ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা কে, ব্রাজিলিয়ান রোনালডো নাজারিও নাকি পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো? এই বহুচর্চিত বিতর্কে এবার মুখ খুলেছেন রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার জুলিও ব্যাপতিস্তা। তার স্পষ্ট বক্তব্য, দীর্ঘ ক্যারিয়ারের দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও গুণগত মানে ব্রাজিলিয়ান রোনালডো ছিলেন ‘অতুলনীয়’। এমনকি তিনি বলেন, ‘রোনালডো (আর৯) যা করেছেন, তা সত্যিই পাগলামি!’

ইতালীয় গণমাধ্যম ফুট ইটালিয়ার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ব্যাপতিস্তাকে প্রশ্ন করা হয়: ‘ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো নাকি ব্রাজিলিয়ান রোনালডো, কে সেরা স্ট্রাইকার?

জবাবে ব্যাপতিস্তা বলেন, ‘দুজনই ভিন্ন সময়ে অসাধারণ ছিলেন। তবে স্থায়ীত্বের দিক থেকে নিঃসন্দেহে ক্রিশ্চিয়ানো এগিয়ে। কিন্তু যেটা আমি ব্রাজিলিয়ান রোনালডোর কাছ থেকে দেখেছি, বিশেষ করে চোট পাওয়ার আগের সময়টায়-সেটা কেউ কখনো করেনি। ও যা করত, তার জন্য ওর প্রাপ্য যথাযথ শ্রদ্ধা। সেটা ছিল একেবারে ‘সত্যিই পাগলামি’। তাই আমি আমার দেশের লোককে এগিয়ে রাখব।’

রোনালডো নাজারিও, যিনি ‘আর৯’ বা ‘ফেরেনোমেনো’ নামে পরিচিত, মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য হন, পরে নিজে দলের মূল ভরসা হয়ে জেতেন ২০০২ বিশ্বকাপ। তিনি দুইবার ব্যালন ডি’অর জিতেছেন। অন্যদিকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ক্যারিয়ারে পাঁচটি ব্যালন ডি’অর জিতেছেন, পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন, পর্তুগালকে জিতিয়েছেন ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ।

এই প্রসঙ্গে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক সাক্ষাৎকারে ব্রাজিলিয়ান রোনালডো নিজেও নিজের অবস্থান তুলে ধরেছিলেন। ইএসপিএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘এই সেরা হওয়ার বিতর্কে আমি ঢুকতে চাই না। মানুষ নিজের প্রশংসা নিজেই করতে খুব পছন্দ করে। আমি চাই মানুষ আমার পারফরম্যান্স আর ক্যারিয়ার দেখে বিচার করুক। ক্রিশ্চিয়ানো অসাধারণ খেলোয়াড়, সে সবকিছু জিতেছে। কিন্তু আমি তাকে সর্বকালের সেরা বলবো না। অবশ্যই সে ইতিহাসের অন্যতম সেরা, তবে সবার সেরা নয়।’

এ সময় নিজের করা সেরা ফুটবলারের তালিকাও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ‘পেলে নিঃসন্দেহে নাম্বার ওয়ান। তারপর মেসি ও ম্যারাডোনা দুজনকেই একসঙ্গে রাখি। এরপর জিকো, রোমারিও, ক্রিশ্চিয়ানো, ফিগো, রিভালদো, রোনালদিনহো, ভ্যান বাস্তেন, জিদানসহ অনেকেই আছেন। এই তালিকা আমি বারবার বদলাই। তবে পেলে, মেসি আর ম্যারাডোনা এই তিনজনই আমার কাছে চূড়ান্ত।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শেষ পর্যন্ত খনিজ চুক্তিতে স্বাক্ষর করলো যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন

কয়েক মাস আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে একরকম অপমান করেই হোয়াইট হাউস থেকে বের করে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই বৈঠকে তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে খনিজ চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। তবে উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে সেটি হয়নি। বুধবার শেষ পর্যন্ত সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন।

চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, রাশিয়ার সাথে শান্তি চুক্তি করার পর ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা এবং পুনর্গঠনে মার্কিন বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার জন্য এটি একটি অর্থনৈতিক প্রণোদনা প্রদান করবে।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এই চুক্তি রাশিয়ার কাছে স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘমেয়াদে একটি মুক্ত, সার্বভৌম এবং সমৃদ্ধ ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

তিনি বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনের স্থায়ী শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতি উভয় পক্ষের প্রতিশ্রুতি প্রদর্শনের জন্য আমেরিকান জনগণ এবং ইউক্রেনীয় জনগণের মধ্যে এই অংশীদারিত্বের কল্পনা করেছিলেন। স্পষ্ট করে বলতে গেলে, রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রকে অর্থায়ন বা সরবরাহকারী কোনো রাষ্ট্র বা ব্যক্তিকে ইউক্রেনের পুনর্গঠন থেকে উপকৃত হতে দেওয়া হবে না।”

ইউক্রেনের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী, ইউলিয়া সভিরিডেনকো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে নিশ্চিত করেছেন যে তিনি বুধবার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। 

তিনি বলেছেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একসাথে, আমরা এমন একটি তহবিল তৈরি করছি যা আমাদের দেশে বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে।”

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা চুক্তির বিশদ বিবরণ প্রকাশ করেছেন। তারা চুক্তিটিকে ন্যায়সঙ্গত এবং ইউক্রেনকে তার প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার অনুমতি প্রদানকারী হিসাবে চিত্রিত করেছেন।

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহাল জানিয়েছেন, তহবিলটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের মধ্যে ৫০-৫০ ভাগে ভাগ করা হবে এবং প্রতিটি পক্ষকে সমান ভোটাধিকার দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ইউক্রেন “তার খনিজ সম্পদ, অবকাঠামো এবং প্রাকৃতিক সম্পদের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে” এবং শুধুমাত্র নতুন বিনিয়োগের সাথে সম্পর্কিত হবে, যার অর্থ এই চুক্তিতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে কোনো ঋণের বাধ্যবাধকতা থাকবে না।

বুধবার শ্যামিহাল এই চুক্তিকে “ইউক্রেনের উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধারে যৌথ বিনিয়োগের বিষয়ে সত্যিই একটি ভালো, সমান এবং উপকারী আন্তর্জাতিক চুক্তি” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

চুক্তির সমালোচকরা বলেছিলেন যে হোয়াইট হাউস যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির ভবিষ্যৎকে তার সম্পদ থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের সাথে যুক্ত করে ইউক্রেনের সুবিধা নিতে চাইছে। ফেব্রুয়ারিতে বেসেন্টের প্রস্তাবিত শর্তাবলীর তুলনায় চূড়ান্ত শর্তাবলী ইউক্রেনের জন্য অনেক কম কঠিন ছিল। সেখানে একটি ধারা অন্তর্ভুক্ত ছিল যে তহবিল থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের ১০০% মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করবে।

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ