অবিশ্বাস্য নৃশংসতা, মানবাধিকার হরণ ও ন্যায়বিচার
Published: 26th, July 2025 GMT
কোনো রাজনীতিবিদ যেমন হঠাৎ করেই স্বৈরশাসক হয়ে যান না, তেমনি কোনো দলও রাতারাতি ফ্যাসিবাদী দলে রূপান্তরিত হয় না। একটা উল্লেখযোগ্য সময় ধরে এই রূপান্তর ঘটে। বাংলাদেশে পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা এবং তাঁর দল আওয়ামী লীগও বেশ কিছুটা সময় ধরে ফ্যাসিস্ট হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে। স্টিভেন লেভিৎস্কি ও ড্যানিয়েল জিবলেট যদি তাঁদের বই হাউ ডেমোক্রেসিস ডাই–এর নতুন সংস্করণ প্রকাশ করেন, তাহলে সম্ভবত বাংলাদেশে শেখ হাসিনার জনপ্রিয় ভোটে নির্বাচিত হওয়া, তারপর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাতন্ত্র্য ও স্বাধীনতা একে একে ধ্বংস করে কুক্ষিগত করা, দল ও সরকারে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার বিষয়গুলো তাজা উদাহরণ হিসেবে খুব কাজে লাগবে। জাতীয় সংসদ, আদালত, নিরাপত্তা বাহিনী, গণমাধ্যম—কোনো কিছুরই তাঁর অঙ্গুলিহেলনের বাইরে চলার সামর্থ্য অবশিষ্ট ছিল না।
পাশাপাশি ভূরাজনীতির কারণে আন্তর্জাতিক পরিসরেও তাঁকে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি। একদিকে বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতের অগাধ আস্থা ও সমর্থন যেমন তাঁর জন্য আশীর্বাদ হয়ে থেকেছে, তেমনি প্রভাবশালী দেশগুলোর রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সামরিক শিল্প ও ব্যবসায়িক নানা ধরনের লেনদেনে ভর করে আন্তর্জাতিক পরিসরে বৈধতার প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ায় তেমন একটা সমস্যা হয়নি। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম দফায় ক্ষমতারোহণও দিয়েছে বাড়তি সুবিধা, কেননা তখন যুক্তরাষ্ট্র বিদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলোতে নাক না গলানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পশ্চিমা দেশগুলোর প্রায় সবাই তখন গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের চেয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নীতিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কারণেও শেখ হাসিনা তাঁর রক্ষণশীল মুসলিমপ্রধান দেশে ধর্মবাদী জঙ্গিবাদের হুমকির বিষয়টিকে নিজের ক্ষমতা সংহত করার কাজে যথাসম্ভব ব্যবহার করেন।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন: আকবর খান
ঢাকা-৮ আসনে দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান। তিনি বলেন, “ভোটের অধিকার জনগণের পবিত্র আমানত, এটি সচেতনভাবে প্রয়োগ করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা জননেতা সাইফুল হক-এর ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচনী গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি একথা বলেন।
গণসংযোগের শুরুতে ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাকের সভাপতিত্বে এক সংক্ষিপ্ত পথসভা হয়।
সেখানে আকবর খান বলেন, “নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে অবিলম্বে ভোটের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। গত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে—২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে—ঢাকা-৮ আসনের বহু নাগরিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। যে তরুণের এখন বয়স ২৫ বা ২৬, তারা কখনো ভোট দিতে পারেনি, ভোট কী তা জানে না- এটি গণতন্ত্রের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।”
তিনি আরো বলেন, “গত ১৬-১৭ বছর ধরে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং আমাদের নেতা সাইফুল হক জনগণের ভোটাধিকারের আন্দোলনে রাজপথে সংগ্রাম করে আসছেন। এর জন্য জেল-জুলুম, নির্যাতন সহ্য করেও তিনি থেমে থাকেননি। ভোটাধিকার গণমানুষের দীর্ঘ লড়াই ও ত্যাগের ফসল। এই অধিকার ভুল ব্যক্তিকে নির্বাচিত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।”
আকবর খান বলেন, “জননেতা সাইফুল হক গণমানুষের পরীক্ষিত নেতা। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের জনগণ যেন তাকে ভোট দিয়ে নিজেদের সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়ার কথা ও দীর্ঘ বঞ্চনার ইতিহাস সংসদে তুলে ধরার সুযোগ করে দেন- এটাই আমাদের আহ্বান।”
গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকা থেকে শুরু হয়ে মতিঝিল, কমলাপুর, ফকিরাপুল, কালভার্ট রোড হয়ে বিজয়নগরে এসে শেষ হয়। এতে শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সিকদার হারুন মাহমুদ, মীর রেজাউল আলম, কবি জামাল সিকদার, ফাইজুর রহমান মুনির, বাবর চৌধুরী, মহানগর নেতা যুবরান আলী জুয়েল, সালাউদ্দিন, রিয়েল মাতবর, আরিফুল ইসলাম, মুজিবুল হক চুন্নু, গোলাম রাজিব, মাহমুদুল হাসান খান, ফয়েজ ইবনে জাফর, নান্টু দাস, শিবু মহন্ত ও হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
ঢাকা/এএএম/এস