দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুর্দশাকে বাড়িয়ে দিতে পা
Published: 7th, May 2025 GMT
ভারতের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত পাকিস্তানের নড়বড়ে অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
বুধবার (৭ মে) বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটি এমনতেই নগদ অর্থের সংকটে রয়েছে। গত বছর আইএমএফের কাছ থেকে ৭০০ কোটি ডলারের ঋণ নিতে চুক্তি করে পাকিস্তান। এর বাইরে গত মার্চে দেশটিকে ‘জলবায়ু সহনশীলতা’ খাতে ১৩০ কোটি ডলার দিতে রাজি হয় আইএমএফ।
৩৫ হাজার কোটি ডলারের অর্থনীতির দেশ পাকিস্তানের জন্য এ ঋণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুন:
ভারতের ভয়াবহ হামলার বর্ণনা দিলেন পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের বাসিন্দারা
পাকিস্তানে শুধু জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে: বিক্রম মিশ্র
মার্কিন রেটিং এজেন্সি মুডিস জানিয়েছে, দীর্ঘমেয়াদী সংঘাত পাকিস্তানের সমষ্টিগত অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনের অগ্রগতিকে ব্যাহত করবে এবং আগামী কয়েক বছরে ঋণ পেতেও ঝামেলা পোহাতে হতে পারে।
মুডিস এর দাবি, দীর্ঘমেয়াদী সংঘাতে ভারতের অর্থনীতির ওপর এর প্রভাব তূলনামূলক কম হবে। তবে উচ্চ প্রতিরক্ষা ব্যয় সরকারের আর্থিক অবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
ঢাকা/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আইএমএফ ঋণের সুরাহা ছাড়াই শেষ আরেক দফার বৈঠক
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ ঋণের কিস্তি ছাড়ে কোনো সুরাহা ছাড়াই শেষ হয়েছে আরেক দফা বৈঠক। এবারও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে– এ মুহূর্তে ডলারের দর বাজারভিত্তিকের ক্ষেত্রে নমনীয় করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের এই অবস্থানের ভিত্তিতে সংস্থাটি নিজেদের মধ্যে আবার আলোচনা করবে। এরপর আগামী ১৯ মে উভয় পক্ষের মধ্যে আরও একটি বৈঠক হবে। সেখানেও ইতিবাচক কোনো বার্তা না এলে ওয়াশিংটনে পরবর্তী আইএমএফের বোর্ড সভা থেকেই ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিকের ক্ষেত্রে নমনীয় করবে কি না, তার ওপর নির্ভর করছে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণের কিস্তি পাওয়ার বিষয়টি। বাজারভিত্তিক করার অর্থ হচ্ছে, ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার মান কত হবে, তা ঠিক হবে বাজারে। এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকে সমঝোতা হয়নি। ভার্চুয়াল বৈঠকে বাংলাদেশের দিক থেকে নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। বৈঠকে অর্থ সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান ও কবির আহমেদও যুক্ত ছিলেন। গতকাল সোমবারও একই ইস্যুতে দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি, আবার আলোচনার পথও বন্ধ হয়ে যায়নি। সমঝোতার বিষয়ে আরও বৈঠক হবে। আইএমএফকে জানানো হয়েছে এবং বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে, বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপযুক্ত সময় এখনই নয়।
আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে শর্তের অগ্রগতি যাচাইয়ে গত মাসে একটি মিশন ঢাকা সফর করে। তবে কোনো সমঝোতা ছাড়াই তারা ঢাকা ছাড়ে। মূলত বাংলাদেশ এখন বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে নমনীয়তা দেখাতে চাচ্ছে না। এ কারণে আলোচনা গড়ায় ওয়াশিংটনে। গত মাসের শেষ দিকে আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকের ফাঁকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সাইডলাইনে আলাদা বৈঠক হয়। কিন্তু ঢাকা বা ওয়াশিংটন– কোথাও আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচি থেকে পরবর্তী দুই কিস্তির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি দুই পক্ষ। এরপর গত দুই দিন এ বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ভার্চুয়াল সভা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ এ মুহূর্তে ডলারের দরে নমনীয়তা না দেখানোর নীতিগত অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে যুক্তি হিসেবে বলা হয়, বর্তমান ডলারের দর বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ কারণে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে দরের তেমন পার্থক্য নেই। আবার বৈধ পথে রেমিট্যান্সে প্রায় ২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আছে। ডলারের দর দীর্ঘদিন ধরে ১২২ টাকায় স্থিতিশীল থাকার পরও এভাবে রেমিট্যান্স বাড়ছে। এ মুহূর্তে ডলারের দরে সামান্য নমনীয়তা দেখালেই দর বাড়তে শুরু করবে। ডলার বাজারে আবার অস্থিরতা শুরু হবে। ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা মূল্যস্ফীতি আবার বেড়ে যাবে।