফির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, বিশ্ব গণমাধ্যমের সামনে নিজেদের দেশকে তুলে ধরেছেন, আর স্মৃতির ক্যামেরায় ধরে রাখছেন ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আর বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বের জায়গাটিতে খাঁ খাঁ শূন্যতা।

ভারত নারী দলের মিডফিল্ডার সংগীতা বাসফোর ড্র–তে বাংলাদেশের নাম তোলেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাইয়ের ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় উৎসব
  • শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জেলা আইনজীবী ফোরামের পদযাত্রা
  • ভৌতিক গল্প নিয়ে কানাডায় নুহাশ
  • রাবি উপাচার্যের চেয়ার টেনে পদ্মায় ফেলার আহ্বান ছাত্রদল সভাপতির
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
  • গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি
  • তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
  • সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা
  • ২৯ জুলাই-৮ আগস্ট ‘ফ্যাসিবাদী শক্তির’ নৈরাজ্যের আশঙ্কায় এসবির সতর্কতা
  • ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন