নড়াইলে ছুরিকাঘাত ও সংঘর্ষে দুই প্রাণহানি, আহত ৩০
Published: 13th, April 2025 GMT
নড়াইল সদরে ছুরিকাঘাতে বাসের সুপারভাইজার ও কালিয়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার সকালে নড়াইল শহরের নতুন বাস টার্মিনালে নড়াইল এক্সপ্রেস পরিবহনের সুপারভাইজারকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। আর কালিয়ায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষের সময় হামলাকারীরা বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুট করেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। পুলিশ ২০ জনকে আটক করেছে।
জানা যায়, নড়াইল এক্সপ্রেস পরিবহনের ওই সুপারভাইজারের নাম মোশারফ মুন্সী মুসা (৪৫)। গতকাল সকাল ৬টার দিকে তিনি নতুন বাস টার্মিনালে বসে ছিলেন। এ সময় কয়েক দুর্বৃত্ত এসে তাঁকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মুসা সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের দলজিৎপুর এলাকার শামসুর রহমান মুন্সীর ছেলে। নড়াইল সদর থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম বলেন, জড়িতদের শনাক্ত করতে চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে, কালিয়ার কাঞ্চনপুরে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যার মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মিলন মোল্যার পক্ষের সানোয়ার মোল্যাকে মারধর করে আফতাব মোল্যার লোকজন। এর জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মিলন মোল্যার লোকজন আফতাব মোল্যার বাড়িতে হামলা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। আহত ফরিদ মোল্যা (৫৭) রাত ৯টার দিকে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ২০টি বাড়িঘর ও দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন দেয় প্রতিপক্ষ। রাতেই যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে উভয় পক্ষের ২০ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। কালিয়া থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাসদস্য মোতায়েন রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ র ক ঘ ত হত য স ঘর ষ ন হত ক ঞ চনপ র স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।