ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী আর্চ স্টিল সেতু অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী নির্মাণের দাবি
Published: 13th, July 2025 GMT
ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী আর্চ স্টিল সেতু একনেকের অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন নাগরিক সংগঠদের নেতারা। আজ রোববার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে নাগরিক সংগঠন ‘সদাজাগ্রত ময়মনসিংহ’।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, ব্রহ্মপুত্র নদে নির্মাণাধীন কেওয়াটখালী আর্চ স্টিল সেতু প্রকল্পের সংযোগ সড়ক একনেকে অনুমোদিত নকশা পরিবর্তন করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর ফলে বাড়তি ভূমি অধিগ্রহণের কারণে বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বসতভিটা উচ্ছেদসহ কৃষিজমি, খাল ও জলাশয় ভরাট করতে হবে। এতে প্রাণপ্রকৃতি বিপর্যয়ের শঙ্কা তৈরি হবে।
লিখিত বক্তব্যে সদাজাগ্রত ময়মনসিংহের প্রধান সংগঠক আবুল কালাম আল আজাদ বলেন, মূল নকশা পরিবর্তন করে নগরীর শম্ভুগঞ্জ চায়না মোড়ে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মিটার বাঁকা ইংরেজি ইউ আকৃতির একটি সড়কের নির্মাণকাজ চলছে। অস্বাভাবিক বাঁকা এ সড়ক গিয়ে মিশেছে পুরোনো চায়না সেতুর সংযোগ সড়কে। দুটি সেতুর সংযোগ সড়ক এক হওয়ায় পুরো ময়মনসিংহ নগরী ও আশপাশের এলাকা যানজটে স্থবির হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আবুল কালাম আল আজাদ আরও বলেন, একনেকের নকশার বাইরে গিয়ে অস্বাভাবিক বাঁকানো অংশ নির্মাণ করতে একটি খাল, সাতটি জলাশয়, কৃষিজমি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসা, ৬৫টি কবর, দোকান ও কারখানা ভরাট আর উচ্ছেদ করতে হচ্ছে। এ জন্য অতিরিক্ত ৩২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করতে হচ্ছে। ৩০ ফুট উঁচু প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করতে হচ্ছে। রেল ও সড়ক ওভারপাস নির্মাণ করতে হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত ২ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। এ বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে আরও দুটি সেতু নির্মাণ করা সম্ভব।
এর পেছনে আছে কয়েকটি আবাসন প্রকল্পসহ ‘সরকারি-বেসরকারি দুষ্টচক্র’; যাদের কারসাজিতে স্বপ্নের এই প্রকল্প দুঃস্বপ্নে রূপান্তরিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন আবুল কালাম আল আজাদ।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী আর্চ স্টিল সেতু নির্মাণে একনেকের অনুমোদিত নকশা বিপর্যয়ের বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
এ সময় বক্তব্য দেন গাছরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজীব, রাজধানীর তেঁতুলতলা মাঠরক্ষা আন্দোলনের নেত্রী সৈয়দা রত্না, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক হালিম দাদ খান, সদাজাগ্রত ময়মনসিংহের সমন্বয়ক মজিবুর রহমান।
ময়মনসিংহ স্ট্যাটেজিক ডেভেলপমেন্ট প্ল্যানের আওতায় ২০১৪ সালে নগরীর কেওয়াটখালী এলাকায় একই সঙ্গে সড়ক ও রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। ২০২১ সালের ২৩ আগষ্ট একনেকে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী কেওয়াটখালী স্টিল আর্চ সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ওই নকশায় রেলপথ যুক্ত করা হয়নি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর চ স ট ল স ত ন র ম ণ কর একন ক ণ করত
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহ বোর্ডে চার বছরে সর্বনিম্ন পাস, ১৫ কলেজে শতভাগ ফেল
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে এবার পাসের হার ৫১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এটি গত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এবার জিপিএ–৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে। বোর্ডে শতভাগ ফেলের ঘটনা ঘটেছে ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই পাস করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ।
প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, এবার এইচএসসি পরীক্ষার জন্য ৩০৬টি প্রতিষ্ঠানের ৭৯ হাজার ২৩৭ শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেন। পরীক্ষায় অংশ নেন ৭৫ হাজার ৮৫৫ জন। এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাস করেছেন ৩৯ হাজার ৯৬ জন। পাসের হার ৫১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ৬৮৪ শিক্ষার্থী। শাখাভিত্তিক পাসের হার সবচেয়ে কম ব্যবসায় শিক্ষা শাখায়।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত চার বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে জিপিএ-৫ কম পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এবার ২ হাজার ৬৪৮ জন জিপিএ–৫ পেলেও ২০২৪ সালে ৪ হাজার ৮২৬ জন, ২০২৩ সালে ৩ হাজার ২৪৪ জন এবং ২০২২ সালে ৫ হাজার ২৮ শিক্ষার্থী জিপিএ–৫ পেয়েছিলেন। এ বছর পাসের হার ৫১ দশমিক ৫৪ হলেও গত বছর ছিল ৬৩ দশমিক ২২ শতাংশ। ২০২৩ সালে ৭০ দশমিক ৪৪ এবং ২০২২ সালে পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ৩২ শতাংশ।
৩ কলেজে শতভাগ পাসময়মনসিংহ বোর্ডের অধীনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় তিনটি কলেজের সব শিক্ষার্থী পাস করেছেন। শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ, জেলার ঈশ্বরগঞ্জের চরজিথর হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার আবদুল জব্বার রাবেয়া খাতুন গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ।
১৫ কলেজের কেউ পাস করেননিএবার এই বোর্ডের ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেননি। এর মধ্যে ময়মনসিংহের ৭টি, জামালপুরের ২টি, শেরপুরের ২টি ও নেত্রকোনার ৪টি কলেজ আছে। এই ১৫টি কলেজ থেকে পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন ১৩২ জন। এর মধ্যে ১০ জনের বেশি পরীক্ষার্থী ছিল চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষার্থী ২ থেকে ৯–এর ঘরে ছিল।
বোর্ড চেয়ারম্যানের কথাফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ বলেন, পাসের হার কম হওয়ার নানা কারণ আছে। এর মধ্যে আছে মনোযোগের অভাব, পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার অভাব, ভালো মানের শিক্ষকের অভাব ইত্যাদি। বিশেষ করে ইংরেজি, আইসিটি, হিসাববিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ের দক্ষ শিক্ষকের অভাব আছে। এ ছাড়া আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে, চরাঞ্চল, হাওর অঞ্চল ও সীমান্ত অঞ্চলে প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ–সুবিধার ঘাটতি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় প্রশাসন, ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষার বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ থেকে উত্তরণ ঘটানোর চেষ্টা করা হবে বলে তিনি জানান।