কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু নতুন ভিডিও আর ছবি প্রকাশ পেয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে ট্রাম্প ও এপস্টেইনের পুরোনো সম্পর্কের বিষয়ে আরও নতুন নতুন তথ্য সামনে এসেছে।

ছবিগুলো ১৯৯৩ সালে তোলা। এতে দেখা গেছে, ট্রাম্পের বিয়েতে গিয়েছিলেন এপস্টেইন। সে সময় ট্রাম্প মারলা ম্যাপলসকে বিয়ে করেন। প্লাজা হোটেলে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে এপস্টেইন যে উপস্থিত হয়েছিলেন, সে কথা আগে অনেকেই জানতেন না।

এ ছাড়া ১৯৯৯ সালের একটি পুরোনো ভিডিও পাওয়া গেছে। সেটি ছিল একটি ফ্যাশন শোর ভিডিও। সেখানে দেখা যায়, ট্রাম্প ও এপস্টেইন একসঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন, হাসছেন। পুরোনো ভিডিও খুঁজতে গিয়ে এই ভিডিও খুঁজে পায় সিএনএনের একটি অনুসন্ধানী দল।

এ ছাড়া ১৯৯৯ সালে নিউইয়র্কে ভিক্টোরিয়াস সিক্রেট ফ্যাশন শো চলাকালে ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ট্রাম্প ও এপস্টেইন র‌্যাম্প শো শুরুর আগে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন আর হাসছেন।

১৯৯০ ও ২০০০-এর দশকের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের অংশ নেওয়ার ভিডিও খুঁজতে গিয়ে সিএনএনের ‘কে ফাইল’ নামের একটি অনুসন্ধানী দল এই পুরোনো ভিডিও খুঁজে পায়। সেসব ভিডিওর অন্তত একটিতে ট্রাম্প ও এপস্টেইনকে একসঙ্গে দেখা গেছে।

নতুন পাওয়া ভিডিও আর ছবিগুলো এখনো অনেক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। এসব ভিডিও ও ছবি যখন তোলা হয়, যখন জেফরি এপস্টেইনের বিরুদ্ধে কোনো আইনি অভিযোগ ওঠেনি। ট্রাম্প ও এপস্টেইনের পুরোনো সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা চলার মধ্যেই নতুন ছবিগুলো প্রকাশিত হয়েছে।

নতুন পাওয়া ভিডিও আর ছবিগুলো এখনো অনেক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। এসব ভিডিও ও ছবি যখন তোলা হয়, তখন জেফরি এপস্টেইনের বিরুদ্ধে কোনো আইনি অভিযোগ ওঠেনি। ট্রাম্প ও এপস্টেইনের পুরোনো সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা চলার মধ্যেই নতুন ছবিগুলো প্রকাশিত হয়েছে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ প্রয়াত এপস্টেইন–সম্পর্কিত কিছু গোপন নথি প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরেই এসব নথি প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এপস্টেইন–সংক্রান্ত নথি প্রকাশ না করার সিদ্ধান্তে ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ (এমএজিএ) প্রচার দলের অনেকেই ক্ষুব্ধ হন। তাঁরা আশা করছিলেন যে এসব নথিতে এপস্টেইনের সহযোগীদের নিয়ে বড় কোনো তথ্য বের হয়ে আসবে।

গতকাল মঙ্গলবার সিএনএনের পক্ষ থেকে ফোনে ট্রাম্পের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি হেসে বলেন, ‘আপনি আমার সঙ্গে মজা করছেন।’ এরপর তিনি সিএনএনকে ‘ভুয়া’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং ফোন রেখে দেন।

জেফরি এপস্টেইনের বিরুদ্ধে কমবয়সী মেয়েদের যৌন নির্যাতন করার প্রথম অভিযোগ ওঠে ২০০৫ সালে। এরপর ২০০৬ সালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৯ সালে তাঁকে নারী পাচারের অভিযোগে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনি জেলখানায় মারা যান। এ নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচলিত আছে। তবে তাঁর মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক বলেছিলেন যে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

ট্রাম্প ও এপস্টেইনের সম্পর্ক শুরু হয়েছিল ১৯৮০-এর দশকে। নিউইয়র্ক ও পাম বিচে নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে তাঁদের নিয়মিত দেখা যেত। এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কখনো কোনো অপরাধের অভিযোগ আনেনি।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ প্রয়াত এপস্টেইন–সম্পর্কিত কিছু গোপন নথি প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরেই নথিগুলো প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এপস্টেইন–সংক্রান্ত নথি প্রকাশ না করার সিদ্ধান্তে ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ প্রচারণা দলের অনেকে ক্ষুব্ধ হন। তাঁরা আশা করছিলেন যে এসব নথিতে এপস্টেইনের সহযোগীদের নিয়ে বড় কোনো তথ্য বের হবে।

ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০০ সালের মাঝামাঝি সময়ে ট্রাম্প ও এপস্টেইনের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। এর কারণ ছিল, পাম বিচের একটি দামি জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব।

তবে এর আগে অনেক ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে যে ট্রাম্প ও এপস্টেইনের সম্পর্কটা বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। ২০১৯ সালে এনবিসি একটি পুরোনো ভিডিও প্রকাশ করে। সেখানে দেখা যায়, ১৯৯২ সালের এক পার্টিতে ট্রাম্প ও এপস্টেইন একসঙ্গে কথা বলছেন।

পরের বছর ১৯৯৩ সালের অক্টোবরে বিখ্যাত ফটোগ্রাফার ড্যাফিড জোনস নিউইয়র্কের হার্লে ডেভিডসন ক্যাফের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ট্রাম্প ও এপস্টেইনের একসঙ্গে একটি ছবি তোলেন।

চলতি সপ্তাহে সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড্যাফিড জোনস বলেন, ‘সেখানে এক লোক ছিলেন, তিনি যেভাবে তাকাচ্ছিলেন, সেটা আমার নজরে পড়েছিল। পরে তিনি আমাকে একটা কার্ড দেন। তাতে লেখা ছিল: জেফরি এপস্টেইন, অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা।’

দুই মাস পর ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বরে একটি সংবাদমাধ্যম ড্যাফিড জোনসকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিয়েতে ছবি তোলার দায়িত্ব দেয়। সেই অনুষ্ঠানে তোলা ছবিগুলোর একটিতে জেফরি এপস্টেইনকে বিয়ের ভেন্যুতে ঢুকতে দেখা যাচ্ছে।

জোনস সিএনএনকে বলেন, ‘তিনি (এপস্টেইন) অনুষ্ঠানস্থলে ঢোকার সময় আমি তাঁকে চিনেছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাঁদের অন্য রকম দেখাচ্ছিল, আমি শুধু তাঁদের ছবিই তুলেছি।’

জোনস আরও বলেন, ‘ইশ, ট্রাম্পের সঙ্গে যদি তাঁর (এপস্টেইনের) আরও ছবি তুলতাম। আমি তো ট্রাম্পের বিয়ের ছবি তোলার দায়িত্বে ছিলাম। তাই সাংবাদিকদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলাম। আপনারা যে ছবি পেয়েছেন, সেটি কন্টাক্ট শিট থেকে নেওয়া। কারণ, নেগেটিভগুলো হারিয়ে গেছে।’

আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, ট্রাম্পের বিয়েতে এপস্টেইন পেছনের দিকে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন। লাইফ সাময়িকীর আর্কাইভে পাওয়া এই ছবি সিএনএন পর্যালোচনা করেছে। ওই দলবদ্ধ ছবিতে দেখা যায়, অতিথিদের মাঝখান দিয়ে এপস্টেইনের মুখ সামান্য দেখা যাচ্ছে। তাঁর আশপাশে ছিলেন রেডিও তারকা হাওয়ার্ড স্টার্ন ও টিভি উপস্থাপক রবিন লিচ।

লাইফ সাময়িকী থেকে ট্রাম্পের বিয়ের অনুষ্ঠানের অনেক ছবি তোলা হয়েছিল। সেগুলো এখন গুগল ইমেজেস ও শাটারস্টকে পাওয়া যায়। এসব ছবি খুঁজতে গিয়ে এপস্টেইনের কয়েকটি ছবি পেয়েছে সিএনএন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর র স দ ধ ন ত অন ষ ঠ ন প রক শ ন স এনএন একসঙ গ হয় ছ ল র একট

এছাড়াও পড়ুন:

একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদার ছয় সন্তানের পাঁচজনই মারা গেল

একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদা আক্তারের ছয় সন্তানের মধ্যে পাঁচজনই মারা গেল। গতকাল রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে জন্ম নেওয়ার পরপরই একটি শিশু মারা যায়। আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় একে একে আরও চার নবজাতকের মৃত্যু হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কর্মকর্তা মো. ফারুক প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার খাজুরিয়া গ্রামের মোকসেদা আক্তার রোববার সকালে একসঙ্গে এই ছয় সন্তানের জন্ম দেন। তাঁর স্বামী মো. হানিফ কাতারপ্রবাসী। মোকসেদা আক্তারের ননদ লিপি বেগম আজ প্রথম আলোকে বলেন, বেঁচে থাকা একমাত্র নবজাতকের অবস্থাও বেশি ভালো নয়।

ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মোকসেদা তিন ছেলে ও তিন মেয়েসন্তান প্রসব করেন। সন্তানেরা ২৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই জন্ম নেয়। জন্মের সময় প্রত্যেকের ওজন ছিল ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রামে মধ্যে। এ কারণে তাদের সবার অবস্থাই ছিল সংকটজনক।

আরও পড়ুনঢাকা মেডিকেলে একসঙ্গে ছয় সন্তানের জন্ম, নবজাতকদের অবস্থা সংকটাপন্ন২২ ঘণ্টা আগে

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগে আইসিইউতে পর্যাপ্ত শয্যা খালি না থাকায় তিনজনকে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে বেঁচে থাকা একমাত্র নবজাতকটি বেসরকারি হাসপাতালে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যে ১০ কারণে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বেশি ঝগড়া হয়
  • স্মার্ট সিটি হবে চট্টগ্রাম, একসঙ্গে কাজ করবে গ্রামীণফোন-চসিক
  • অনলাইন জীবন আমাদের আসল সম্পর্কগুলোকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে
  • তিনি চাকরি ছাড়বেন শুনলেই সহকর্মীরা হাসাহাসি করেন
  • প্রেমিকের সঙ্গে বাগদান সারলেন হুমা কুরেশি!
  • একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদার ছয় সন্তানের পাঁচজনই মারা গেল