৪৬ বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত, পিএসসি সংস্কার কমিশন গঠন
Published: 27th, April 2025 GMT
পিএসসি সংস্কারের ৮ দফা দাবিতে চাকরিপ্রত্যাশীদের শাহবাগ ব্লকেডের পর আগামী ৮ মে তারিখে অনুষ্ঠিতব্য ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষা স্থগিত করে পিএসসি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শাহবাগ চত্বরে অবস্থান নিয়ে এ ব্লকেড শুরু করেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। এতে শাহবাগ মোড় দিয়ে চত্বরের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের মধ্যস্থতায় পিএসসির সদস্য জহিরুল হক ভূইয়াসহ আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আলোচনায় বসেন। দীর্ঘ আলোচনার পরে ৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয় এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানকে কমিটির প্রধান করে একটি কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয়।
পরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান আসিফ মাহমুদ। এ সময় তিনি বলেন, ৮ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৮দফা দাবির জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানকে কমিটির প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়েছে। পিএসসির দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও গঠিত কমিটি আলোচনায় বসবেন বলেও জানান তিনি।
এর আগে সড়কের চারদিকে অবস্থান নিয়ে তারা ‘এই মুহূর্তে দরকার, পিএসসি সংস্কার’ ‘জুলাইয়ে অঙ্গীকার’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
তাদের আট দফা দাবি হলো– ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন আবার করা; আগে ৪৪ এর ভাইভা শেষ করে তারপর ৪৬ এর লিখিত পরীক্ষা নেওয়া; কমিশনে বসিয়ে খাতা দেখানো; অতি দ্রুত কমিশনের বিজ্ঞ সদস্যদের সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ এ উন্নীত করা; ভাইবা শেষ হবার পর ও রেজাল্টের আগে ক্যাডার চয়েজ প্রত্যাহারের সুযোগ প্রদান; ৪৫-৪৭ বিসিএসের ক্ষেত্রে ভাইবার পূর্বে পুনরায় ক্যাডার চয়েজ পূরণের সুযোগ প্রদান; প্রিলির কাট অফ মার্ক এবং প্রিলি, লিখিত ও ভাইবার মার্ক প্রকাশ করা এবং লিখিত পরীক্ষার ন্যূনতম দুই মাস আগে রুটিন ঘোষণা করা; সুপারিশ প্রক্রিয়া নিরপেক্ষ ও যথাসম্ভব স্বচ্ছকরণ, ভেরিফিকেশনের হয়রানি লাঘবে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গেজেট প্রণয়ন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষকরণ এবং ৪৪ এর ক্যাডার পদবৃদ্ধি ও নন ক্যাডার বিধি’২৩ সংস্কার।
এর আগে গত ২৪ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শাহ আলম স্নেহ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব স এস র ল খ ত পর ক ষ ব স এস র প এসস
এছাড়াও পড়ুন:
তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ
সম্পূরক বৃত্তি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন তাঁরা।
এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়।
তিন দফা দাবির অন্যটি হলো ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু।
আজ বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাঁদের খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।
অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সী।
অনশনকারীদের মধ্যে ফয়সাল মুরাদ ও এ কে এম রাকিব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।
অনশনকারী অপু মুন্সী বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁকে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে। তাই গতকাল রাতে তিনি অবস্থান করতে পারেননি।
আজ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
অনশনে অংশ নেওয়া শাহীন মিয়া বলেন, প্রশাসন আগের মতোই বাহানা করে যাচ্ছে। হচ্ছে, হবে এ বক্তব্য থেকে বের হতে পারেনি প্রশাসন। আর কোনো টালবাহানা তাঁরা শুনবেন না। তাঁদের দাবি অবশ্যই মানতে হবে। তা না হলে প্রশাসনকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে।
আরেক অনশনকারী ফয়সাল মুরাদ বলেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যে তিনিসহ আরও একজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
অনশনকারী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।’
আরও পড়ুনসম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী১৯ ঘণ্টা আগেযতক্ষণ তিন দফা দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন চলবে জানিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যতক্ষণ শরীরে শেষ রক্তবিন্দু আছে ততক্ষণ তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে অনেকেই এসে সংহতি প্রকাশ করছেন। সকাল থেকে এ সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে গতকাল রাতে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন আয়োজনের এবং জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূরক বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।
তবে সুস্পষ্ট রূপরেখা ছাড়া ও প্রশাসন থেকে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে উপাচার্যকে জানিয়েছেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা।