গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদ লেজিসলেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের
Published: 8th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজা-রাফাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ইসরায়েলের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ, বোমাবর্ষণ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ লেজিসলেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
আজ এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়।
বাংলাদেশ লেজিসলেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এস. এম. শাফায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত দেড় বছর ধরে চলমান এই সামরিক আগ্রাসনে প্রায় এক লাখ নিরীহ ফিলিস্তিনি নারী, শিশু, বৃদ্ধ, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মীসহ সকল পেশা ও শ্রেণির অগণিত মানুষ শহীদ হয়েছেন। ফিলিস্তিনের গাজা, রাফাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় সব বাড়িঘর বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস হয়ে গেছে, ফলে কয়েক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। মানব সভ্যতার ইতিহাসে এ এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। পরিতাপের বিষয় এই যে, মানবাধিকার, যুদ্ধ বিধি ও আন্তর্জাতিক আইনের সকল নীতিকে পদদলিত করে ইসরাইল ও তার মিত্ররা এই গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে, অথচ বিশ্ব সম্প্রদায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ লেজিসলেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন গভীর শোক ও দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে ফিলিস্তিনের শহীদদের স্মরণ করছে এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে। যারা আহত বা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, তাদের জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিতকরণসহ এই মানবসৃষ্ট সংকটের দ্রুত অবসান ঘটাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করছে।
এছাড়াও ফিলিস্তিনিদের আদি নিবাস রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য বিশ্বের সকল দেশ, জাতিসংঘ, ওআইসি, আরব লীগসহ অন্যান্য সকল মানবাধিকার সংগঠনের প্রতি জোরালো আবেদন জানানো হয় ।
দখলদার ইসরাইলিদের অব্যাহত গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সাথে অ্যাসোসিয়েশন একাত্মতা প্রকাশ করছে। সেই সাথে অবিলম্বে এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করে নৃশংসতার জন্য দায়ী যুদ্ধাপরাধীদের আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কার্যকরী ভূমিকা রাখার জন্য বিশ্ব নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানায় বাংলাদেশ লেজিসলেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)