বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছেন, “১৪, ১৮ এবং ২৪ সালে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। মানুষ চায় একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন। তারা নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তার পছন্দ মতো সরকার চায়।”

তিনি বলেন, “একটি রাজনৈতিক ও নির্বাচিত সরকার যে কোনো অনির্বাচিত সরকারের চাইতে অনেক বেশি শক্তিশালী। কাজেই আমরা মনে করি, এ মুহুর্তে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন সবার আগে প্রয়োজন। আমাদের দলের দাবির সঙ্গে এ দেশের জনগণও তাই চায়।”

রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে আড়াইটার দিকে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে বিবেকানন্দ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। আগামী ১২ জুন বিবেকানন্দ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হবে টাঙ্গাইল শহীদ মারুফ স্টেডিয়ামে।

আরো পড়ুন:

প্রশাসনে আ.

লীগের লোকদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চালু হয়েছে: রিপন

আ.লীগের সঙ্গে যারা আঁতাত করছেন, তাদের ছাড় নয়: টুকু

সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, “বিএনপি ৩১ দফা উপস্থাপন করেছে, আগামী বাংলাদেশ কিভাবে চলবে সে বিষয়ে। আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। বেশিরভাগ রাজনৈতিক নেতারা চাচ্ছেন আগে জাতীয় নির্বাচন হোক। আমরা এই ধারায় রয়েছি। পরবর্তীতে সরকার কী সিদ্ধান্ত দেবে এটি আমরা বলতে পারব না। যেহেতু, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজ করছি, বাংলাদেশের জনগণের সেই প্রত্যাশা এই সরকার পূরণ করবে এটিই আমরা কামনা করি।”

তিনি আরো বলেন, “৩১ দফা দাবির মধ্যে শিক্ষা, যুবকদের কর্মসংস্থান, বেকার ভাতা, স্বাস্থ্যের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও ফ্যামেলি কার্ড দেওয়া হবে। প্রতিটি পরিবার এ ফ্যামেলি কার্ড পাবে। স্বাস্থ্যর জন্য বীমার কথাও চিন্তা করছি আমরা। বিগত সময়ে বিএনপি জাতির সামনে যে ওয়াদা করেছে, তা পূরণ করেছে।”  

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিবেকানন্দ স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বজলুর রহমান, টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক কাজী জাকেরুল মওলা, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার রাশেদুল আলম রাশেদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল রহমান খান শফিক, প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন, দপ্তর ও পাঠাগার সম্পাদক অরণ্য ইমতিয়াজ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ