আবার ভাঙনের মুখে জাপা, জিএম কাদেরকে ‘মাইনাস’
Published: 17th, June 2025 GMT
সপ্তমবারের মতো ভাঙনের মুখে পড়েছে ফ্যাসিবাদের দোসর তকমায় চাপে পড়া জাতীয় পার্টি (জাপা)। দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে সরাতে বর্তমান এবং সাবেক জ্যেষ্ঠ নেতারা সক্রিয় হয়েছেন।
জাপা সূত্রের ভাষ্য, আওয়ামী লীগের আমলে গৃহপালিত বিরোধী দলের ভূমিকার কারণে দলটি অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে। শেখ হাসিনার শাসনামলের বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরানো ছাড়ানো ছাড়া জাপাকে সরকার এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর চাপ থেকে রক্ষা করা সম্ভব নয়।
দলীয় নেতারা বলছেন, জি এম কাদের সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়ে সরকারের সমালোচনা করছেন, তাতে আগামী নির্বাচনে জাপার পক্ষে টিকে থাকা অসম্ভব। সরকার এবং রাজনীতি কোথাও নেই জাপা। তাই জি এম কাদেরকে সরিয়ে নতুন নেতৃত্বের অধীনে বিএনপিসহ অন্য দলগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্কের মাধ্যমে নির্বাচনে জাপাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
নেতৃত্ব বদলের চেষ্টা
নেতৃত্ব পরিবর্তন ঠেকাতে জি এম কাদের জাপার সম্মেলন স্থগিত করলেও, এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য হয়েছেন জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। আগামী ২৮ জুনেই দলের সম্মেলন করতে জি এম কাদেরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিবৃতিতে।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চেয়ারম্যান পদে এবং রুহুল আমিন হাওলাদার মহাসচিব পদে প্রার্থী হতে চান। রুহুল আমিন হাওলাদার সমকালকে বলেছেন, দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীর চাওয়ায় তাঁরা চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব পদে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
যদিও জি এম কাদেরর ঘনিষ্ঠ একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য সমকালকে বলেছেন, ২০১৮ সালের রাতের ভোট এবং ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে এমপি হওয়ার কারণে জি এম কাদের ফ্যাসিবাদের দোসর হলে, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং রহুল আমিন হাওলাদার আরও বড় দোসর। দলের প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সিদ্ধান্ত মেনে জি এম কাদের ২০১৪ সালের বিএনপি বিহীন একতরফা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেই নির্বাচনের পর বিরোধী দলের আসনে বসেও মন্ত্রী হয়েছিলেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। সস্ত্রীক এমপি হয়েছিলেন রুহুল আমিন হাওলাদার। তাঁরা সংসদে দলের কথা না বলে শেখ হাসিনার স্তুতি করতেন। তাই তারা দলের নেতৃত্বে এলেও জাপা ফ্যাসিবাদের দোসর তকমা থেকে মুক্তি পাবে না।
সরকারি ‘যোগসূত্র’
২০১৯ সালের জুলাইয়ে এরশাদের মৃত্যুর পর জাপার চেয়ারম্যান হন জি এম কাদের। একই বছরের ডিসেম্বরে ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি দলীয় প্রধান নির্বাচিত হন। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চলছে জাপা। নির্বাচন কমিশনেরও তাগিদ রয়েছে কমিটি হালনাগাদের।
জি এম কাদেরের ঘনিষ্ঠ আরেক নেতা সমকালকে বলেছেন, বিএনপি সর্বশেষ সম্মেলন করেছে ২০১৬ সালে। কিন্তু দলটিকে নির্বাচন করতে বলছে না কমিশন। জাপাকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে ধারনা করা হচ্ছে, জি এম কাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরাতে সরকারের সংস্থার ইন্ধন রয়েছে। যারা নেতৃত্বে আসতে চাইছেন, অতীতে তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। তাদের তৎপরতায় নিশ্চিত সংস্থাগুলোর সমর্থন দিচ্ছে। নয়ত ৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতিতে তাদের তৎপর হওয়ার কারণ নেই।
গত ২০ মে জাপার প্রেসিডিয়াম সভায় সিদ্ধান্ত হয় ২৮ জুন দলের সম্মেলন হবে। এ জন্য জাপা চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র ভাড়া করে। একই দিনে একইস্থানে প্রধান উপদেষ্টার কর্মসূচি রয়েছে, কারণ দেখিয়ে গত সোমবার জি এম কাদের সম্মেলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেন।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং রুহুল আমিন হাওলাদার মঙ্গলবার বিবৃতিতে বলেন, সম্মেলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক ও অনভিপ্রেত। দলীয় গঠনতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী দলীয় গঠনতন্ত্রের বৈধতা নিশ্চিতের জন্য সম্মেলনের গুরুত্ব অপরিসীম। সম্মেলনের মাধ্যমে চেয়ারম্যান, মহাসচিবসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করা গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রেসিডিয়াম সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল কোনো কারণবশত সম্মেলনের জন্য মাঠ বা হল না পাওয়া গেলে, রাজধানীর কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সম্মেলন হবে। এ সিদ্ধান্ত এখনও বহাল আছে। এই সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে দলের চেয়ারম্যান ২৮ জুন দলীয় কার্যালয়ের সামনেই সম্মেলনের আয়োজন নিশ্চিত করবেন বলে আশা করি।
জি এম কাদের একা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকে শুরুতে সমর্থন জানিয়েছিল জাপা। বঙ্গভবন এবং যমুনায় একাধিক বৈঠকেও ডাক পায়। তবে দলটির আওয়ামী লীগ আমলের ভূমিকার কারণে অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা জাপাকে বৈঠকে ডাকার বিরোধিতা করে। পরবর্তীতে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা হয়। সবশেষ হামলা হয়েছে জি এম কাদেরের রংপুরের বাসভবনেও। জি এম কাদের অভ্যুত্থানের সময়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সরব হয়ে, শেখ হাসিনার সমালোচনা করলেও জুলাইয়ের একাধিক হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে তাকে।
জি এম কাদেরকে জাপার চেয়ারম্যান করার বিরোধী ছিলেন এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ। গত বছরের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জি এম কাদেরের নেতৃত্বে জাপা অংশ নেয়। দল থেকে বাদ পড়েন রওশন এবং তাঁর অনুসারীরা। এর দুই মাস পর তাঁর রওশনকে চেয়ারম্যান করে জাপা নামে পৃথক দল গঠন করে। এতে জাপার কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাসহ একাধিক নেতা যোগ দেন।
তারাও এবার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং রুহুল আমিন হাওলদারের পক্ষে সক্রিয় রয়েছেন। জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা ছাড়া আর কেউ প্রকাশ্যে জি এম কাদেরের পক্ষে নেই। তিনি বলেছেন, দলের চেয়ারম্যান ছাড়া কারো সম্মেলন আহ্বানের অধিকার নেই। সবাই জি এম কাদেরের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।
জাপা সূত্রের খবর, দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুও জি এম কাদেরের পক্ষে নেই। তিনি সমকালকে বলেছেন, ‘কোনো দিকেই নেই আমি’। স্থগিত করা সম্মেলন ২৮ জুনেই আয়োজনের দাবির বিষয়ে তিনি বলেছেন, দুইজন জ্যেষ্ঠ আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা প্রার্থী হতে চান। এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। সম্মেলনের বিষয়ে বুধবার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলব।
১৯৮৬ সালে এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাপা ইতিপূর্বে ছয়বার ভেঙেছে। ভোটের মাঠ থেকে দলটি দিন দিন হারিয়ে গেলেও, গত তিন সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনে ছিল। প্রত্যেকবারই আওয়ামী লীগের আসন ছাড় পেয়ে সংসদে যান দলটির নেতারা। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ২৬ আসনে ছাড় পেয়েও ১১টিতে জয়ী হয় জাপা। দলটির এমপিরা বিরোধী দলের আসনে বসেও শেখ হাসিনার স্তুতি করে গৃহপালিত বিরোধী দলের তকমা পায়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ এম ক দ র এম ক দ র র এরশ দ র বল ছ ন ২৮ জ ন দল র চ সরক র হওয় র আওয় ম র আসন
এছাড়াও পড়ুন:
ভোগবাদী যুগে ইসলামে সুখের খোঁজ
আপনার বাড়িতে কি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের স্তূপ জমে আছে? জানেন কি, এর থেকে মুক্তির পথ আছে ইসলামের সরল জীবনধারায়? আধুনিক বিশ্বে ভোগবাদের তীব্র ঝড়ে আমরা প্রায়ই নিজেদের দেখি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে ঠাসা ঘরে।
নতুন ফ্যাশনের পোশাক, সর্বশেষ প্রযুক্তির গ্যাজেট বা মধ্যরাতে এক ক্লিকে কেনা অপ্রয়োজনীয় পণ্য—এসব আমাদের জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ইসলাম আমাদের ন্যূনতম একটি সরল জীবনধারার পথ দেখায়, যা পার্থিব লোভ থেকে মুক্ত করে আমাদের আল্লাহর পথে নিবেদিত হতে উৎসাহিত করে।
আয়েশা, তুমি যদি আমার সঙ্গে মিলিত হতে চাও, তবে এই দুনিয়া থেকে একজন পথিকের প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো সামান্য গ্রহণ করো।সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৭,৮০০সংযম কেন জরুরিমিনিমালিজম বা ন্যূনতাবাদ এমন একটি জীবনধারা, যেখানে আমরা শুধু প্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর নির্ভর করব এবং অতিরিক্ত ভোগবিলাস থেকে দূরে থাকব। ক্রমাগত কেনাকাটার দিকে প্রলুব্ধ না হয়ে শুধু যেটুকু না হলেই জীবন চলে না, সেটুকু নিজের কাছে রাখব।
আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে আদম সন্তান, প্রত্যেক নামাজের সময় বেশভূষা সৌন্দর্য গ্রহণ করো, খাও এবং পান করো, কিন্তু অপচয় কোরো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আ’রাফ, আয়াত: ৩১)।
এই আয়াত আমাদের জীবনে সংযম ও সরলতার গুরুত্ব মনে করিয়ে দেয়।
আরও পড়ুনদুনিয়ার ভোগ–বিলাস নিয়ে সুরা তাকাসুরের সতর্কতা১০ এপ্রিল ২০২৩বিজ্ঞাপনের প্রলোভন আজকাল আমাদের অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটার দিকে ঠেলে দেয়। প্রায়ই এমন জিনিস কিনে ফেলি, যেমন একটি ইউএসবি মগ হিটার বা জামাকাপড়, যা তারপর বছরের পর বছর অব্যবহৃত পড়ে থাকে।
বাড়িতে জমে থাকে প্যাকেট না খোলা গ্লাস–বক্স, অপঠিত বইয়ের স্তূপ। প্রশ্ন করে দেখি তো, আমাদের আসলেই কি এগুলো প্রয়োজন ছিল?
মহানবী (সা.)-এর সাদাসিধা জীবনমহানবীজি (সা.) এবং তাঁর সাহাবারা সরল জীবনযাপনের উজ্জ্বল উদাহরণ। হজরত আয়েশা (রা.)-কে নবীজি বলেছিলেন, ‘হে আয়েশা, তুমি যদি আমার সঙ্গে মিলিত হতে চাও, তবে এই দুনিয়া থেকে একজন পথিকের প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো সামান্য গ্রহণ করো। ধনীদের সঙ্গে মেলামেশা থেকে সাবধান থাকো এবং কোনো পোশাককে তখনই জীর্ণ হয়ে গেছে মনে করো, যখন তুমি তাতে প্যাঁচ লাগিয়েছ (মানে যখন পুরোনো হয়ে যাওয়ার কারণে পেঁচিয়ে যায়)।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৭,৮০০)।
এই হাদিসে নবীজি (সা.) স্পষ্টভাবে সরল জীবনযাপন এবং অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
উপহারের পরিবর্তে আমরা দাতব্য সংস্থায় দানের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এমনকি আমাদের একটি অনলাইন সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে সেই অর্থ স্থানীয় মসজিদে দান করতে পারি।ইসলাম আমাদের শেখায় যে পার্থিব সম্পদ ক্ষণস্থায়ী এবং এটি আমাদের চিরস্থায়ী জীবনের জন্য প্রস্তুতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। নবীজি (সা.) কখনো অপ্রয়োজনীয় সম্পদ সঞ্চয় করেননি এবং সব সময় দানশীলতার মাধ্যমে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহিত করেছেন।
দানের সংস্কৃতিআজকের বিশ্বে ভোগবাদী সংস্কৃতি আমাদের জীবনকে জটিল করে তুলেছে। ক্রেডিট কার্ড, সহজলভ্য ঋণ এবং ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের ক্রমাগত কেনাকাটার দিকে প্রলুব্ধ করে। আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম, যেমন আমাদের দাদা-দাদিরা, সীমিত সম্পদের মধ্যে সরল জীবন যাপন করতেন। কিন্তু গত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী মধ্যবিত্ত শ্রেণির উত্থান এবং সহজে ঋণ পাওয়ার সুযোগ আমাদের ভোগবাদী প্রবৃত্তিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুনখাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে ইসলামের নির্দেশনা০৯ জুন ২০২৫কিন্তু ইসলাম আমাদের শেখায়, প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় করা লোভ ও কৃপণতার দিকে নিয়ে যায়, যা একজন মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়।
ইসলাম আমাদের জীবনকে সরল করার পাশাপাশি আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহিত করে। আমরা চাইলে মাসিক বাজেটের একটি অংশ দানের জন্য বরাদ্দ করতে পারি।
যে ব্যক্তি নিজের সম্পদে সংযমী হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায়।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৯৪বিয়ের মতো উৎসবে আমরা বিলাসবহুল আয়োজনের পরিবর্তে সরলতা বেছে নিতে পারি। উপহারের পরিবর্তে আমরা দাতব্য সংস্থায় দানের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এমনকি আমাদের একটি অনলাইন সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে সেই অর্থ স্থানীয় মসজিদে দান করতে পারি।
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের সম্পদে সংযমী হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৯৪)।
আমাদের ভালো কাজ এবং দানশীলতা পরকালে যেমন উপকারে আসবে, তেমনি সমাজের জন্যও হবে কল্যাণকর। অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে দানশীলতার দিকে মনোযোগ দিলে সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের জীবন উন্নত হবে।
ভোগবাদী জীবন মানুষকে অস্থির করে তোলে এবং ন্যূনতম খরচের জীবনধারা মানুষকে তৃপ্তির জীবন উপহার দেয়। এটি একই সঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনেরও একটি পথ।
আমরা যদি আমাদের অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে আল্লাহর পথে ব্যয় করি, তবে তা আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনকে সমৃদ্ধ করবে। ন্যূনতমবাদ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের প্রকৃত সুখ পার্থিব সম্পদে নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের প্রস্তুতিতে নিহিত।
আরও পড়ুনআধুনিক এই প্রবণতার শিকড় ইসলামে২০ মে ২০২৫