মৌলভীবাজারে কমেছে বৃষ্টি। ধীরে ধীরে কমছে নদীর পানি। স্বস্তি ফিরছে নদীপাড়ের মানুষের জীবনে। তবে, নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতার কারণে পানিবন্দি হয়ে আছেন ৫ হাজার মানুষ। 

কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জুড়ী, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও রাজনগরে দেখা দেয় আকস্মিক বন্যা। অন্যান্য উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও রাজনগর উপজেলার কামারচাক ও টেংরা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। 

দুর্গতরা বলেছেন, মনু ও ধলাই নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এতে নদীপাড়ের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। তবে, ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আমাদের এলাকায় যে জলাবদ্ধার সৃষ্টি হয়েছে, তা সহজে যাচ্ছে না। মানবসৃষ্ট নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে ছোট খাল ও নালা দিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।  

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের মশাজান, মৌলভীরচক, কড়াইয়া, ইসলামপুর, আদমপুর, জাঙ্গালী ও পঞ্চানন্দপুর এলাকার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। টেংরা ইউনিয়নের দত্তগ্রাম, ইলাশপুর, দাসপাড়া ও টেংরা এলাকায় রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে সদ্য তোলা বোরো ধান নিয়ে বিপাকে আছেন চাষিরা। রোদের দেখা না পাওয়ায় ধান শুকাতে পারছেন না তারা। দুর্গত এলাকায় গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।

কামারচাক ইউনিয়নের মৌলভীরচক গ্রামের আবদুল হান্নানের রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেছেন, নদীর পানি নামতে শুরু করেছে। এতে আমাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। সাত-আটটি গ্রাম এখনো জলমগ্ন আছে। প্রায় ৫ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দি আছেন। 

মশাজান গ্রামের শামসুল ইসলাম বলেছেন, নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্তু, আমাদের এলাকার নিম্নাঞ্চলের রাস্তা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। গ্রামীণ জনপদের মানুষ দুর্ভোগে আছেন।

টেংরা ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামের শহিদ মিয়া রাইজিংবিডিকে বলেন, আখালি নদীর পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় আমরা জলাবদ্ধতার শিকার। রাস্তা ডুবে যাওয়ায় স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছি না। 

টেংরা ইউনিয়নের একামধু গ্রামের মনু নদীর পাড়ের সোলেমান আহমদ বলেছেন, আমরা নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি। আতঙ্কে ছিলাম নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে। পানি কমতে শুরু করায় স্বস্তি ফিরেছে।

কামারচাক ইউনিয়নের মৌলভীরচক গ্রামের ইউপি সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেছেন, উজানের পানি নামলেও নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা আছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন ওয়ালিদ রাইজিংবিডিকে বলেছেন, জলাবদ্ধতার কারণ মানবসৃষ্ট। ছোট ছড়া ও নালা দিয়ে পানি নিষ্কাশনে প্রাকৃতিক প্রবাহকে মানুষ বাধাগ্রস্ত করে। এতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এসব রোধ করতে হলে কমিউনিটি লিডারদের এগিয়ে আসতে হবে। রাজনগর উপজেলার আখালিয়া ছড়া খননের প্রকল্প পক্রিয়াধীন আছে। 

রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা হাবিব শাপলা বলেছেন, সাম্প্রতিক বন্যায় রাজনগর উপজেলায় ৩ হাজার ১৫ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে অনেক স্থানে শুকনো খাবার দিয়েছি। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। 

ঢাকা/আজিজ/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জনগর উপজ ল নদ র প ন বল ছ ন স বস ত

এছাড়াও পড়ুন:

মৌলভীবাজারে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, পানিবন্দি ৫ হাজার মানুষ 

মৌলভীবাজারে কমেছে বৃষ্টি। ধীরে ধীরে কমছে নদীর পানি। স্বস্তি ফিরছে নদীপাড়ের মানুষের জীবনে। তবে, নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতার কারণে পানিবন্দি হয়ে আছেন ৫ হাজার মানুষ। 

কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জুড়ী, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও রাজনগরে দেখা দেয় আকস্মিক বন্যা। অন্যান্য উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও রাজনগর উপজেলার কামারচাক ও টেংরা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। 

দুর্গতরা বলেছেন, মনু ও ধলাই নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এতে নদীপাড়ের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। তবে, ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আমাদের এলাকায় যে জলাবদ্ধার সৃষ্টি হয়েছে, তা সহজে যাচ্ছে না। মানবসৃষ্ট নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে ছোট খাল ও নালা দিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।  

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের মশাজান, মৌলভীরচক, কড়াইয়া, ইসলামপুর, আদমপুর, জাঙ্গালী ও পঞ্চানন্দপুর এলাকার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। টেংরা ইউনিয়নের দত্তগ্রাম, ইলাশপুর, দাসপাড়া ও টেংরা এলাকায় রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে সদ্য তোলা বোরো ধান নিয়ে বিপাকে আছেন চাষিরা। রোদের দেখা না পাওয়ায় ধান শুকাতে পারছেন না তারা। দুর্গত এলাকায় গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।

কামারচাক ইউনিয়নের মৌলভীরচক গ্রামের আবদুল হান্নানের রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেছেন, নদীর পানি নামতে শুরু করেছে। এতে আমাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। সাত-আটটি গ্রাম এখনো জলমগ্ন আছে। প্রায় ৫ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দি আছেন। 

মশাজান গ্রামের শামসুল ইসলাম বলেছেন, নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্তু, আমাদের এলাকার নিম্নাঞ্চলের রাস্তা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। গ্রামীণ জনপদের মানুষ দুর্ভোগে আছেন।

টেংরা ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামের শহিদ মিয়া রাইজিংবিডিকে বলেন, আখালি নদীর পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় আমরা জলাবদ্ধতার শিকার। রাস্তা ডুবে যাওয়ায় স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছি না। 

টেংরা ইউনিয়নের একামধু গ্রামের মনু নদীর পাড়ের সোলেমান আহমদ বলেছেন, আমরা নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি। আতঙ্কে ছিলাম নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে। পানি কমতে শুরু করায় স্বস্তি ফিরেছে।

কামারচাক ইউনিয়নের মৌলভীরচক গ্রামের ইউপি সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেছেন, উজানের পানি নামলেও নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা আছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন ওয়ালিদ রাইজিংবিডিকে বলেছেন, জলাবদ্ধতার কারণ মানবসৃষ্ট। ছোট ছড়া ও নালা দিয়ে পানি নিষ্কাশনে প্রাকৃতিক প্রবাহকে মানুষ বাধাগ্রস্ত করে। এতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এসব রোধ করতে হলে কমিউনিটি লিডারদের এগিয়ে আসতে হবে। রাজনগর উপজেলার আখালিয়া ছড়া খননের প্রকল্প পক্রিয়াধীন আছে। 

রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা হাবিব শাপলা বলেছেন, সাম্প্রতিক বন্যায় রাজনগর উপজেলায় ৩ হাজার ১৫ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে অনেক স্থানে শুকনো খাবার দিয়েছি। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। 

ঢাকা/আজিজ/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাজার কোটি টাকার প্রকল্পেও কমছে না মনুতীরের আতঙ্ক