চট্টগ্রাম পুরাতন সার্কিট হাউস মাঠ মুক্তাঙ্গন ঘোষণার দাবি
Published: 23rd, May 2025 GMT
চট্টগ্রাম নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস মাঠকে মুক্তাঙ্গন ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম। এতে সংহতি জানিয়ে যোগ দেয় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর কাজীর দেউড়ি মাঠের সামনে সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে শিক্ষাবিদ, লেখক, নগর পরিকল্পনাবিদ, গবেষক, প্রকৌশলী ও পরিবেশকর্মীদের সঙ্গে যোগ দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা.
সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত বলেন, আমরা বারবার বলছি যে, একটি পরিকল্পিত চট্টগ্রাম নগরী চাই। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যে মাস্টারপ্ল্যান, সেখানেও এটা সবুজ মাঠ হিসেবে আছে। কিন্তু সব আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যারা ‘ইটের পরে ইট, মাঝে মানুষ কীট’– এ ধরনের চিন্তাভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, সবাইকে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।
সার্কিট হাউসের মাঠটির জন্য ইতোমধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং উপদেষ্টাকে চিঠি লিখেছেন জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘মাঠটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে দিয়ে দিন, এখানে গ্রিন পার্ক করব। মানুষ এখানে আসবে, হাঁটবে, ঘুরবে। এ ধরনের চিন্তাভাবনা নিয়ে আমি তাদের চিঠি লিখেছিলাম। কিন্তু অদ্যাবধি কেউ সাড়া দেননি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে দেখাও করেছি। এখন শুনছি এখানে হাসপাতাল হবে। আমি তাদের অনুরোধ করছি, কালুরঘাটে সিটি করপোরেশনের ৯ একর জায়গা আছে। ওই জায়গা নিয়ে সেখানে হাসপাতাল করুন। সেখানকার অবহেলিত মানুষ আপনারা হাসপাতাল করলে সেবা পাবে। এখানে অনেক হাসপাতাল, কাছেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ। আশপাশে এত প্রাইভেট হাসপাতাল, এখানে আর হাসপাতাল প্রয়োজন নাই।’
সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, ‘চট্টগ্রামকে বলা হয় বাণিজ্যিক রাজধানী, কিন্তু এখানে একটিও পার্ক নেই, মাঠ নেই। শহরে পাঁচ-ছয়টা মাঠ ছিল। অথচ শিশু-কিশোররা খেলার মাঠ পায় না। এই মাঠটি আমরা সবাই মিলে রক্ষা করব। এর পেছনে যে পুরাতন সার্কিট হাউস, সেটি ব্রিটিশ বার্মিজ স্থাপনা। এখানে এ রকম আর একটিও স্থাপনা নেই। সেটি এখন জাদুঘর, আর সামনের মাঠটি ল্যান্ডস্কেপ হিসেবে আছে। এখানে কোনো স্থাপনা হতে পারে না।’
মানববন্ধনে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সভাপতি শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দর খান বলেন, এই মাঠটি এতদিন যেমন উন্মুক্ত ছিল, তেমন সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক স্থপতি জেরিনা হোসেন, অধ্যাপক ড. শফিক হায়দার, বিজয় মজুমদার ও অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া। উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশলী এবিএম বাসেত, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী ও স্থপতি শাহীনুল ইসলাম খান।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মুখ চত্বরের জায়গার মালিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। ২৩ বছর আগে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই জায়গা ইজারা নিয়েছিল চসিক। ১৯৯২ সালে শিশু পার্ক স্থাপনের জন্য ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস লিমিটেড নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চসিক চুক্তি করে। ইজারার মেয়াদ শেষ হলে ২০২০ সালে মাসিক মাত্র দেড় লাখ টাকা ভাড়ার বিনিময়ে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আবারও ১৫ বছরের চুক্তি করা হয়। তবে ২০২৩ সালের অক্টোবরে উচ্ছেদ করা হয় পার্কটি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: করপ র
এছাড়াও পড়ুন:
১৮ দিনের মাথায় কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্যের পদত্যাগ
দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ১৮ দিনের মাথায় শিক্ষকদের অনাস্থা ও আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুয়েটের রেজিস্ট্রার ইঞ্জিনিয়ার মো. আনিসুর রহমান ভূঁইয়া।
অধ্যাপক হযরত আলী গত ১ মে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। ৩ মে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু, শিক্ষক সমিতি তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে পদত্যাগের দাবি জানায়। বৃহস্পতিবার সকালেও কুয়েটের উপাচার্যের দায়িত্ব থেকে অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলীর পদত্যাগ, যোগ্য উপাচার্য নিয়োগ ও দ্রুত কুয়েটের অচলাবস্থা নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন করেন শিক্ষকরা। শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও মানববন্ধনে যোগ দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘দুর্বার বাংলা’র পাদদেশে এ মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন কুয়েট শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক গোলাম কাদের।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক