ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করুন: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ
Published: 4th, July 2025 GMT
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ফ্রানচেসকা আলবানিজ ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক ও আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে, ইসরায়েলকে দেওয়া আন্তর্জাতিক সহায়তা বন্ধ করা ও দেশটির ওপর পুরোপুরি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ও।
গতকাল বৃহস্পতিবার জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে বক্তব্য দেওয়ার সময় আলবানিজ এমন আহ্বান জানান। তিনি ইসরায়েলের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ‘গণহত্যার অর্থনীতি’ বলে আখ্যা দেন।
মানবাধিকার পরিষদে এদিন আলবানিজ নতুন একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। সেখানে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি দমন–পীড়ন ও সহিংসতায় সহায়তাকারী বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়।
আলবানিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারি ও উপনিবেশ গঠনের পরিকল্পনাকে টিকিয়ে রাখতে বড় কোম্পানিগুলো একধরনের করপোরেট যন্ত্র হিসেবে কাজ করছে। এই যন্ত্রই ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে সেখানে বসতি স্থাপনের পরিকল্পনায় ইন্ধন জোগাচ্ছে।ফ্রানচেসকা আলবানিজ বলেন, ‘অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অবস্থা ভয়াবহ। ইসরায়েল আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম নিষ্ঠুর গণহত্যার জন্য দায়ী।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গাজা যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এ উপত্যকায় প্রায় ৫৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, কয়েক লাখ মানুষ একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, বিভিন্ন শহর ও গ্রাম মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। হাসপাতাল ও স্কুলগুলোও হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। অবরুদ্ধ ও বোমা হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা উপত্যকার ৮৫ শতাংশ এলাকাই এখন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে।
আলবানিজের উপস্থাপন করা প্রতিবেদনটির শিরোনাম দেওয়া হয়েছে, ‘ফ্রম ইকোনমি অব অকুপেশন টু ইকোনমি অব জেনোসাইড (দখলদারির অর্থনীতি থেকে গণহত্যার অর্থনীতি)’। কীভাবে বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ইসরায়েলের দখলদারি ও উপনিবেশ গঠনের পরিকল্পনাকে টিকিয়ে রাখছে, তা এ প্রতিবেদনে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনগাজায় ইসরায়েলের গণহত্যায় সহায়তা করছে মাইক্রোসফটসহ বহু প্রতিষ্ঠান০২ জুলাই ২০২৫ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের জানাজায় অংশ নিতে মানুষের ভিড়। গত মঙ্গলবার রাতে হামলায় তাঁরা নিহত হন। ২ জুলাই ২০২৫, খান ইউনিস, গাজা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল আলব ন জ গণহত য ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
ইসলামবিদ্বেষ এখন ক্ষমতার রাজনীতির নতুন মুদ্রা
আমরা যে পৃথিবীতে বাস করছি, সেটাকে সবচেয়ে সৎ ভাবে বর্ণনা করা যায় এভাবে—ইসলামবিদ্বেষ এখন বৈশ্বিক ক্ষমতার নতুন মুদ্রা। রাজনীতিবিদদের বক্তৃতায়, কূটনীতিকদের চুক্তিতে, সংবাদপত্রের পাতায় এবং নিরাপত্তা বা সন্ত্রাসবিরোধী ভাষ্যে এই মুদ্রা বেশ ভালোভাবেই চলে। এই মুদ্রা গণহত্যার দায়মুক্তি দেয়, স্বৈরশাসককে দেয় বৈধতা, আর নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের নতুন বাজার গড়ে তোলে। গাজার গণহত্যা দেখিয়েছে, মুসলমানের রক্ত শুধু সস্তা নয়; বরং বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর অর্থনীতির জন্য বিনিয়োগযোগ্য পুঁজি।
গাজার দিকে তাকান। দুই বছর ধরে বিশ্ব দেখছে, অবরুদ্ধ একটি জাতিকে কীভাবে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। তাদের ঘরবাড়ি ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে পরিবারগুলোর কবর রচিত হচ্ছে, হাসপাতালে বোমা হামলা হচ্ছে, শিশুরা ক্ষুধায় যন্ত্রণায় তিলে তিলে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা