পঞ্চগড়ে নবনির্মিত ২৫০ শয্যার হাসপাতালে প্রয়োজনীয় লোকবলসহ এক মাসের মধ্যে চালুসহ চীনের অর্থায়নে এক হাজার শয্যার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার দাবিতে সাত ঘণ্টা অনশন করেছেন রাজনীতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের এক পাশে ‘ভুক্তভোগী পঞ্চগড়বাসী’ ব্যানারে তাঁরা আমরণ অনশনে বসেন। কেউ কেউ কাফনের কাপড় পরেও অনশনে অংশ নেন। পরে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে পঞ্চগড় বিষ্ণু প্রসাদ (বিপি) সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মজিরুল ইসলাম পানি পান করিয়ে তাঁদের অনশন ভাঙান।

এ ছাড়া বেলা ১১টার দিকে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে চীনের অর্থায়নে প্রস্তাবিত এক হাজার শয্যার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার দাবিতে প্রতীকী অনশন করেছে জেলা রিকশা ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নসহ কয়েকটি সংগঠন।

অনশনে বসা ব্যক্তিরা হলেন পরিবেশ বন্ধু পঞ্চগড়ের সভাপতি তানবীরুল বারী, গণ অধিকার পরিষদের জেলা শাখার আহ্বায়ক মাহফুজার রহমান, গণসংহতি আন্দোলনের জেলার আহ্বায়ক সাজেদুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তবিরুল ইসলাম, সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরামের প্রতিনিধি ফাতেমা তুজ জোহরা ও জান্নাতুল শিলু। তাঁদের মধ্যে মাহফুজার রহমান কাফনের কাপড় পরে অনশনে অংশ নেন। বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়ায় গণসংহতি আন্দোলনের নেতা সাজেদুর রহমানকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ছাড়া অনশনস্থলে তানবীরুল বারী ও জান্নাতুন শিলুর শরীরে স্যালাইন দেওয়া হয়।

অনশনে যোগ দেওয়া তানবীরুল বারী বলেন, ‘আমরা পঞ্চগড়ের মানুষ সব সময়ই অবহেলিত। পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে গুরুতর আহত একজন রোগী নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুর বা দিনাজপুরে স্থানান্তর করা হয়। এতে পথেই অনেকের মৃত্যু হয়। আমরা আর কারও পথে মৃত্যু চাই না। এ জন্য জেলায় একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল দ্রুত প্রয়োজন। আমরা জেনেছি চীনের অর্থায়নে বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল করার জন্য সরকারিভাবে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় জমি খোঁজা হচ্ছে। আমরা মনে করি পঞ্চগড়ের মানুষ এই মেডিকেল কলেজের সঠিক দাবিদার।’

তানবীরুল বারী আরও বলেন, ‘পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের জন্য ভবন নির্মাণ করা হলেও চালু হচ্ছে না। আমরা প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে পঞ্চগড়ের মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য মেডিকেল কলেজ স্থাপনের ওয়াদা বা ঘোষণা না পাওয়া পর্যন্ত অনশনে বসেছি। পরে আমাদের অসুস্থতার কথা শুনে আমাদের প্রিয় শিক্ষক মজিরুল ইসলাম এসে পানি পান করিয়ে আমাদের অনশন ভাঙান।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া প্রার্থীরা গেজেটভুক্ত করার দাবিতে অনশনে

৪৩তম বিসিএসে দ্বিতীয় গেজেট থেকে বাদ পড়া কয়েকজন প্রার্থী গেজেটভুক্ত করা ও ভেরিফিকেশন নীতি প্রণয়নের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ দাবিতে অনশন শুরু করেন তাঁরা।

অনশনে বসা প্রার্থীরা বলেন, ‘গেজেটের প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলবে। কয়েকবার সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেও সরকারের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাইনি। তাই এখন আমরণ অনশন শুরু করেছি।’

আরও পড়ুনবেসরকারি ব্যাংক নেবে অ্যাসিস্ট্যান্ট রিলেশনশিপ অফিসার, বেতন ৩০,০০০ টাকা২৭ এপ্রিল ২০২৫

আমরণ অনশনে বসা শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়া মো. ফয়সাল চোকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘৪৩তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত গেজেট বঞ্চিত ২২৭ প্রার্থীর গেজেট চেয়ে আমরণ অনশনে বসেছি। যত দিন না গেজেট হয়, তত দিন এ অনশন চলবে। ৪৩তম বিসিএসে গেজেটে বাদ পড়া নিরপরাধ সবার গেজেট প্রকাশ করতে হবে। পরবর্তী বিসিএসগুলোয় ভেরিফিকেশনের নামে হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং ভেরিফিকেশন নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।’

আমরণ অনশনে বসা প্রার্থীরা হলেন, শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়া মো. ফয়সাল চোকদার, মো. মতিউর রহমান, এম এ হান্নান সরকার, দেবাশীষ ঘোষ ও সমরজিৎ চক্রবর্তী। আগামীকাল বুধবার তাঁদের সঙ্গে বাদ পড়া আরও কয়েকজন প্রার্থী যোগ দেবেন বলে জানান তাঁরা।

দীর্ঘ পাঁচ বছরের নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষে ৪৩তম বিসিএসের সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা গেজেটভুক্ত হয়ে গত ১৫ জানুয়ারি চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু গেজেট থেকে বাদ পড়ায় ২২৭ প্রার্থী চাকরিতে যোগ দিতে পারেননি। এরপর গেজেটভুক্ত হওয়ার দাবিতে তাঁরা গত জানুয়ারি থেকে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

আরও পড়ুন৪০৪ পদে সরকারি চাকরি, আবেদন শেষ আগামীকাল১২ ঘণ্টা আগে

৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর ২ হাজার ১৬৩ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করেছিল সরকারি কর্ম কমিশন। ভেরিফিকেশন শেষে ৯৯ জনকে বাদ দিয়ে গত বছরের ১৫ অক্টোবর ২ হাজার ৬৪ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দিয়ে প্রথম গেজেট প্রকাশ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এরপর ৩০ ডিসেম্বর ওই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে প্রথম সুপারিশকৃত ২ হাজার ১৬৩ প্রার্থীর মধ্য থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জন এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন বিবেচনায় সাময়িকভাবে অনুপযুক্ত ২২৭ জনসহ মোট ২৬৭ জনকে বাদ দিয়ে ১ হাজার ৮৯৬ জনকে নিয়োগের দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন এক ধাপ বাড়ানোর উদ্যোগ, ভিন্নমত শিক্ষকদের২৮ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া প্রার্থীরা গেজেটভুক্ত করার দাবিতে অনশনে
  • পিএসসিকে চাপ দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে: উপদেষ্টা আসিফ