শুধু পানি নয়, আশঙ্কার একরাশ ঘন কুয়াশাও যেন ঘিরে ফেলেছে ভেনিসকে। ভাসমান এই নগরী শিল্প-সংস্কৃতির এক জীবন্ত জাদুঘর। কিন্তু সেই শহর এখন বিজ্ঞানীদের আশঙ্কার চেয়েও দ্রুত ডুবে যাচ্ছে। দিনের পর দিন সেন্ট মার্ক স্কয়ারে জমে থাকা পানিতে শুধু ভেনিসের গগনচুম্বী গম্বুজই প্রতিফলিত হচ্ছে না, বরং দেখা যাচ্ছে অপেক্ষমাণ এক বিপন্ন ভবিষ্যৎও।
বিজ্ঞানীরা বহু বছর ধরেই সতর্কবার্তা দিচ্ছিলেন ‘ডুবছে ভেনিস’। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, বাস্তবতা তাদের আশঙ্কার চেয়েও ভয়ংকর। শহরটি প্রতিবছর গড়ে দুই মিলিমিটার করে দেবে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে প্রায় একই হারে। ফলে ডুবে যাচ্ছে ভেনিস, বিলীন হচ্ছে ইতিহাস।
ইতালির সরকার কয়েক বছর আগে সমুদ্রের উঁচু জোয়ার কিংবা জলোচ্ছ্বাস থেকে ভেনিসকে বাঁচাতে ‘মোসে’ নামে একটি আধুনিক পানিরোধী বাঁধ চালু করেছিল। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্রতায় এখন এমন বড় জোয়ার প্রায়ই আসছে। ফলে প্রযুক্তি আর প্রকৃতির এই লড়াইয়ে জিতে যাচ্ছে সমুদ্রই।
এই প্রেক্ষাপটে সামনে এসেছে এক নতুন ভাবনা, শহরটিকে কোনোভাবে কিছুটা ভাসিয়ে তোলা যায় কিনা। পদুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইড্রোলজি ও হাইড্রোলিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক পিয়েত্রো তেতিনি ও তাঁর দল প্রস্তাব দিয়েছে, সমুদ্রের তলদেশে গভীর গর্ত করে শহরের নিচের মাটিতে নোনাপানি ঢোকানো গেলে শহরটি খানিকটা ওপরে তোলা যায়। শুনতে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি মনে হলেও বাস্তবে সেই পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
তবে এটি কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নয়। যদি এই পদ্ধতি সফল হয়, তবে ভেনিসকে নিয়ে বিকল্প কিছু ভাবার জন্য অন্তত বছর পঞ্চাশেক সময় পাওয়া যাবে। পৃথিবীর এই অপার সৌন্দর্য, শিল্প আর মননের যোগসূত্রে গড়ে ওঠা নগরীকে রক্ষা করা না গেলে প্রশ্নের মুখে পড়বে মানবতার বিস্ময়কর অগ্রযাত্রা। সিএনএন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আশঙ ক র
এছাড়াও পড়ুন:
যুদ্ধবিধ্বস্ত সীমান্ত শহরে ভূগর্ভস্থ কবিতা উৎসব
রাশিয়ান সীমান্তের খুবই কাছে পূর্ব ইউক্রেনের বৃহত্তম শহর খারকিভের অবস্থান। শহরটি তাই সহজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তবু নিজস্ব সাংস্কৃতিক জীবন যাপন বজায় রাখতে দৃঢ় সংকল্প রয়েছে এখানকার অধিবাসীদের। কদিন আগে আয়োজিত একটি কবিতা উৎসব খারকিভের মানুষের মানসিক দৃঢ়তা আর সৃজনশীলতারই প্রমাণ হাজির করে।
রাশিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র ১৮ মাইল দূরে অবস্থিত খারকিভ শহরটি এখন ভাঙা-পোড়ার এক বিরোধপূর্ণ মিশ্রণে প্রায় পরিত্যক্ত। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে রক্ষার জন্য শহরের ভাস্কর্যগুলো বালুর বস্তায় মুড়িয়ে রাখা হয়েছে। পার্কে ফুলের বাগানগুলো যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। স্ট্রিট লাইফ একটি ইউরোপীয় দেশের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর থেকে যতটা আশা করা যায়, তার চেয়ে কয়েক গুণ শান্ত। তবু বইয়ের দোকান, কফিশপ আর রেস্তোরাঁগুলো খোলা আছে!
খারকিভ শহরটি এখন ভাঙা-পোড়ার এক বিরোধপূর্ণ মিশ্রণে প্রায় পরিত্যক্ত