জুলাই বিপ্লবের স্বপ্ন বাস্তবায়নে গণতন্ত্রে ফিরতে হবে: গিয়াস উদ্দিন
Published: 13th, April 2025 GMT
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেছেন, “জুলাই বিপ্লবে শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচনের মাধ্যমে অবশ্যই গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের যে সম্ভাবনার কথা বলেছেন সেটিকে নির্বাচনের রোডম্যাপ ধরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।”
রবিবার (১৩ এপ্রিল) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিয়মকালে এসব কথা বলেন তিনি।
গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, “প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন দিতে হবে। এই সংস্কারের ভিত্তি হতে পারে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী। কারণ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সংবিধানে যে মূলনীতি স্থাপন করেছেন তা নিয়ে কারো কোনো দ্বিমত নেই।”
আরো পড়ুন:
মহিষ লুট: কুষ্টিয়ায় বিএনপি নেতাসহ ১১ জন কারাগারে
দলের কেউ লুটপাট করলে ছাড় নয়: আযম খান
তিনি বলেন, “মহান স্বাধীনতার ঘোষণার অনেক কিছুই ৭২এর সংবিধানে রাখা হয়নি। চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যাসহ মানুষের বাকস্বাধীনতার কবর রচনা করা হয়েছিল। ‘৭৫ এর পট পরিবর্তন এবং সিপাহী জনতার বিপ্লবের পর শহীদ জিয়া পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্র, বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্তা ও বিশ্বাস স্থাপনসহ যে মূলনীতি স্থাপন করেন তা নিয়ে কারো কোন দ্বিমত নেই। সুতরাং, ওই মূলনীতি ধরেই সংস্কার এগিয়ে নেওয়া যেতে পারে।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “এই সরকার যেসব ভালো কাজ করছে, ক্ষমতায় আসলে বিএনপি তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। মেধা পাচারের বদনাম গুছিয়ে বর্তমান সরকার মেধাবীদের দেশে ফিরিয়ে এনে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব দিচ্ছে, তারা ভালো করছেন। বিএনপি এটি মনে রাখবে।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের পক্ষে ন্যায্য কথাই বলেছেন তিনি (মুহাম্মদ ইউনূস)। চীনে প্রধান উপদেষ্টাকে যে সম্মান দেওয়া হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের মর্যাদা বেড়েছে।”
দেশের মানুষ গণতন্ত্রে ফিরতে চায় উল্লেখ করে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, “অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনে যে সম্ভাব্য সময় বলেছেন সেটাই রোডম্যাপ। আর কারা কি বললেন, সেটা দেখার প্রয়োজন নেই। কিছু জরুরি সংস্কার শেষ করে সরকারকে নির্বাচন দিতে হবে। এটাই জনগণের প্রত্যাশা।”
হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে যারা জীবন দিয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন তাদের স্বপ্ন পূরণে বিএনপি কাজ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তাদের (শহীদ) ত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে তা অটুট থাকবে। শনিবার ঢাকায় ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে লাখো মানুষের ঢল এটাই প্রমাণ করে। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য আছে, কিন্তু দেশের প্রশ্নে, অখণ্ডতার প্রশ্নে আমরা এককাতারে আসতে পারি, তা আবারো প্রমাণিত হয়েছে। এটা আধিপত্যবাদী শক্তির জন্য একটি চূড়ান্ত বার্তা।”
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে সভায় সিএমইউজে সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, প্রেস ক্লাবের অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য মুস্তফা নঈম, গোলাম মাওলা মুরাদ, স্থায়ী সদস্য মইনুদ্দিন কাদেরী শওকত, রফিকুল ইসলাম সেলিম, সোহাগ কুমার বিশ্বাস বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ গণতন ত র বল ছ ন ব এনপ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু
কোনও মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, কোনও মহামানব কোনও দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য দেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কারণ নেই।
এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আমজনতার দলের সঙ্গে বৈঠকে করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। আমজনতার দলের আহ্বায়ক কর্নেল অব. মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।
বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, মানুষ বলতে কারা? আমার বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি দল, পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের জন্য।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য যে কথাগুলো বলা হয়, সংস্কারের ব্যাপারে যেখানে ঐকমত্য হবে- সেই সংস্কারগুলো দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে ভোটের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তো জনগণ বলতে কারা?
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন জনগণ বলতে যদি কোনও একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী- যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে! এটা তো কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেটা যে সরকারই হোক।