এক প্রেমিকার অনশন, অন্য প্রেমিকাকে বিয়ে
Published: 27th, April 2025 GMT
বিয়ের দাবিতে ২৩ এপ্রিল থেকে ইমন মিয়া নামে এক তরুণের বাড়িতে অনশন করছেন কবিতা (ছদ্মনাম) নামের এক প্রেমিকা। প্রেমিকা অনশনে বসবে এই খবর পেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান ইমন। পরের দিন ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যা (ছদ্মনাম) নমের আরেক প্রেমিকাকে বিয়ে করেন তিনি। এমন ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার গজারিয়া গ্রামে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা চলছে।
স্থানীয়রা জানায়, বিয়ের দাবিতে অনশনরত কবিতার সঙ্গে দুই বছর ধরে প্রেম করেন ইমন। কবিতা বিয়ের কথা বললে ইমন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ব্লক করে দেন তাকে। পরে কবিতা বিয়ের দাবিতে ইমনের বাড়িতে অনশনে বসে। এদিকে এক প্রেমিকা অনশনে বসলেও পালিয়ে থাকা ইমন অন্য প্রেমিকা সন্ধ্যাকে বিয়ে করেন। বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
কাজী অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে আর রেজিস্ট্রি নিবন্ধন করেন ইমন।
বিয়ের দাবিতে অনশনরত কবিতা বলেন, ইমন আমার সঙ্গে প্রেম করেছে। সে পাঁচটি বিয়ে করলেও আমি তাকে বিয়ে করব। অন্যথায় এই অনশন থেকেই বিকল্প পথ বেছে নেব।
ইমনের বড় বোন বলেন, ‘ইমনের সঙ্গে আমার ভাইয়ের সম্পর্ক ছিল বলেই মেয়েটি আমাদের বাড়িতে উঠে বসেছে। কিন্তু এরই মধ্যে ইমন অন্যত্র বিয়ে করেছে। এখন আমাদের করার কি! ’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান সমকালকে বলেন, ‘ঘটনাটি ফেসবুকে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। মেয়েটিকে ছেলের মায়ের হেফাজতে রাখা হয়েছে। ইমনের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে এনে মেয়েটির সঙ্গে বিয়ে দিতে গ্রামবাসী একমত হয়েছে।’
এদিকে ইমন মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিক বার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ–দিনাজপুর সড়কের কাটামোড় এলাকায় এ কর্মসূচিতে অংশ নেন শতাধিক সাঁওতাল ও বাঙালি নারী–পুরুষ। পরে বিকেল চারটার দিকে কয়েকজনকে শরবত পান করিয়ে অনশন ভাঙান আমন্ত্রিত অতিথিরা।
সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির এ কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির, বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, ফারুক কবীর, সাঁওতাল নেতা স্বপন শেখ, প্রিসিলা মুর্মু, তৃষ্ণা মুর্মু, বিটিশ সরেন, গৌড় পাহাড়ি, রাফায়েল হাসদা, অলিভিয়া হেমব্রম, বার্নাবাস টুডু, লুইস মুর্মু, খিলন রবিদাস প্রমুখ। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে।
গণ–অনশনে বক্তারা বলেন, গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড নির্মাণ করার মতো সরকারের অনেক জমি পতিত আছে। কিন্তু বিরোধপূর্ণ সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতেই কেন ইপিজেড করতে হবে? এ আন্দোলন ইপিজেডের বিরুদ্ধে নয়; বরং বাপ–দাদার জমি উদ্ধারের জন্য তাঁরা আন্দোলন করছেন। এসব জমি উদ্ধার করতে গিয়ে তিন সাঁওতালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আজও গ্রেপ্তার করা হয়নি। দোষী ব্যক্তিদের বিচার হয়নি।
বক্তারা বিরোধপূর্ণ জমিতে ইপিজেড নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ, তিন সাঁওতাল হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, সাঁওতাল–বাঙালিদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও পৈতৃক জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
রংপুর চিনিকল সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় রংপুর চিনিকলের আওতায় ১ হাজার ৮৪২ একর জমি আছে। এই জমিতে উৎপাদিত আখ রংপুর চিনিকলে মাড়াই হতো। চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ হলে সাঁওতালরা দফায় দফায় এই জমি দখল করেন। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এসব জমিতে উচ্ছেদে গেলে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে শ্যামল হেমব্রম, রমেশ টুডু ও মঙ্গল মার্ডি নামে তিন সাঁওতাল নিহত হন। সেই সঙ্গে অন্তত ২০ জন আহত হন।
এ পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রংপুর চিনিকলের জমিতে ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেপজা) ইপিজেড বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিকে চিনিকলের জমিতে ইপিজেড নির্মাণের বিরোধিতা করে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি।