মহিলা সমিতিতে ‘তৌহিদী জনতার’ চিঠি, 'শেষের কবিতা' নাটকের প্রদর্শনী বাতিল
Published: 13th, April 2025 GMT
বাংলা নতুন বছরকে বরণ করতে উদ্যোগ নিয়েছিলো দেশের অন্যতম নাট্যদল প্রাঙ্গণেমোর। দলটির দর্শকনন্দিত নাটক ‘শেষের কবিতা’কে সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে, নতুন ভাবনায় রাজধানীর মহিলা সমিতি মঞ্চে উপস্থাপন করার কথা ছিলো এবারের চৈত্র-সংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখে। কিন্তু সেটি নিয়ে নতুন করে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। প্রদর্শনীর সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তৌহিদী জনতা!
১৩ এপ্রিল দলটির অন্যতম সদস্য অভিনেত্রী-নির্দেশক নূনা আফরোজের দেওয়া এক ফেসবুক বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি সবার নজরে এসেছে।
রোববার সকালে নূনা আফরোজ এই ঘটনার বিষয় উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘‘এইমাত্র মহিলা সমিতি ফোন করে জানালো তৌহিদী জনতা তাদেরকে চিঠি দিয়েছে, মহিলা সমিতিতে যেন কোনও প্রদর্শনী করতে দেয়া না হয়। আজ চৈত্রসংক্রান্তি এবং আগামীকাল পহেলা বৈশাখ আমাদের ‘শেষের কবিতা’ নাটকের প্রদর্শনী হওয়ার কথা। আমরা মহিলা সমিতিকে দুই দিনের হল ভাড়া দিয়েছি। প্রচার, প্রকাশনায় সকল খরচ করা হয়ে গেছে। আমাদের সকল প্রস্তুতি, সকল আয়োজন সম্পন্ন।আয়োজনের প্রতিটি সেক্টরে খরচ করা হয়ে গেছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছে এতদিন ধরে। আমরা মহিলা সমিতিকে বলেছি আপনারা প্রশাসনের সাহায্য নেন প্রশাসন অপারগতা প্রকাশ করলে না হয় আমরা প্রদর্শনী নাইবা করলাম। মহিলা সমিতি জানালো, কতো কিছুই তো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রশাসন তো বন্ধ করতে পারছে না। প্রশাসন কি সহযোগিতা করবেন আমাদের? সংস্কৃতি অঙ্গনের ও দেশের সচেতন মানুষেরা বলুন কী করবো? এমনই চলতে থাকবে?”
এই ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার (১৩ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে পাঁচটায় মহিলা সমিতির সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে প্রাঙ্গণেমোর নাট্যদল।
খবরটি একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন দলের প্রতিষ্ঠাতা অনন্ত হীরা। এছাড়াও অন্যান্য নাট্যজনরাও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দেশবাসী দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের মানুষ ২০ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি এবং নতুন প্রজন্মও ভোট দিতে পারেনি। তাই, তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক পথেই এগিয়ে যাবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামে জনগণের যে ত্যাগ, সে পথেই দেশ অগ্রসর হবে।
প্রধান উপদেষ্টার মতো বিএনপিও রোজার আগে বিচার ও সংস্কারের অগ্রগতি চায় কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সংস্কারের বিষয়টি ঐকমত্যের ওপর নির্ভরশীল। এ বিষয়ে ড. ইউনূস, তারেক রহমান এবং বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দ আগেই বলেছেন।
তিনি মনে করেন, ঐকমত্য হতে এক থেকে দেড় মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়।
বিচার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটি চলমান প্রক্রিয়া এবং বিচার বিভাগের ওপর নির্ভর করে। বিচার বিভাগ বিচার করবে এবং বিচারের আওতায় আনারও বিষয় আছে। যারা বিচারের আওতায় আসবে, তার জন্য আরো প্রায় ছয় মাস সময় আছে। আর যারা এর মধ্যে আসবে না, তাদের জন্য তো আগামী সরকার আছে।
সরকারের কি এখন নির্বাচনমুখী কর্মকাণ্ডের দিকে এগিয়ে যাওয়া দরকার আছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক এবং জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আর কোনো পথ নেই। এ বিষয়ে সবাই ঐকমত্য পোষণ করছেন।
জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির অভিযোগ, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকার বিশেষ সম্পর্ক করছে, বিএনপি বিষয়টি কীভাবে দেখছে? এ প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, “আমি একটা জিনিস মনে করি, আমরা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাহলে এখানে সবার মতামত নেওয়ার সুযোগ আছে। সুতরাং, সবাই তাদের মতামত দিতে পারে। আমার মনে হয়, এটাই আমাদের গণতন্ত্রের বড় পাওয়া, সবাই নিজেদের মতামত দেবে। এর মধ্যে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”
বিএনপি এত দিন ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বললেও এখন কেন ফেব্রুয়ারিতে গেল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনেক সময়। এবং এত সময়ও লাগার কোনো কারণ নেই। বিএনপি আগে ডিসেম্বরের মধ্যেই এসব সমস্যার সমাধান করে নির্বাচনের কথা বলেছে। সুতরাং, ফেব্রুয়ারি আরো দীর্ঘ সময়। তবে, যদি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হয়, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।
আমীর খসরু বলেন, “আমি আগেও বলেছি, যত বেশি ঐকমত্যের মাধ্যমে আমরা নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারব, সেটা জাতির জন্য তত ভালো। আমরা যে ঐকমত্যের মধ্যে এসেছি, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়।”
তিনি আরো বলেন, “ঐকমত্য থাকার ফলেই আমরা স্বৈরাচারকে বিদায় করতে পেরেছি। সুতরাং, আমরা চেষ্টা করব, যেখানেই সম্ভব ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব।”
তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ওয়ান-টু-ওয়ান বৈঠকে নির্বাচনে নিরপেক্ষতার বিষয়ে কোনো আলোচনা বা বার্তা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখনই নির্বাচন শুরু হবে, তখনই সরকার নিরপেক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের ধারণা হলো— একটি নিরপেক্ষ সরকার। সুতরাং, নির্বাচনে সেই নিরপেক্ষতা সরকার নিশ্চিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বৈঠকে সংস্কারের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান বলেছেন, এখানে যতটুকু ঐকমত্য হবে, সংস্কারও ততটুকুই হবে। বাকি অংশটা নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির কাছে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, সংস্কার তো চলমান প্রক্রিয়া। এটি এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না, নির্বাচনের পরেও এটি চলমান থাকবে।
ঢাকা/রায়হান/রফিক