ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভের দায়ে প্রায় ৮০ শিক্ষার্থীকে কঠোর শাস্তি দিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
Published: 23rd, July 2025 GMT
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করায় যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৮০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার, ডিগ্রি প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন ধরনের সাজা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের সংগঠন কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যাপারথিড ডাইভেস্ট (সিইউএডি) এ তথ্য জানিয়েছে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানিয়ে আসছে এ সংগঠন।
সিইউএডির এক বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ শিক্ষার্থীকে হয় বহিষ্কার করা হয়েছে, নয় তিন বছর পর্যন্ত তাঁদের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
২০২৪ সালে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়ে অবস্থান নেন ও বিক্ষোভ করেন। এ বিক্ষোভ বিশ্বের অনেক দেশে ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করতে সাহায্য করে। শেষ পর্যন্ত কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শত শত পুলিশকে ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি দিলে আন্দোলনের জায়গাগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। গ্রেপ্তার করা হয় অনেক শিক্ষার্থীকে।গতকালই এক বিবৃতিতে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা ২০২৫ সালের মে মাসে বাটলার লাইব্রেরিতে বিশৃঙ্খলা ও ২০২৪ সালের বসন্তে ‘অ্যালামনাই উইকেন্ড’-এ তাঁবু স্থাপন করে ক্যাম্পাসে অবস্থানের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এ বিবৃতিতে আরও বলা হয়,শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটানো বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা ও নিয়মের লঙ্ঘন। এমন লঙ্ঘনের জন্য অবশ্যই পরিণাম ভোগ করতে হবে।
তবে সিইউএডি বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয় যে শাস্তি দিয়েছে, তা আগের যেকোনো শিক্ষা কর্মসূচি বা ফিলিস্তিন ছাড়া অন্য কোনো ইস্যুতে ভবন দখলের ঘটনার শাস্তির তুলনায় অনেক বেশি কঠোর। তারা আরও বলেছে, ‘আমাদের থামানো যাবে না। আমরা ফিলিস্তিনের মুক্তির লড়াই চালিয়ে যাব।’
২০২৪ সালে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়ে অবস্থান নেন ও বিক্ষোভ করেন। এ বিক্ষোভ বিশ্বের অনেক দেশে ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করতে সাহায্য করে। শেষ পর্যন্ত কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শত শত পুলিশকে ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি দিলে আন্দোলনের জায়গাগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় এবং অনেক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কঠোর দমন-পীড়নের পরও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে পিছু হটেননি। চলতি বছরের মে মাসে চূড়ান্ত পরীক্ষা চলার সময় শিক্ষার্থীরা বাটলার লাইব্রেরি দখল করেন। তাঁরা দাবি তোলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলো থেকে বিশ্ববিদ্যালয় যেন বিনিয়োগ সরিয়ে নেয়। সেই সঙ্গে তাঁরা গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের কঠোর দমন-পীড়নের পরও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে পিছু হটেননি। চলতি বছরের মে মাসে চূড়ান্ত পরীক্ষা চলার সময় শিক্ষার্থীরা বাটলার লাইব্রেরি দখল করেন। তাঁরা দাবি তোলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলো থেকে বিশ্ববিদ্যালয় যেন বিনিয়োগ সরিয়ে নেয়। সেই সঙ্গে গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন তাঁরা।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিচারিক বোর্ড বলেছে, পাঠ কার্যক্রম চলাকালে বিশৃঙ্খলার অভিযোগে কিছু ছাত্রকে বহিষ্কার, সাময়িকভাবে পড়াশোনার সুযোগ স্থগিত কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া ডিগ্রি বাতিল করা হয়েছে। কতজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে বলা হয়নি। তবে কর্তৃপক্ষ বলেছে, এটাই ওই ঘটনার বিষয়ে নেওয়া চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
আরও পড়ুনফিলিস্তিনের জন্য বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করছে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়৩০ এপ্রিল ২০২৪এ ঘটনার মধ্যেই কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে প্রায় ৪০ কোটি ডলারের সরকারি তহবিল ফেরত পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইহুদি শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক হয়রানি করার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি উল্লেখ করে ওই অর্থসহায়তা বন্ধ করে দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কল ম ব য কল ম ব য় ইসর য় ল ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ