দেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং স্পোর্টস ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে আগ্রহী চীন।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাথে রাজধানীর নগর ভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ওয়াও ওয়েন সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহের কথা জানান।

এসময় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ চীনের রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “চীন বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের উন্নয়ন এবং ব্যবসায়িক সহযোগী। বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশকে চীন সরকার এক হাজার শয্যার একটি হাসপাতাল উপহারের বিষয়টি জনমনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। সম্প্রতি চীন বাংলাদেশ যৌথ ড্রোন শো দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে, যা দুই দেশের পারস্পরিক সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে উপদেষ্টা বলেন, “চীনের সহযোগিতায় দেশের সকল সিটি কর্পোরেশনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আগ্রহী সরকার।” 

এ বিষয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, “সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে চীন আগ্রহী। একে একে সকল সিটি কর্পোরেশনেই যেনো বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে প্রকল্প হাতে নেবে চীন।”

দেশের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে ৫৫টি ক্রীড়া ফেডারেশন রয়েছে। ক্রিকেট, ফুটবল ছাড়া অন্যান্য ক্রীড়া ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের উন্নতি এবং আন্তর্জাতিক অর্জন সম্ভব। সেজন্য চীনের সহযোগিতায় স্পোর্টস ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা এবং কোচ-খেলোয়াড়দের অলিম্পিক মান উপযোগী প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার উপর জোর দিতে হবে।”

ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে আলোচনায় উচ্ছাস প্রকাশ করে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, “দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশে দল পাঠাবে চীন।” 

এছাড়াও, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলার জন্য চীনে আমন্ত্রণ জানাতে চান রাষ্ট্রদূত। বাংলাদেশের যে কোন পর্যায়ের খেলোয়াড় কিংবা কোচদের উন্নত প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন তিনি।

আলোচনায়, ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে উপদেষ্টার সুদূরপ্রসারী ক্রীড়া পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে ক্রীড়া উপদেষ্টাকে চীনের স্পোর্টস ভিলেজ পরিদর্শন করার আমন্ত্রণ জানান চীনের রাষ্ট্রদূত ওয়াও ওয়েন।

ঢাকা/এএএম/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প র টস উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ