বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেছেন, ‍“জুলাই বিপ্লবে শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচনের মাধ্যমে অবশ্যই গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের যে সম্ভাবনার কথা বলেছেন সেটিকে নির্বাচনের রোডম্যাপ ধরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।”

রবিবার (১৩ এপ্রিল) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিয়মকালে এসব কথা বলেন তিনি।

গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, “প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন দিতে হবে। এই সংস্কারের ভিত্তি হতে পারে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী। কারণ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সংবিধানে যে মূলনীতি স্থাপন করেছেন তা নিয়ে কারো কোনো দ্বিমত নেই।”

আরো পড়ুন:

মহিষ লুট: কুষ্টিয়ায় বিএনপি নেতাসহ ১১ জন কারাগারে

দলের কেউ লুটপাট করলে ছাড় নয়: আযম খান

তিনি বলেন, “মহান স্বাধীনতার ঘোষণার অনেক কিছুই ৭২এর সংবিধানে রাখা হয়নি। চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যাসহ মানুষের বাকস্বাধীনতার কবর রচনা করা হয়েছিল। ‘৭৫ এর পট পরিবর্তন এবং সিপাহী জনতার বিপ্লবের পর শহীদ জিয়া পঞ্চম সংশোধনীর  মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্র, বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্তা ও বিশ্বাস স্থাপনসহ যে মূলনীতি স্থাপন করেন তা নিয়ে কারো কোন দ্বিমত নেই। সুতরাং, ওই মূলনীতি ধরেই সংস্কার এগিয়ে নেওয়া যেতে পারে।”

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “এই সরকার যেসব ভালো কাজ করছে, ক্ষমতায় আসলে বিএনপি তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। মেধা পাচারের বদনাম গুছিয়ে বর্তমান সরকার মেধাবীদের দেশে ফিরিয়ে এনে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব দিচ্ছে, তারা ভালো করছেন। বিএনপি এটি মনে রাখবে।”

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের পক্ষে ন্যায্য কথাই বলেছেন তিনি (মুহাম্মদ ইউনূস)। চীনে প্রধান উপদেষ্টাকে যে সম্মান দেওয়া হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের মর্যাদা বেড়েছে।” 

দেশের মানুষ গণতন্ত্রে ফিরতে চায় উল্লেখ করে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, “অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনে যে সম্ভাব্য সময় বলেছেন সেটাই রোডম্যাপ। আর কারা কি বললেন, সেটা দেখার প্রয়োজন নেই। কিছু জরুরি সংস্কার শেষ করে সরকারকে নির্বাচন দিতে হবে। এটাই জনগণের প্রত্যাশা।”

হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে যারা জীবন দিয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন তাদের স্বপ্ন পূরণে বিএনপি কাজ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তাদের (শহীদ) ত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে তা অটুট থাকবে। শনিবার ঢাকায় ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে লাখো মানুষের ঢল এটাই প্রমাণ করে। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য আছে, কিন্তু দেশের প্রশ্নে, অখণ্ডতার প্রশ্নে আমরা এককাতারে আসতে পারি, তা আবারো প্রমাণিত হয়েছে। এটা আধিপত্যবাদী শক্তির জন্য একটি চূড়ান্ত বার্তা।”

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে সভায় সিএমইউজে সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, প্রেস ক্লাবের অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য মুস্তফা নঈম, গোলাম মাওলা মুরাদ, স্থায়ী সদস্য মইনুদ্দিন কাদেরী শওকত, রফিকুল ইসলাম সেলিম, সোহাগ কুমার বিশ্বাস বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ গণতন ত র বল ছ ন ব এনপ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ