নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল চায় হেফাজতে ইসলাম
Published: 20th, April 2025 GMT
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল চেয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আজ রোববার বেলা দেড়টার দিকে হেফাজতে ইসলামের কার্যনির্বাহী কমিটির বিশেষ সভা শেষে সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক এ কথা জানান।
এর আগে সকাল ১০টায় রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে এ সভা শুরু হয়।
সভা শেষে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাঁচটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্যাসিবাদী আমলে শাপলা চত্বরে গণহত্যা, মোদি বিরোধী আন্দোলনে হত্যাসহ বিভিন্ন সময় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার এবং হেফাজত ইসলামের নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় কিছু বিতর্কিত বিষয় স্থান পেয়েছে বলে মনে করে হেফাজতে ইসলাম। বিশেষ করে বহুত্ববাদের প্রস্তাবনাকে হেফাজত প্রত্যাখ্যান করছে। এই প্রস্তাবনা বাতিল করে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় আপত্তিকরভাবে ধর্মীয় বিধিবিধান, বিশেষ করে ইসলামী উত্তরাধিকার ও পারিবারিক আইনকে নারীর প্রতি বৈষম্যের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে; এই প্রস্তাবনা বাতিলের পাশাপাশি পুরো কমিশন বাতিল করতে হবে।
সেই সঙ্গে ভারতে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন, বিশেষ করে দেশটির পার্লামেন্টে সম্প্রতি যে ওয়াকফ আইন সংশোধনী পাস হয়েছে, সেটি বাতিল করতে ভারত সরকারের কাছে দাবি জানানোর জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
আরও পড়ুননারীর জন্য ৩০০ সংরক্ষিত আসন, বিয়ে-তালাক, উত্তরাধিকারে সমান অধিকার দেওয়ার সুপারিশ ১৬ ঘণ্টা আগেএ ছাড়া ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদ এবং সেই গণহত্যা বন্ধে বিশ্বনেতৃত্বকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান জানান, তাঁদের বিশেষ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আগামী ৩ মে শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত এ সমাবেশ হবে। সেখানে বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করা হবে।
এ বিষয়ে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, মহাসমাবেশ সফল করতে আগামী মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী সপ্তাহের সোমবার (২৮ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশব্যাপী গণসংযোগ করা হবে।
আরও পড়ুননারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের তাগিদ ১৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ