অর্থপাচারে অভিযুক্তদের সঙ্গে ‘সমঝোতা’ হতে পারে: গভর্নর
Published: 12th, June 2025 GMT
বিদেশে অর্থপাচারে অভিযুক্তদের সঙ্গে ‘সমঝোতার’ ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বিদেশে অর্থপাচারের যেসব মামলা রয়েছে সেগুলোর মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর মামলাগুলোর ক্ষেত্রে আর্থিক সমঝোতা ‘অন্যতম বিকল্প’ হতে পারে। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্য সফরের আগে ঢাকায় দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কথিত কার্যকলাপের প্রকৃতির ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ নির্ভর করবে। যদি আইন লঙ্ঘনের প্রকৃতি তুলনামূলকভাবে হালকা ধরনের হয়.
তিনি জানান, তাঁর দল আন্তর্জাতিক মামলা পরিচালনায় অর্থ জোগানো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বাংলাদেশে এসে সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বিনিময়ে মামলায় সফল হলে সমঝোতার ভিত্তিতে বা পুরস্কার হিসেবে কিংবা আগেই নির্ধারণ করা অর্থ গ্রহণ করে থাকে তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, ‘আমরা লিটিগেশন ফান্ডিংয়ের দিকে নজর দিচ্ছি। এ নিয়ে খুবই ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। আমরা চাই, যতটা সম্ভব অর্থ এ উৎস থেকে জোগাড় করা।’
এদিকে বুধবার লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টা জোরদার করেছে বাংলাদেশ। পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার একটি দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল প্রক্রিয়া। তাই এ কাজে গতি আনতেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রচেষ্টা আরও জোরদার করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে লন্ডন সফরে রয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
প্রেস সচিব আরও জানান, পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনার বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইমস এজেন্সির (এনসিএ) সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পাচারের অর্থ শনাক্ত, কীভাবে পাচার হয়েছে তা খুঁজে বের করা ও জব্দ করার বিষয়ে ‘এনসিএ’-এর ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ বিষয়ে সংস্থাটি ইতোমধ্যে দুটি পদক্ষেপও নিয়েছে।
শফিকুল আলম বলেন, পাচারকৃত অর্থ কীভাবে ফেরত আনা যায় তা জানতে অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতাও যাচাই করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যেই একাধিক বৈঠক হচ্ছে।
এর আগে ১১ মার্চ অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছিলেন, বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা সম্ভব। এ জন্য বিদেশের সঙ্গে চুক্তির চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। সচিবালয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি। বিশাল অংকের টাকা। সব অংকের টাকা আনতে, তাদের আইডেন্টিফাই করতে, বিভিন্ন দেশে আছে, এখানে কতগুলো আইনী পদক্ষেপ আছে, আবার সে আইনের পদক্ষেপগুলো বিদেশের সঙ্গে জড়িত। আমরা চেষ্টা করছি ইমিডিয়েটলি যেটা পারি আনতে। অন্যগুলোও আনার চেষ্টা করছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, এটলিস্ট কিছুটা ইন্ডিকেশন আসুক। এ জন্য আইনের...। আইন মানে কিছু এগ্রিমেন্ট করা বিদেশের সঙ্গে, এগুলো করব। নেক্সট মাসে আর একটু বেটার জানতে পারবেন।’
আপনারা কয়েকশ কোটি ডলার ফেরত আনার চেষ্টা করছেন। এটা কী সম্ভব- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘হ্যাঁ এটা সম্ভব। অনেক সময় দেখা যায় ১১-১২ জন দিয়েছে, ২০০ কোটি টাকার ওপরে অনেকের আইডেন্টিফাই করা হয়েছে। সব মিলিয়ে হয়তো আমরা আনতে পারব।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আহস ন এইচ মনস র উপদ ষ ট পদক ষ প সমঝ ত
এছাড়াও পড়ুন:
টেকনাফে নিখোঁজের ৩২ ঘণ্টা পর জেলের লাশ উদ্ধার
কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার ৩২ ঘণ্টা পর এক জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর নাম মোহাম্মদ ইসমাইল (২৪)। আজ শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়া সমুদ্র উপকূল থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
মোহাম্মদ ইসমাইল টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ বাজারপাড়া এলাকার মৃত আবুল হাশেমের ছেলে।
সাবরাং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুস সালাম জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে নাফ নদীর শাহপরীর দ্বীপ গোলারচর এলাকায় মাছ শিকারে যান ইসমাইল। এ সময় ভেসে যান তিনি। আশপাশের লোকজন ও জেলেরা নাফ নদী ও আশপাশের এলাকায় খোঁজাখুঁজি করলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। আজ দুপরে সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়া ঘাট এলাকায় লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয় লোকজন। পরবর্তী সময়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশটি উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া জেলে ইসমাইলের পরিবারের সদস্যরা লাশটি শনাক্ত করেছেন। তাঁদের কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হয়েছে।