চার শতাধিক লেখক গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন
Published: 12th, June 2025 GMT
জ্যাডি স্মিথ, ইয়ান ম্যাকইওয়ান, রাসেল টি ডেভিসসহ লেখকরা চার শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ লেখক এবং সংস্থার স্বাক্ষরিত একটি খোলা চিঠিতে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। লেখক জিনেট উইন্টারসন, আরভাইন ওয়েলশ, কেট মোস এবং এলিফ শাফাক স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁরা জনগণকে ‘ভয়াবহতার মুখে আমাদের সম্মিলিত নীরবতা এবং নিষ্ক্রিয়তার অবসান’ করার জন্য তাদের সাথে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসরায়েল বলেছে, তারা ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে ধ্বংস করতে এবং তাদের দ্বারা আটক জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। তারা গণহত্যার অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে, যে দাবি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতও পরীক্ষা করছে।
ইইউ বলছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলা হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ‘যা প্রয়োজনের চেয়েও বেশি’। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের সীমান্তবর্তী আক্রমণের জবাবে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে, যেখানে প্রায় ১,২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। আর হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় কমপক্ষে ৫৪,০৫৬ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে গত তিন মাসে ৩,৯০১ জনের অধিক মানুষ নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্ল্যাসিফিকেশন (আইপিসি)–এর এক মূল্যায়ন অনুযায়ী আগামী মাসগুলোতে অর্ধ মিলিয়ন মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হবে।
‘রাইটারস ডিমান্ড ইমিডিয়েট গাজা সিজফায়ার’ শিরোনামের চিঠিতে লেখকরা ‘জাতিসংঘ কর্তৃক গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তার তাৎক্ষণিক অবাধ বিতরণ এবং সব ফিলিস্তিনির জন্য নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার, জিম্মিদের মুক্তি এবং ইসরায়েলি কারাগারে নির্বিচারে বন্দি হাজার হাজার ফিলিস্তিনির মুক্তি’ নিশ্চিত করতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে যে, যদি ইসরায়েলি সরকার পদক্ষেপ না নেয় তবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র আহ ব ন জ ন ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৫ হাজার ছাড়াল
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের মোট সংখ্যা ৫৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বুধবার (১১ জুন) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ১২৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৭৪ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় নিহত মোট ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৫৫ হাজার ১০৪ জনে পৌঁছেছে। একইসঙ্গে অবরুদ্ধ নগরীতে আহতের সংখ্যা এখন ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৯৪ জনে পৌঁছেছে।
মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি। কারণ অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।
আরো পড়ুন:
গাজা নীতির বিরোধিতাকারী পররাষ্ট্র কর্মকর্তাদের পদত্যাগ করতে বলল যুক্তরাজ্য
গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধ ‘লজ্জাজনক কেলেঙ্কারি’: ম্যাক্রোঁ
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, এই হামলায় প্রায় ১২০০ নিহত ও দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস যোদ্ধারা। এর জবাবে ওই দিনই গাজায় বিমান হামলা ও পরে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
দীর্ঘ ১৫ মাস ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। তবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের তীব্র হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
অব্যাহত হামলার পাশাপাশি ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ব্যাপক অবরোধ আরোপ করেছে, যার ফলে এর জনসংখ্যা, বিশেষ করে উত্তর গাজার বাসিন্দারা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।
জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক অভিযানের ফলে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং প্রায় ৮৫ শতাংশ জনসংখ্যা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, দীর্ঘ এ সময় ধরে চলা সংঘাতের কারণে মানবিক সংকটে দিন পার করছেন ফিলিস্তিনিরা। খাবার, পানি, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তার অভাবে উপত্যকাটির ২৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দা চরম ক্ষুধা ও ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছেন।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। জানুয়ারিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে তেল আবিবকে গণহত্যা বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে রায় উপেক্ষা করে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
ঢাকা/ফিরোজ