জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘বিগত ১৬ বছরে যে বাংলা নববর্ষগুলো ছিল, এই নববর্ষে শুধু দলীয় প্রভাব নয়; বরং বিদেশি রাষ্ট্রেরও প্রভাব আমরা দেখেছি। তাদের মতো করে দলের যেমন ছিল, বিদেশি রাষ্ট্রের এজেন্সির ওই রকম করে কনসেপ্ট তৈরি করে এই নববর্ষগুলোর বিভিন্ন ধরনের সেগমেন্ট তৈরি করা হতো, বিভিন্ন ধরনের অপসংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া হতো।’

আজ রোববার দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের শিংরোড নায়েকপাড়া এলাকায় আন্দোলনে নিহত সাগর রহমানের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথাগুলো বলেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন ঢাকার মেরুল বাড্ডা থানার সামনে মিছিলে অংশ নিয়ে গুলিতে মারা যান সাগর রহমান। আজ তাঁর কবর জিয়ারত শেষে সাগরের মা–বাবাসহ স্বজনদের খোঁজখবর নেন তিনি।

সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি, এই যে ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষ থেকে বা ক্ষমতার জায়গা থেকে কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া, এটি কখনোই সাসটেইনেবল নয়। এটি কখনো আমরা প্রত্যাশাও করি না। আমরা মনে করি যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে ততটুকু স্পেস বাংলাদেশের মানুষকে অলরেডি দিয়েছে যে আমরা আমাদের জায়গা থেকে যা ধারণ করি, আমরা সেটাই প্রকাশ করি এবং করতে পারি।’

এনসিপির এই নেতা আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে আগামীতেও যারাই এই বাংলাদেশের সরকারের দায়িত্বে থাকুক না কেন, তারা যেন ক্ষমতাকে ব্যবহার করে কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়ার এই সাহসটুকু না করে এবং তাদের জায়গা থেকে বরং আমাদের প্রকৃত যে সংস্কৃতি, সেটাকে ধারণ করার জন্য তাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা যেন তারা রাখে।’

সাগরের কবর জিয়ারত নিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের অভ্যুত্থানে সবচেয়ে বড় দায়বদ্ধতা যে আমাদের যারা শহীদ পরিবার আছে কিংবা আমাদের যারা আহত যোদ্ধা আছেন, তাঁদের পরিবারের সঙ্গে থাকা। শহীদ পরিবারটা যেন আমাদের পরিবার হয়ে ওঠে। এটা সত্য যে এক-দেড় হাজার পরিবারের কাছে আমরা চাইলেই যেতে পারি না। কিন্তু আমরা যখন যে এলাকায় যাই, তখন ওই এলাকায় যে শহীদ পরিবার থাকে, তাদের বাসায় যাওয়ার এবং খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করি। আমাদের জায়গা থেকে যতটুকু করা সম্ভব, সেটা আমরা চেষ্টা করি।’

গাজায় গণহত্যার বিষয়ে সারজিস বলেন, ‘আমরা পুরো বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশ্বকে একটি বার্তাই দিতে চাই, ফিলিস্তিনের গাজায় মজলুম মুসলিম ভাইদের সঙ্গে যেটা হচ্ছে, এটা একটা গণহত্যা। এই গণহত্যার যে রক্ত, এই রক্তের দাগ নেতানিয়াহুর হাতে আছে, এই রক্তের দাগ নেতানিয়াহুকে যারা বিভিন্নভাবে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে, এটা দেশ হতে পারে, ব্যক্তি হতে পারে, তাঁদের প্রত্যেকের গায়ে আছে। আমরা বাংলাদেশের একজন মানুষ হিসেবে পুরো পৃথিবীর কাছে এই আহ্বান জানাতে চাই যে আপনারা আপনাদের জায়গা থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় যে ভাইয়েরা আছেন, তাঁদের পক্ষে কথা বলা শুরু করুন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নববর ষ পর ব র আম দ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে

সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।

শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।

এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।

পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।

শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাহরুখ খান: গণহত্যার সময় বিলিয়নিয়ার হওয়ার অর্থ কী
  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা