ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী ছিলেন গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামী কণ্ঠস্বর: জোনায়েদ সাকি
Published: 11th, April 2025 GMT
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী শুধু একজন চিকিৎসক ছিলেন না, তিনি গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামী কণ্ঠস্বর ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেছেন, ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে কখনো আপস করেননি। দুঃসময়েও তিনি গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের পক্ষে দৃঢ়তার সাথে অবস্থান নিয়েছিলেন।
ডা.
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে আজ শুক্রবার গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাঁর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলটির নেতারা। এ সময় জোনায়েদ সাকি ছাড়াও দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, দীপক রায়, জুলহাসনাইন বাবুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় জোনায়েদ সাকি বলেন, স্বাস্থ্য খাতকে ব্যবসায়িক মুনাফার জায়গা না বানিয়ে জনগণের অধিকারের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী আজীবন লড়াই করেছেন।
সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া বলেন, ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন। তিনি যুদ্ধের সময় ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেছিলেন। তাঁর অবদান জাতীয় ইতিহাসে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
জুলহাসনাইন বাবু বলেন, ‘আমরা ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরীর স্বপ্ন, সংগ্রাম এবং আদর্শকে লালন করে এগিয়ে চলবো। দেশের জনগণের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক অধিকারের আন্দোলনে তাঁর দেখানো পথই আমাদের পথ।’
ছাত্র ফেডারেশনের শ্রদ্ধাডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে ছাত্র ফেডারেশন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হাতিরপুলে ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
পরে ছাত্র ফেডারেশনের নেতারা বলেছেন, বিগত ফ্যাসিস্ট শাসনামলে যখনই ফ্যাসিস্টরা তাঁদের ওপর হামলে পড়েছে, জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাঁদের পক্ষে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাংলাদেশে মানুষের মুক্তির সংগ্রামে বেঁচে থাকবেন।
এ সময় ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফের নেতৃত্বে সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক, ঢাকা মহানগর শাখার সহসভাপতি তুহিন ফরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ফর ল ল হ চ ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
জ্বালানি অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করার অঙ্গীকার করেছেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) মনোনীত যুব সংসদের সদস্যরা। তাঁরা বলেছেন, জ্বালানি নিরাপত্তা জনগণের মৌলিক অধিকার। জ্বালানি খাতে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে—এটাই সংগ্রামের অঙ্গীকার। জ্বালানি সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
ক্যাব আয়োজিত প্রথম জ্বালানি যুব সংসদীয় অধিবেশনের শেষ দিনে আজ শনিবার এমন ঘোষণা পাঠ করে শপথ নেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে শুক্রবার শুরু হওয়া দুই দিনের এ সংসদ শেষ হয় আজ।
শপথে আরও বলা হয়, জ্বালানি সংস্কার এই জ্বালানি অপরাধীদের বিচার দাবিকে জন–আন্দোলনের পর্যায়ে উন্নীত করা হবে। জ্বালানি রূপান্তরে ক্যাবের ১৩ দফা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।
যুব সংসদের শেষ অধিবেশনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষের এলাকায় লোডশেডিং একটা পরিচিত শব্দ। তারা শিক্ষিত না হলেও এটা জানে। একটা অসমতা রয়ে গেছে। আবার কৃষিতে বিদ্যুতের যে দাম, মাছ চাষ বা পোলট্রি খাতে সেই দামে দেওয়া হয় না। এটা করতে হলে ৪০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ভর্তুকি দিতে হবে সরকারকে। অর্থ মন্ত্রণালয় রাজি হয়েছে। এখন বিইআরসির অনুমোদন লাগবে।
যুব সংসদের সপ্তম অধিবেশনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে টাকা লুটপাট করাই ছিল ফ্যাসিবাদের সময় মূল কাজ। গত সরকার নিজেদের পকেটে টাকা ঢোকাতে সেদিকে নজর দিয়েছে। পৃথিবীকে বাঁচাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করতেই হবে। বিএনপির ৩১ দফায় স্পষ্ট করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার লুণ্ঠনের উদ্দেশ্যে জ্বালানি খাতে দায়মুক্তির আইন করেছে দাবি করে ওই আইন বিলোপের দাবি জানান রুহুল কবির রিজভী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) জিএস এস এম ফরহাদ বলেন, শুধু জ্বালানি নয়, সব খাতেই সমস্যা আছে। রাজনৈতিক নেতা যদি অসৎ হয়, অস্বাভাবিক উপায়ে নেতা হন, সবকিছু তাঁরা অস্বাভাবিক উপায়ে করেন।
যুব সংসদের শেষ অধিবেশনে দুই দিনের সংসদের সারাংশ তুলে ধরা হয়।এতে বলা হয়, এতে ১০০ ‘সংসদ সদস্য’–এর অংশগ্রহণে ১৯টি প্রবন্ধ উপস্থাপনা ছিল দুই দিনের যুব সংসদে। এক হাজার নিবন্ধিত শিক্ষার্থী নিয়ে গত এক বছরে নানা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এই সংসদ সদস্যদের বাছাই করা হয়।
দুই দিনের যুব সংসদে অংশ নেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মোট আটটি অধিবেশনে জ্বালানি খাতের আলাদা আলাদা বিষয়ের ওপর বেশ কিছু নিবন্ধ তুলে ধরা হয়। এতে বিদ্যুৎ খাতের ক্যাপাসিটি চার্জ বা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়ার সমালোচনা করা হয়। জ্বালানি রূপান্তরে ক্যাবের ১৩ দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানান অংশগ্রহণকারীরা।
শেষ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম। তিনি বলেন, জ্বালানি খাতে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা হলে জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত হবে।পরবর্তী যে সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারা এ আন্দোলনের দাবি মেনে নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।