প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কাতার সফর করে ‘খুশি’ চার নারী ক্রীড়াবিদ
Published: 25th, April 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কাতার সফর করতে পেরে খুবই খুশি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর সফরসঙ্গী চার নারী ক্রীড়াবিদ। তাঁদের কেউ কেউ বলেছেন, এটা অনেক বড় পাওয়া যে কাতার অনেক সম্মান দিয়েছে। যেখানেই গেছেন, সেখানেই অনেক সম্মান পেয়েছেন।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী চার নারী ক্রীড়াবিদ তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। সেখানে তাঁরা এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কাতার সফর করতে পেরে খুবই খুশি হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার। তিনি বলেন, ‘বলে তো বুঝাইতে পারতেছি না আমরা কত খুশি। আর কাতার আমাদের এত সম্মান দিছে, এটা আমাদের কাছে অনেক বড় পাওয়া। আমরা শুনছি যে কাতারে যারা যায়, তাদের নাকি এভাবে সম্মানিত করা হয় না। তো আমাদের কাছে এটা অনেক বড় পাওয়া যে কাতার আমাদের অনেক সম্মান দিছে। যেখানেই গেছি, সেখানেই অনেক সম্মান দিছে।’
বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড় শাহেদা আক্তার বলেন, কাতার ফাউন্ডেশনের সিইওর সঙ্গে তাঁরা দেখা করেন। তাঁকে সব কথা খুলে বলেছেন যে তাঁদের কী কী সুযোগ-সুবিধা লাগবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের যখন ইনজুরি (খেলাধুলার সময় আঘাত পাওয়া) হয়.
নারী ফুটবলারদের জন্য খেলার ভালো মাঠ নেই, সেই কথাও কাতার ফাউন্ডেশনকে জানানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন শাহেদা আক্তার। তিনি বলেন, শুধু ফুটবল নয়, অন্য খেলাধুলা নিয়েও কাতার ফাউন্ডেশনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কাতার সফরে ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
কাতারের লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ২০২২ সালে ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। শাহেদা আক্তার বলেন, সে ফাইনালের দুই দল যে ড্রেসিংরুম ব্যবহার করেছিল, সেখানে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। কাতারের স্পোর্টস মিউজিয়াম ঘুরে দেখেছেন তাঁরা। সবকিছু ঘুরে দেখতে পেয়ে অনেক ভালো লেগেছে বলে জানান তিনি।
প্রথমবারের মতো সরকারপ্রধানের সঙ্গে এ রকম রাষ্ট্রীয় সফরের সুযোগ হয়েছে উল্লেখ ক্রিকেটার শারমিন সুলতানা জানান, কাতার ফাউন্ডেশনের শীর্ষ ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সাক্ষাৎ, স্টেডিয়াম ও একাডেমি পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ‘তাদের (কাতার) সঙ্গে আমাদের খেলাধুলা নিয়ে, আমাদের স্পোর্টস কীভাবে ডেভেলপ (উন্নয়ন) করতে হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং ওদের কাছ থেকে অনেক কিছু জানার চেষ্টা করেছি।’
আরেক ক্রিকেটার সুমাইয়া আক্তার বলেন, কাতার হচ্ছে ফুটবলপ্রিয় দেশ। তাদের ক্রিকেটের সঙ্গে সেভাবে সম্পৃক্ততা নেই। কাতারকে বাংলাদেশের ক্রিকেট পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সুমাইয়া আক্তার বলেন, তাঁরা বলেছেন সুযোগ পেলে বাংলাদেশে আসবেন। কাতারে ক্রিকেট কোনোভাবে সচল করা যায় কি না, সেটা নিয়েও তাঁরা কথা বলেছেন।
কাতারে এমন একটি মাঠ পরিদর্শন করেছেন, যেখানে ফুটবলের পাশাপাশি সুইমিং, টেবিলটেনিস, বাস্কেটবলের মতো অন্যান্য খেলার সুযোগ রয়েছে জানিয়ে সুমাইয়া আক্তার বলেন, সেখানে তিনি দেখেছেন কীভাবে একটি মাঠকে যথাযথভাবে ব্যবহার করা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, কাতার ফাউন্ডেশনের প্রস্তাবে চার নারী ক্রীড়াবিদকে নেওয়া হয়েছিল। কাতারের সঙ্গে নারীদের জন্য স্টেডিয়াম, ডরমিটরি, জিমনেসিয়াম, ইনজুরি রিহাবের (আহতদের পুনর্বাসন) বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ত র সফর উল ল খ ক বল ছ ন আম দ র ইনজ র ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
চার দিনের কাতার সফর এবং পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ শেষে ঢাকায় ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাত ৩টায় তাকে বহনকারী ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করে। এর আগে বাংলাদেশ সময় রবিবার দুপুর দেড়টায় তিনি ইতালির রাজধানী রোম ত্যাগ করেন।
শনিবার বিশ্বনেতাদের সঙ্গে পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। আগের দিন তিনি কাতারের দোহা থেকে রোমে যান।
পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর শনিবার অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ক্যাথলিক চার্চের দুই শীর্ষ নেতা-কার্ডিনাল সিলভানো মারিয়া তোমাসি ও কার্ডিনাল জ্যাকব কুভাকাড। তারা পোপ ফ্রান্সিসের দারিদ্র্য বিমোচন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের স্বপ্নের স্মৃতিচারণ করেন।
আর্থনা সম্মেলনে যোগ দিতে গত ২১ এপ্রিল কাতারের রাজধানী দোহায় যান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সফরসঙ্গীরা। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত চার নারী ক্রীড়াবিদ সরকারপ্রধানের সফরসঙ্গী হন।
গত ২২ এপ্রিল আর্থনা সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার পাশাপাশি তিনি ব্যস্ত সময় পার করছেন। সম্মেলনের ফাঁকে তিনি বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছেন।
কাতারের আমিরের মা ও কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন শেখ মোজা বিনতে নাসেরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
এছাড়া, কাতার ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারপারসন শেখ থানি বিন হামাদ বিন খলিফা আল-থানি, কাতার চ্যারিটির আন্তর্জাতিক অপারেশনস সেক্টরের সহকারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নওয়াফ আবদুল্লাহ আল হাম্মাদি ও কাতারের জ্বালানিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সাদ বিন শেরিদা আল কাবির সঙ্গেও বৈঠক করেন মুহাম্মদ ইউনূস।
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/ইভা