বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কার এবং অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা দিয়েছে। প্রথম দফায় জিঘাংসার রাজনীতি পরিহার করে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি ও সমাজ গঠনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে। অন্যান্য দফায় অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা, দৃঢ়চিত্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাকে ভারসাম্যপূর্ণ করা, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠন, দলীয়করণ রোধ করা এবং সরকার পরিচালনায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও বিশ্বাসযোগ্যতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে। তা ছাড়া বিচার বিভাগকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কমিশন গঠন ও বিচারপতি নিয়োগের আইন প্রণয়নসহ জাতীয় জীবনের নানা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে বিদ্যমান অসংগতি দূরীকরণের লক্ষ্যে অভিপ্রায় সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যাকে একটি উদার, মধ্যপন্থি ও গণতান্ত্রিক দলের কর্মসূচি বিবেচনা করা যায় এবং তা অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত কমিশনগুলোর সুপারিশের সঙ্গে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঐক্যের জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছে বলে অনুমিত হয়। 


অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে ব্যর্থতার কারণে যখন শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলো, তেমন বাস্তবতায় আমার মনে হয়, একই ভুল আর বিএনপি করতে চায় না; যা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণও প্রত্যাশা করে না। জনমতকে অবজ্ঞা করে বৃহত্তম বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা করলে সুদীর্ঘকাল ক্ষমতা টেকসই হয় না। স্বল্পকালের বিষয় হলেও তা দীর্ঘকালের নয়। আবার আমাদের ভূরাজনীতি এবং ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ দলটির প্রতি প্রতিবেশী বৃহৎ রাষ্ট্রের সমর্থন ও দুর্বলতাকে অগ্রাহ্য করলে চলে না। সেটা হতে পারে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের অবিবেচনা ও অবিচক্ষণতা।  


আজ ড.

আকবর আলি খানের কথা খুব বেশি মনে পড়ে। ‘দুটি বড় দল কেউ কাউকে নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না, এক দলকে বাইরে রেখে  দিয়ে আরেক দল শাসন দণ্ড পরিচালনা করতে সক্ষম হবে না।’ তার বক্তব্যে ছিল অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের আকুতি। আজ তাঁর কথা কাঙালের কথার মতো বাসি হলেও ফলেছে। আবার যদি ভুল করেছে বলেই আরেকটি বড় দলকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা চলে, তাকে রাজনীতির বলয়ের বাইরে রাখার অপচেষ্টা হয় স্বল্পকালে, তার ফলাফল সুখকর হলেও দীর্ঘকালের তার ফলাফল অশুভ হতে পারে।   তাতে করে মনে হয় আবারও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি ও সমাজ গঠনের পথ রুদ্ধ হয়। সেই নির্জলা সত্য ও বাস্তবতাকে উপলব্ধি করেই হয়তো বিএনপি দলটির ওই সুস্পষ্ট অবস্থান। তবে ক্ষমতাচ্যুত সরকার ও তার দুর্নীতিবাজ সহযোগীদের বিচার হোক, বিচারের কারণে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য হতে পারে– তা নিয়ে কোনো কথা নেই। 

ছাত্র-জনতার উপলব্ধি আমাদের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ত্রুটিপূর্ণ, তার মধ্য দিয়ে শীর্ষ নেতা-নেত্রী হয়ে ওঠেন স্বৈরাচারী। তাই বন্দোবস্ত পরিবর্তনের সংস্কার জরুরি। সে কারণেও আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া অনিবার্য। তবে বিচারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হতে পারে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদের মালিকানা। তাদের যথার্থ বিচার হোক, আবার অচোরা যেন বন্দি না হয়, সেদিকে নজর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষমতাচ্যুত দলটির নিরপরাধ নেতাকর্মীর রাজনীতি করার পথ উন্মুক্ত হলে জাতিকে ঐক্যের বন্ধনে বাঁধা সহজ হতে পারে। 


সংস্কার কমিশনগুলোর রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের উপলব্ধি তার অধিকাংশের সঙ্গেই রয়েছে ৩১ দফার সংগতি। আমাদের রাজনীতির অঙ্গনে ছাত্র-জনতার নতুন দলের আবির্ভাব, জামায়াতে ইসলামী ও সরকার এই তিন শক্তির প্রাবল্য দেখে আমার মনের জানালায় কবির অমিয় বাণী উঁকি দেয়, ‘ত্রয়ী শক্তি ত্রিস্বরূপে প্রপঞ্চে প্রকট’। ওই তিন শক্তির প্রাবল্যকে গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচন ও সংস্কার প্রশ্নে তাদের সঙ্গে বিএনপি যদি সুকৌশলে সমঝোতা করতে পারে, ধৈর্যের সঙ্গে ঐক্য গড়তে পারে তাহলে তার অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের পথ মসৃণ হতে পারে। সেটা করতে পারলে মধ্যপন্থি উদার গণতান্ত্রিক দল হিসেবে তার ঘরে সোনালি ফসল তোলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হতে পারে। তবে দলটির বিজয় অর্জনের পথের কাঁটা হলো, তার চাঁদাবাজ দখলদার নেতাকর্মী। তাদের শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতাই বয়ে আনতে পারে সফলতা। সে ক্ষেত্রে ব্যর্থতা হতে পারে চালকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত হওয়া। তাই মনে হয়, দলটির সামনে রয়েছে অমিত সম্ভাবনা আবার অগ্নিপরীক্ষা।

ড. মো. মোস্তাফিজার রহমান: সাবেক অধ্যক্ষ, নওগাঁ সরকারি কলেজ

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ র জন ত র র জন ত সরক র দলট র ক ষমত ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় কোটি শ্রমিক রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার বাইরে

দেশের মোট শ্রমিকের ৮৪ দশমিক ১ শতাংশের কোনো দায়দায়িত্ব নেয় না রাষ্ট্র । শ্রমিক হিসেবে তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই। কোনো রকম আইনি ও সামাজিক সুরক্ষা নেই। কর্মস্থলের পরিচয়পত্র নেই। কাজের ক্ষেত্রে অন্যায়ের শিকার হলে তাদের শ্রম আদালতে মামলা করার সুযোগও নেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী,  অপ্রাতিষ্ঠানিক এই শ্রমিকের সংখ্যা ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার।

বিশালসংখ্যক শ্রমিকের প্রতি রাষ্ট্রের এ রকম অবহেলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সরকারের গঠিত শ্রম সংস্কার কমিশন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত ২১ এপ্রিল পেশ করা কমিশনের ২৫ সুপারিশের মধ্যে প্রথমে প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের সব শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা ও স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। 

দেশের শ্রম খাতের দুর্বলতা চিহ্নিত করা এবং শ্রমিকের অধিকার ও জীবনমান উন্নয়নে সুপারিশ প্রণয়নের উদ্দেশ্যে গঠিত ১৯ সদস্যের কমিশনপ্রধান ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। জানতে চাইলে গতকাল তিনি সমকালকে বলেন, ‘আমরা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছি। শ্রম আইনে অন্য সব শ্রমিকের মতো একই অধিকার এবং সুযোগসুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি ক্ষেত্রবিশেষে তাদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছি। সামাজিক সুরক্ষার আওতায় তাদের জন্য ভাতার কথা বলেছি। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকের জন্য এ সুবিধার সুপারিশ করা হয়নি। কারণ, তারা চাকরি শেষে কমবেশি কিছু আর্থিক সুবিধা পান।’ 

কমিশনের এ সব সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে নিয়মিত নজরদারি রাখার কথাও জানান তিনি। 

এ বাস্তবতায় আজ বৃহস্পতিবার মহান শ্রমিক দিবস পালন করা হচ্ছে। আজ সরকারি ছুটি থাকবে। এ দিনও কাজ করতে হবে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দিবসটি পালনের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’। 

বিবিএসের গত নভেম্বরে প্রকাশিত সর্বশেষ জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যা ১২ কোটি ৬ লাখ ২০ হাজার। তাদের মধ্যে শ্রমশক্তি ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার। মোট শ্রমশক্তির ৮৪ দশমিক ১ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। 

দেশে শ্রমশক্তি বলতে ১৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে যারা কর্মে নিয়োজিত এবং বেকার জনগোষ্ঠীর সমষ্টিকে বোঝায়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা–আইএলওর মানদণ্ড অনুযায়ী, যারা সাত দিনে কমপক্ষে ১ ঘণ্টার বেতন, মজুরি বা মুনাফার বিনিময় অথবা পরিবারের নিজস্ব ভোগের জন্য পণ্য উৎপাদনের কাজ করেছেন জরিপে তাদের কর্মে নিয়োজিত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আবার যারা কর্মক্ষম কিন্তু কোনো কাজে নিয়োজিত নন, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ খুঁজে বেড়ান এবং ওই সময়ে কাজের সুযোগ পেলে সে কাজ করতে প্রস্তুত তাদের বেকার বলা হয়েছে। এ হিসাবে দেশে বেকারের সংখ্যা ২৪ লাখ ৬০ হাজার। 

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক কারা 

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা–আইএলওর আন্তর্জাতিক শ্রম পরিসংখ্যানবিদের সম্মেলন ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব লেবার স্ট্যাটিসিয়ান্স–আইসিএলসির সংজ্ঞা অনুযায়ী, বেসরকারি অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি বা খানামালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, যেগুলোর আইনি সত্তা নেই, পরিপূর্ণ হিসাব নেই, উৎপাদনের হিসাব দিতে হয় না এবং বেসরকারি ও অনিবন্ধিত–এরকম খাতকে অনানুষ্ঠানিক খাত এবং এ খাতের শ্রমিকদের অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক বলা হয়। 

মূলত কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক বেশি। কৃষিতে ৯৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক। শিল্প খাতে ৮২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের বড় অংশই গ্রামে থাকেন। 

বিবিএস বলছে, গ্রামের মোট শ্রমিকের ৮৭ দশমিক ৪ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। সংখ্যায় তারা ৪ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার। শহরের শ্রমিকদের এ হার কিছুটা কম। ৭৪ দশমিক ৫ শতাংশ। সংখ্যায় এক কোটি ৩৫ লাখ ৭০ হাজার। নারী শ্রমিকদের ৯৫ দশমিক ৭ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করে থাকেন।

শ্রম আইনে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকেও অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ কমিশনের 

শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক, কৃষি, গৃহশ্রমিক, অভিবাসী, স্বনিয়োজিত শ্রমিকসহ সব শ্রমিকের জন্য শ্রম আইনে সুরক্ষা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে শ্রমিকদের কাজের স্বীকৃতি, পরিচয়পত্র, নিরবচ্ছিন্ন কাজ এবং আয়ের নিশ্চয়তা, মর্যাদাকর শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়। এতে আরও বলা হয়, এসব শ্রমিকের জন্য রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা হিসেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সব অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় থেকে প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলাদা অফিস অথবা ডেস্ক স্থাপন করতে হবে। শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা এবং কল্যাণে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের সব ধরনের তথ্য নিয়ে তথ্যভান্ডার করা, পরিচয়পত্র দেওয়া এবং অবসর ভাতা চালুসহ বেশ কিছু সুপারিশ করে কমিশন। 

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের প্রবীণ শ্রমিকদের জন্য অসরকালীন ভাতার সুপারিশ 

রাষ্ট্রের নিম্নতম মজুরি বোর্ডের আওতায় বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে থাকেন প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা। অবসরের পরও কিছু সুবিধা পান তারা। তবে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা সারা জীবন খাটুনির পর প্রবীণ বয়সে আরও কষ্টে থাকেন। কারণ সামান্যতম কোনো সুবিধা পান না তারা। এ বিবেচনা থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের জন্য অসরকালীন ভাতা বা তাদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনার সুপারিশ করেছে কমিশন। তাদের অবসরের বয়সসীমা ৬০ বছর নির্ধারণের কথা বলা হয় এতে। দরিদ্র বেকার শ্রমিকদের বয়স্কভাতা এবং তাদের প্রতিদিনের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও অন্যান্য চাহিদা বিবেচনায় বয়স্কভাতার পরিমাণ নির্ধারণের কথা বলেছে কমিশন। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের পেশা ও খাত অনুযায়ী সংগঠিত হওয়া, প্রতিনিধিত্ব করা ও নিয়োগকারী, তাদের সমিতি করার সুযোগ দেওয়ার কথাও বলা হয় কমিশনের সুপারিশে। 

প্রাতিষ্ঠানিকের ৫৫ খাতেও ন্যূনতম মজুরি নেই 

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের চেয়ে কিছুটা ভালো হলেও প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের অবস্থাও খুব বেশি ভালো নয়। এখনও অনেক শিল্প খাতকে ন্যূনতম মজুরি কাঠামোর আওতায় আনা হয়নি। মালিকপক্ষ যা দেয়, তা মেনে নিয়ে কাজ করেন শ্রমিকরা। এরকম অন্তত ৫৫টি খাতে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়নি। 

শ্রম মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশের স্বীকৃত শিল্প আছে ১০২টি। 

টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পের মজুরি বোর্ড হয় সর্বশেষ ১৯৮৩ সালে। অর্থাৎ, গত তিন যুগ ধরে একই মজুরি চলছে এ খাতে। জানতে চাইলে সরকারের নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা ইসলাম গতকাল সমকালকে বলেন, ন্যূনতম মজুরি কাঠামোতে বর্তমানে ৪৭টি শিল্প রয়েছে। নতুন করে দুটি শিল্পকে ন্যূনতম মজুরির আওতায় আনা হবে। আরও ২০ শিল্পকে এর আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি জানান, পেট্রোল পাম্পের শ্রমিকদের মজুরি পুনঃনির্ধারণে বোর্ড গঠন হয়েছে। মালিক পক্ষ এ-সংক্রান্ত সভায় আসছে না। এ অবস্থায় করণীয় জানতে শ্রম মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চেয়েছে মজুরি বোর্ড। 

টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পে তিন যুগ ধরে একই মজুরির বিষয়ে জানতে চাইলে রাইসা ইসলাম বলেন, টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পের আর অস্তিত্ব নেই। খাতটি হয়তো বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ